দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতের জন্য বৈদেশিক মুদ্রায় লেনদেন সহজ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, নিবন্ধিত এসএমই প্রতিষ্ঠানগুলো আন্তর্জাতিক ক্রেডিট, ডেবিট বা প্রিপেইড কার্ড ব্যবহার করে বছরে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ডলার বিদেশে পাঠাতে পারবে। এই সুবিধা বিদেশ থেকে পণ্য আমদানির বিল পরিশোধ এবং অন্যান্য ব্যবসায়িক খরচ মেটাতে ব্যবহার করা যাবে।
গতকাল রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, এসএমই খাত দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই প্রচলিত ব্যাংকিং চ্যানেলের পাশাপাশি কার্ডের মাধ্যমে বৈদেশিক লেনদেন সহজ করা এই উদ্যোগের লক্ষ্য। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্রতিটি নিবন্ধিত এসএমই প্রতিষ্ঠান তাদের মনোনীত কর্মকর্তার নামে রিফিলযোগ্য আন্তর্জাতিক কার্ড বা ‘এসএমই কার্ড’ নিতে পারবে। এই কার্ডে প্রাথমিকভাবে সর্বোচ্চ ৬০০ মার্কিন ডলার লোড করা যাবে, যা বৈধ অনলাইন খরচের জন্য ব্যবহার করা যাবে।
তবে কার্ড লেনদেন ও সরাসরি রেমিট্যান্স মিলিয়ে একটি এসএমই প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক বৈদেশিক লেনদেনের সর্বোচ্চ সীমা ৩ হাজার ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। এই অর্থ আন্তর্জাতিক সেমিনার, সম্মেলন, প্রযুক্তিগত সহায়তা ফি এবং ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি-এর মতো ব্যবসায়িক খরচ মেটানোর কাজে ব্যবহার করা যাবে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান কেবল একটি অনুমোদিত ডিলার (এডি) ব্যাংকের মাধ্যমে এই সুবিধা নিতে পারবে। শাখা পরিবর্তন করতে চাইলে লিখিত আবেদনের মাধ্যমে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদন নেওয়া বাধ্যতামূলক।
লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোকে উৎসে কর, ভ্যাট ও অন্যান্য শুল্ক আদায়ের পাশাপাশি গ্রাহকের তথ্য যাচাই (কেওয়াইসি), মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ (এএমএল/সিএফটি) এবং বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণ সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের সব নীতিমালা ও রিপোর্টিং পদ্ধতি কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের সব অনুমোদিত ডিলার ব্যাংককে তাদের এসএমই গ্রাহকদের এই নতুন সুবিধা অবিলম্বে জানাতে এবং নির্দেশনাগুলো কার্যকরভাবে অনুসরণ করতে বলেছে। আশা করা হচ্ছে, এই উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের এসএমই খাত বিশ্ববাজারের সঙ্গে আরও সহজে যুক্ত হবে।

