বাংলাদেশে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই) আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই সময়ে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩০৩ মিলিয়ন ডলার। এটি গত তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ প্রান্তিক বৃদ্ধি হিসেবে ধরা হচ্ছে।
তবে সংখ্যার আড়ালে রয়েছে কিছু উদ্বেগের দিক। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বৃদ্ধির বেশিরভাগই এসেছে পুরোনো বিনিয়োগকারীদের পুনঃবিনিয়োগ থেকে। নতুন মূলধন বা ইকুইটি ইনফ্লো—যা দেশের অর্থনীতির জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ—এবার বড় ধরনের পতন দেখিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল-জুনে পুনঃবিনিয়োগ ৬০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১৬৮ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। অন্যদিকে নতুন মূলধন বিনিয়োগ কমে ৮১ মিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৬২ শতাংশ হ্রাস। এ সময়ে আন্তঃপ্রতিষ্ঠান ঋণ প্রবাহও কমেছে। অর্থাৎ, সামগ্রিক প্রান্তিক বৃদ্ধির পিছনে মূল চালিকা শক্তি হচ্ছে পুরোনো বিনিয়োগকারীদের আস্থা, নতুন প্রকল্প বা শিল্পে নয়।
অদূরদৃষ্টিকোণ থেকে দেখা যায়, চতুর্থ প্রান্তিকের এফডিআইয়ের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ এসেছে রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) ও অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইজেড) বহির্ভূত এলাকা থেকে। ইপিজেডে গেছে প্রায় ২২ শতাংশ এবং ইজেডে মাত্র ৩ শতাংশ।
বিশ্লেষকরা মনে করাচ্ছেন, যদিও সামগ্রিক প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক দেখাচ্ছে, নতুন প্রকল্পে বিনিয়োগ না বেড়ে পুনঃবিনিয়োগে নির্ভরশীলতা দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে। দেশকে স্থায়ী ও ব্যাপক বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য নতুন মূলধন প্রবাহ বাড়ানোর ওপর জোর দেওয়া এখন সময়োপযোগী।

