১৯৮২ সালের ওষুধনীতি বাংলাদেশের ওষুধশিল্পে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা করে। এই নীতির ফলে দেশীয় ওষুধ উৎপাদনে দ্রুত অগ্রগতি ঘটে, স্থানীয় কোম্পানিগুলো বাজারে নেতৃত্ব নেয় এবং রপ্তানি খাতেও বাংলাদেশ নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে।
বর্তমানে দেশি কোম্পানিগুলো দেশের মোট ওষুধ চাহিদার প্রায় ৯৮ শতাংশ পূরণ করছে। পাশাপাশি খাতটি থেকে বার্ষিক রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু এই সাফল্যের মাঝেও এক মৌলিক দুর্বলতা রয়ে গেছে—ওষুধ তৈরির মূল কাঁচামাল এপিআই (অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্টস) এখনো ৯৫ শতাংশের বেশি আমদানিনির্ভর। ফলে এই শিল্প জিডিপিতে যে অবদান রাখছে, তার বড় অংশ বিদেশে গমন করছে কাঁচামাল আমদানির খরচ হিসেবে। শুধু তাই নয়, আমদানিনির্ভর হওয়ায় এপিআইয়ের গুণগত মানও সব সময় নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।
অর্থনীতিবিদ ও শিল্প বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এলডিসি থেকে গ্র্যাজুয়েশনের পর এই নির্ভরতা বাংলাদেশের ওষুধশিল্পের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিতে পারে। তখন আন্তর্জাতিক মেধাস্বত্ব আইন কঠোর হবে, ফলে স্বল্পমূল্যে ওষুধ উৎপাদনের সুযোগ সীমিত হয়ে যেতে পারে। চার দশক পরও তাই প্রশ্ন থেকে যায়—দেশীয় ওষুধশিল্পের এই অগ্রযাত্রা কতটা টেকসই, যদি মূল কাঁচামাল এখনো বিদেশের ওপর নির্ভরশীল থাকে?
বর্তমানে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালস, অ্যাকটিভ ফাইন কেমিক্যালস, গণস্বাস্থ্য বেসিক কেমিক্যালস লিমিটেড, গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ও অপসোনিন ফার্মাসিউটিক্যালসসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান সীমিত আকারে এপিআই (অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্টস) উৎপাদন করছে। তবে এ উৎপাদন মূলত প্যারাসিটামলসহ কয়েকটি নির্দিষ্ট কাঁচামালেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। উৎপাদিত এপিআইয়ের বড় অংশ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের ওষুধ তৈরির কাজে ব্যবহার করছে। কেবল গণস্বাস্থ্য বেসিক কেমিক্যালস লিমিটেডসহ দু-তিনটি প্রতিষ্ঠান সীমিত পরিসরে অন্য কোম্পানির কাছে এপিআই বিক্রি করছে।
এ অবস্থার পরিবর্তন আনতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ২০১৮ সালে প্রণয়ন করে ‘ন্যাশনাল এপিআই অ্যান্ড ল্যাবরেটরি রিএজেন্টস প্রোডাকশন অ্যান্ড এক্সপোর্ট পলিসি’। নীতিটির মূল লক্ষ্য ছিল দেশকে বৈশ্বিক এপিআই বাজারে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে নিয়ে আসা এবং কাঁচামাল আমদানির ওপর নির্ভরতা কমানো। নীতিতে বলা হয়, বড় ধরনের বিনিয়োগ আকর্ষণ, ব্যাপক সংখ্যক এপিআই মলিকিউল স্থানীয়ভাবে উৎপাদন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও রপ্তানি সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এ শিল্পকে শক্তিশালী করা হবে। এ পরিকল্পনা অনুযায়ী, দেশে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত এপিআই মলিকিউল ও ল্যাবরেটরি রিএজেন্টের সংখ্যা ২০১৬ সালের ৪১ থেকে ধাপে ধাপে বাড়িয়ে ২০৩২ সালের মধ্যে ৩৬০-এ উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। তদনুযায়ী ২০১৬ সালে যেখানে বাংলাদেশ ৯৭ শতাংশ এপিআই আমদানি করত, ২০৩২ সালের মধ্যে তা কমিয়ে ৮০ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যও নির্ধারণ করা হয়। তবে বাস্তবে অগ্রগতি এখনো সীমিত। দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো কেবল কয়েকটি সাধারণ কাঁচামাল উৎপাদনে সীমাবদ্ধ, যা আমদানিনির্ভরতা কমানোর লক্ষ্যে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবেই থেকে গেছে।
দেশীয় এপিআই (অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্টস) উৎপাদন বাড়াতে সরকার ২০১৮ সালের নীতির আওতায় বহুমুখী প্রণোদনা ঘোষণা করেছিল। লক্ষ্য ছিল ২০৩২ সালের মধ্যে আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে দেশকে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় এগিয়ে নেওয়া। নীতির অংশ হিসেবে প্রাথমিক বছরগুলোতে ঘোষণা দেওয়া হয় নিঃশর্ত করছাড়, নির্দিষ্টসংখ্যক এপিআই মলিকিউল উৎপাদনের ওপর অতিরিক্ত করছাড়, এবং ২০৩২ সাল পর্যন্ত দেশীয়ভাবে উৎপাদিত এপিআই, রিএজেন্ট ও কাঁচামালে ভ্যাট মওকুফের সুবিধা। এছাড়া অন্তত ২০ শতাংশ মূল্য সংযোজন নিশ্চিত হলে নগদ সহায়তা, দীর্ঘমেয়াদি ঋণসুবিধা এবং রপ্তানি আয়ের বড় অংশ নিজস্বভাবে রাখার অনুমতিও দেওয়া হয়।
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ ছিল মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় বিশেষায়িত এপিআই পার্ক প্রতিষ্ঠা। আশা ছিল, এটি দেশের এপিআই উৎপাদনশীলতাকে ঘিরে পূর্ণাঙ্গ একটি শিল্পাঞ্চল গড়ে তুলবে। কিন্তু বাস্তবে এ উদ্যোগ আশানুরূপ সাফল্য পায়নি। দেশে এপিআই পার্ক গড়ে উঠলেও এখনো পূর্ণাঙ্গ শিল্প কার্যক্রম শুরু হয়নি। প্রায় ২৭টি প্রতিষ্ঠান প্লট বরাদ্দ নিলেও এখন পর্যন্ত মাত্র ২টি প্রতিষ্ঠান কারখানা স্থাপন করে উৎপাদন শুরু করেছে। আরও দুটি প্রতিষ্ঠান অবকাঠামো নির্মাণ করলেও উৎপাদন কার্যক্রম চালু করতে পারেনি।
এ অচলাবস্থার পেছনে রয়েছে গ্যাস সংযোগের অভাব, এপিআই উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় ইন্টারমিডিয়ারি কাঁচামালের সহজলভ্যতা না থাকা, দক্ষ জনবল সংকট, এবং অপর্যাপ্ত অবকাঠামো। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এপিআই খাতের প্রকৃত অগ্রগতি আনতে হলে প্রথমে এ শিল্পের সামগ্রিক ইকোসিস্টেম বুঝে কার্যকর সমাধান নিতে হবে। এই ইকোসিস্টেমের মূল উপাদানগুলোর মধ্যে রয়েছে—ইন্টারমিডিয়ারি কাঁচামালের সহজপ্রাপ্যতা, দক্ষ জনশক্তি, গ্যাস ও বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ এবং বাজার সম্প্রসারণের সুযোগ। এগুলো সমন্বিতভাবে কাজ করলেই কেবল এপিআই শিল্পে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য আসবে, এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশের ওষুধশিল্পে বড় সাফল্য এলেও এপিআই (অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্টস) উৎপাদনে দেশের সক্ষমতা এখনো সীমিত। এর মূল কারণ—প্রয়োজনীয় কাঁচামাল ও দক্ষ জনবলের ঘাটতি। এপিআই উৎপাদনের ভিত্তি ‘কি স্টার্টিং ম্যাটেরিয়াল (কেএসএম)’ ও ফাইন কেমিক্যালের বেশির ভাগই দেশে তৈরি হয় না। এসব কাঁচামাল আমদানি করতে হয় চীন, ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে। বিশেষ করে জটিল জৈব যৌগ, প্রিকর্সর, উচ্চমূল্যের ধাতব ক্যাটালিস্ট—যেমন প্যালাডিয়াম, প্লাটিনাম, রুথেনিয়াম—এবং বিশেষায়িত এনজাইম পুরোপুরি আমদানিনির্ভর। বাংলাদেশে এপিআই শিল্পে প্রাথমিক পর্যায়ের জনবল থাকলেও উচ্চপ্রযুক্তি ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন দক্ষতা তৈরিতে বড় ঘাটতি রয়েছে। পাশাপাশি গ্যাস ও বিদ্যুতের সংকট শিল্পটির নিরবচ্ছিন্ন উৎপাদন ব্যবস্থায় বড় চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে।
এ ছাড়া সহজ শর্তে বিনা বা স্বল্পসুদের দীর্ঘমেয়াদি ঋণ সুবিধা না থাকায় নতুন উদ্যোক্তারা বিনিয়োগে আগ্রহ হারাচ্ছেন। দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারও তুলনামূলক ছোট, আর আন্তর্জাতিক বাজারে চীন ও ভারতের সঙ্গে প্রতিযোগিতার সক্ষমতাও এখনো তৈরি হয়নি। ফলে এপিআই শিল্পের ইকোসিস্টেমের কোনো মৌলিক উপাদানই বর্তমানে বাংলাদেশের অনুকূলে নেই। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, রাষ্ট্র চাইলে স্বল্প সময়ে গ্যাস–বিদ্যুৎ সরবরাহ ও স্বল্পসুদের ঋণ সুবিধা নিশ্চিত করতে পারে। কিন্তু কাঁচামাল উৎপাদন এবং দক্ষ জনবল তৈরির মতো জটিল প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ, যা টেকসই উন্নতির জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা দাবি করে।
এই পরিকল্পনার প্রথম ধাপ হওয়া উচিত দেশে এপিআই উৎপাদনের জন্য শক্তিশালী ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ সিস্টেম গড়ে তোলা। অর্থাৎ কাঁচামাল উৎপাদন থেকে এপিআই প্রস্তুত পর্যন্ত সরবরাহ চেইনকে স্বয়ংসম্পূর্ণ, নির্ভরযোগ্য ও টেকসই করতে হবে। এতে উৎপাদন ব্যয় কমবে এবং বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়বে। দ্বিতীয়ত, শিল্প ও একাডেমিয়ার মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতা নিশ্চিত করা জরুরি। এতে গবেষণা, নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং দক্ষ জনশক্তি প্রশিক্ষণ সহজ হবে। তৃতীয়ত, আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ ও প্রযুক্তি স্থানান্তর শিল্পকে দ্রুত আধুনিকীকরণে সহায়তা করতে পারে। বিদেশি অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্থানীয় উৎপাদনপ্রক্রিয়া উন্নত হবে, গুণগত মান বাড়বে এবং রপ্তানি সক্ষমতা শক্তিশালী হবে।
সবশেষে, এসব উপাদান একত্র করে একটি কৌশলগত ব্যবসায়িক মডেল তৈরি করে চীনসহ শক্তিশালী এপিআই উৎপাদক দেশগুলোর কাছে বিনিয়োগ প্রস্তাব দিতে হবে। প্রস্তাব এমনভাবে তৈরি করতে হবে, যাতে বাংলাদেশ ও বিনিয়োগকারী উভয় পক্ষই লাভবান হয়—একটি প্রকৃত উইন–উইন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
বর্তমানে এপিআই (অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্টস) উৎপাদনে চীন বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশ। বাংলাদেশের এপিআই চাহিদার বড় অংশই এখনো চীন থেকেই আমদানি করা হয়। এই বাস্তবতায় চীনা কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে এপিআই উৎপাদনে সরাসরি বিনিয়োগে আগ্রহী না–ও হতে পারে, কারণ তারা ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের বড় সরবরাহকারী। তবে কৌশলগতভাবে যদি তাদের বোঝানো যায় যে, বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে তারা শুধু স্থানীয় চাহিদা পূরণ করবে না, বরং এখান থেকে আন্তর্জাতিক বাজারেও রপ্তানি করতে পারবে—তাহলে এ বিনিয়োগ তাদের কাছে লাভজনক হয়ে উঠবে। উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে চীনা পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপ করেছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের পণ্যের ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে কম শুল্কহার প্রযোজ্য। ফলে বাংলাদেশে উৎপাদিত পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে চীনা কোম্পানিগুলো সহজেই মার্কিন বাজারে প্রবেশ করতে পারে।
এ ছাড়া এই যৌথ বিনিয়োগের মাধ্যমে চীনা কোম্পানিগুলো তাদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বাংলাদেশে স্থানান্তর করতে পারবে। এতে উৎপাদনপ্রক্রিয়া আরও আধুনিক হবে, খরচ কমবে এবং গুণগত মান আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে পৌঁছাবে। চীনা বিনিয়োগকারীদের জন্য লাভের দিকগুলো হবে—উৎপাদন ব্যয় হ্রাস, নতুন বাজারে প্রবেশ, সরবরাহ চেইনে অংশীদারিত্ব এবং বৈশ্বিক উপস্থিতি বিস্তার। অন্যদিকে বাংলাদেশ উপকৃত হবে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ও প্রতিযোগিতামূলক এপিআই শিল্প গড়ে তোলার মাধ্যমে। একই সঙ্গে দেশে উৎপাদিত এপিআইয়ের গুণগত মান নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে। এতে ওষুধের সামগ্রিক মান বৃদ্ধি পাবে এবং রপ্তানি সক্ষমতাও আরও শক্তিশালী হবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যদি সরকার শুল্কসুবিধা, কর প্রণোদনা এবং প্রযুক্তি স্থানান্তরে সহায়তা প্রদান করে, তবে প্রাথমিক বাধাগুলো সহজেই দূর করা সম্ভব। এ ধরনের প্রণোদনা চীনা ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক কোম্পানির জন্য বিনিয়োগকে আকর্ষণীয় করবে। সঠিকভাবে পরিকল্পিত প্রস্তাব দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে পারে। এর ফলে বাংলাদেশ কেবল স্থানীয় চাহিদা পূরণ করবে না, বরং গ্লোবাল এপিআই চেইনে অংশগ্রহণ করে আন্তর্জাতিক বাজারে স্থায়ী অবস্থান নিশ্চিত করবে।
বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা) দেশের বর্তমানে এপিআই উৎপাদনে যুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে একটি উপযুক্ত ব্যবসায়িক মডেল প্রণয়ন করবে। সেই ভিত্তিতে এ খাতে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে।

