বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের বাণিজ্য সহজ করতে পাকিস্তান প্রস্তাব দিয়েছে করাচি বন্দরের ব্যবহার। ইসলামাবাদের ধারণা, করাচি পোর্ট ট্রাস্টের (কেপিটি) মাধ্যমে বাণিজ্য করলে শুধু নতুন সমুদ্র রুট উন্মুক্ত হবে না, আঞ্চলিক সংযোগও শক্তিশালী হবে।
আগামী ২৭ অক্টোবর ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ-পাকিস্তান যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন (জেইসি) বৈঠকে এই প্রস্তাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে। দুই দশকেরও বেশি সময় পর এটি হবে প্রথম জেইসি বৈঠক।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে জানা গেছে, সভায় বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন (বিএসসি) ও পাকিস্তান ন্যাশনাল শিপিং কর্পোরেশন (পিএনসিসি) এর মধ্যে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সইয়ের বিষয়ও আলোচনা হবে। এতে সরাসরি দ্বিপাক্ষিক জাহাজ চলাচল শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
গত বছরের নভেম্বরে করাচি থেকে চট্টগ্রামে প্রথম সরাসরি কার্গো পৌঁছানোর ঘটনা ঘটেছিল, যা পাঁচ দশকেরও বেশি সময় পর দুই দেশের মধ্যে প্রথম। এর পর পাকিস্তান সামুদ্রিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনে আগ্রহ প্রকাশ করে।
পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও সিইও ড. এম মাসরুর রিয়াজ বলেন, “জাহাজ চলাচল ও বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাবে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণে নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। প্রায় ১৫ বছরের রাজনৈতিক সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে এখন দুই দেশের সম্পর্ক অনুকূলে।”
তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানের বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি এখনও সীমিত। তবে তৈরি পোশাক, নিটওয়্যার, চামড়াজাত সামগ্রী, এগ্রো-প্রসেসিং পণ্য, আইটি ও ডিজিটাল সেবা সম্প্রসারণের সুযোগ রয়েছে। করাচি বন্দরের মাধ্যমে সরাসরি শিপিং লাইন চালু হলে রপ্তানি বাড়ানো সম্ভব হবে এবং সময় ও খরচ সাশ্রয় হবে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ডলার হলেও বাংলাদেশের রপ্তানি নগণ্য। পাকিস্তানের রপ্তানি বাংলাদেশে ছিল ৬৬১ মিলিয়ন ডলার, আর বাংলাদেশের রপ্তানি পাকিস্তানে মাত্র ৫৭ মিলিয়ন ডলার। জেইসি সভায় এই ঘাটতি কমানোর উপায় খুঁজে দেখা হবে।