দেশের পাইকারি বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমতে শুরু করেছে। সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন, মিল মালিকদের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়ায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আপত্তি বড় ভূমিকা রেখেছে।
এর আগে ১৩ অক্টোবর মিল মালিকরা ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেই সময় প্রতি মণ খোলা সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে ৬ হাজার ৭০০ টাকায় পৌঁছেছিল। পাম অয়েলের দামও মণপ্রতি ১০০ থেকে ১২০ টাকা বেড়ে ৬ হাজার ১০০ টাকায় ওঠে। কিন্তু পরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আপত্তির কারণে দাম বাড়ানো সম্ভব হয়নি।
খাতুনগঞ্জ, দেশের সবচেয়ে বড় পাইকারি ভোজ্যপণ্য বাজারে দেখা গেছে, এক সপ্তাহের মধ্যে সয়াবিন তেলের দাম কমে মণপ্রতি ৬ হাজার ৬০০ টাকায় নেমেছে। পাম অয়েলের বর্তমান বাজারমূল্য প্রতি মণ ৬ হাজার ২০ টাকা।
বিশ্ববাজারেও সয়াবিন তেলের দাম নিম্নমুখী। জুলাইয়ে প্রতি টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম ছিল ১,৩০৭ ডলার। আগস্টে তা কমে ১,২৪৫ ডলার, আর ২১ অক্টোবর সর্বনিম্নে নেমে ১,০৩১ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
পাম অয়েলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়েছে। জুলাইয়ে প্রতি টন অপরিশোধিত পাম অয়েলের দাম ছিল ৯৭৬ ডলার। আগস্টে বেড়ে ১,০২৬ ডলার, সর্বশেষ ২১ অক্টোবর ১,০৫১ ডলার হয়েছে।
বাংলাদেশ পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মওলা বণিক বার্তা জানান, ‘ভোজ্যতেল আমদানির ওপর অগ্রিম আয়কর আরোপে মিল মালিকদের খরচ বেড়ে গেছে। তাই তারা দাম বাড়ানোর চেষ্টা করছিল। কিন্তু বিশ্ববাজারে দাম কমার কারণে তা করতে পারেননি। সরকারের উচিত মিল মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে দাম না বাড়ানোর বিষয়টি স্পষ্ট করা।’
উল্লেখ্য, ১৩ অক্টোবর বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনারস অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন লিটারপ্রতি সয়াবিনের দাম ৬ টাকা বাড়ানোর বিজ্ঞপ্তি দেয়।
১৬ অক্টোবর বাণিজ্য উপদেষ্টা জানান, সরকারের সায় ছাড়াই মিল মালিকরা দাম বাড়ানোর বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। এরপর নতুন দামের ভোজ্যতেল বাজারে সরবরাহ হয়নি।
কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসেন বলেন, ‘ভোজ্যতেলের বাজার নিয়ে আমদানিকারকরা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। বিশ্ববাজারে দাম কমলেও তারা সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। এর প্রভাব পড়ছে ভোক্তাদের ওপর। সরকারের উচিত সরবরাহ নিশ্চিত করতে মিলগুলোতে অভিযান চালিয়ে বাজার স্থিতিশীল করা।’

