Close Menu
Citizens VoiceCitizens Voice
    Facebook X (Twitter) Instagram YouTube LinkedIn WhatsApp Telegram
    Citizens VoiceCitizens Voice Sun, Oct 26, 2025
    • প্রথমপাতা
    • অর্থনীতি
    • বানিজ্য
    • ব্যাংক
    • পুঁজিবাজার
    • বিমা
    • কর্পোরেট
    • বাংলাদেশ
    • আন্তর্জাতিক
    • আইন
    • অপরাধ
    • মতামত
    • অন্যান্য
      • খেলা
      • শিক্ষা
      • প্রযুক্তি
      • বিনোদন
      • সাহিত্য
      • ভিডিও
    Citizens VoiceCitizens Voice
    Home » একসঙ্গে ধাক্কা খেল ছয় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক
    অর্থনীতি

    একসঙ্গে ধাক্কা খেল ছয় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক

    কাজি হেলালOctober 26, 2025
    Facebook Twitter Email Telegram WhatsApp Copy Link
    Share
    Facebook Twitter LinkedIn Telegram WhatsApp Email Copy Link

    বাংলাদেশের ব্যাংক খাত আবারও নড়বড়ে অবস্থায় পড়েছে। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, রাষ্ট্রমালিকানাধীন ছয়টি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ এখন দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ লাখ ৪৯ হাজার ১৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রায় ৭৭ শতাংশ অর্থই মামলা-জটের কারণে আটকে রয়েছে, ফলে ব্যাংকগুলো কোটি কোটি টাকা ফেরত আনতে পারছে না। দীর্ঘদিন ধরে অদক্ষ ব্যবস্থাপনা, রাজনৈতিক প্রভাব, অস্বচ্ছ ঋণ বিতরণ ও পুনরুদ্ধারে ব্যর্থতা, সব মিলিয়ে এই সংকট এখন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর এই দুরবস্থা শুধু প্রশাসনিক ব্যর্থতা নয়; এটি দেশের আর্থিক শৃঙ্খলার গভীর ভাঙনের প্রতিচ্ছবি। বাড়ছে খেলাপি ঋণ, বাড়ছে মূলধনের ঘাটতি, আর কমছে জনআস্থা, যা গোটা অর্থনীতির স্থিতিশীলতার জন্য এক বড় সতর্কবার্তা। প্রশ্ন জাগে জনগণের আমানতের নিরাপত্তা আজ কোথায়, আর এই ধস ঠেকাতে কার্যকর উদ্যোগ নেবে কে?

    বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের অস্থিরতা আরও গভীর হচ্ছে। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশের ছয়টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড একযোগে বড় আর্থিক সংকটে পড়েছে। খেলাপি ঋণের লাগামহীন বৃদ্ধি, দুর্নীতি, রাজনৈতিক প্রভাব এবং ঋণ পুনরুদ্ধারে ব্যর্থতার কারণে এসব ব্যাংকের ভাণ্ডার প্রায় শূন্যের কোঠায় পৌঁছেছে।

    বর্তমানে এই ছয় ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ লাখ ৪৯ হাজার ১৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার ৮০৪ কোটি টাকা অর্থাৎ মোট খেলাপি ঋণের ৭৭ শতাংশ আটকে আছে ৪৮ হাজার ২৯৬টি মামলার জটিলতায়। আদালতে বছরের পর বছর ধরে চলমান এসব মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় ব্যাংকগুলো তাদের অর্থ উদ্ধার করতে পারছে না, ফলে মূলধনের ঘাটতি আরও বেড়ে যাচ্ছে।

    ব্যাংকভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, জনতা ব্যাংক খেলাপি ঋণের দিক থেকে সবচেয়ে দুরবস্থায় আছে। ব্যাংকটির দায়ের করা ১১ হাজার ৫৫০টি মামলার বিপরীতে আটকে আছে প্রায় ৪৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা। সোনালী ব্যাংকের ১০ হাজার ৪২৯টি মামলায় আটকা রয়েছে ২৪ হাজার ৮১২ কোটি টাকা, আর অগ্রণী ব্যাংকের ২০ হাজার ৩৭০ মামলার বিপরীতে পুনরুদ্ধারযোগ্য অর্থ ১৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। এছাড়া রূপালী ব্যাংকে ৯ হাজার ৭৭০ কোটি, বেসিক ব্যাংকে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা আটকে আছে চলমান মামলায়।

    এই ছয় ব্যাংকের শীর্ষ ২০ খেলাপি গ্রাহকের কাছেই রয়েছে সর্বাধিক ঋণের বোঝা। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী, শীর্ষ ২০ গ্রাহকের কাছে তাদের পাওনা প্রায় ৮৫ হাজার ৪৪৪ কোটি টাকা, যা মোট খেলাপি ঋণের ৫৭ শতাংশ। এর মধ্যে এককভাবে জনতা ব্যাংকের ২০ গ্রাহকের কাছেই রয়েছে প্রায় ৫৩ হাজার ৮৪৮ কোটি টাকা, যা ব্যাংকটির মোট খেলাপি ঋণের ৬৩ শতাংশ।

    ঋণ আদায়ে ব্যাংকগুলোর দুর্বলতাও ক্রমশই প্রকট হচ্ছে। চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে জনতা ব্যাংক মাত্র ১৫ কোটি ১২ লাখ টাকা আদায় করতে পেরেছে, যা তাদের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ১ দশমিক ৬ শতাংশ। অন্য ব্যাংকগুলোর অবস্থাও প্রায় একই, তারাও নির্ধারিত লক্ষ্য অনুযায়ী আদায় করতে পারছে না, ফলে খেলাপি ঋণের পাহাড় আরও উঁচু হচ্ছে।

    অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর এই পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। তারা মনে করেন ব্যাংকগুলোকে এখনই ঝুঁকিপূর্ণ ঋণ শনাক্ত করে আগেভাগে প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে। একই সঙ্গে শীর্ষ খেলাপি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে দ্রুত অর্থ উদ্ধার করার লক্ষ্যে প্রতিটি ব্যাংকে বিশেষ পুনরুদ্ধার টিম গঠন করতে হবে। অন্যথায় চলমান মামলার জটিলতা ও দুর্বল ব্যবস্থাপনার কারণে এই ব্যাংকগুলো আরও গভীর সংকটে পড়বে, যার প্রভাব পড়বে পুরো অর্থনীতির স্থিতিশীলতার ওপর।

    ছয়টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের বর্তমান আর্থিক সংকটের পেছনে প্রধান দু’টি কারণ সবচেয়ে স্পষ্ট, অস্বাভাবিকভাবে খেলাপি ঋণের বৃদ্ধি এবং গভীর মূলধন ঘাটতি। এই দুই সমস্যার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সুশাসনের অভাব, অভ্যন্তরীণ অব্যবস্থাপনা, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং প্রভাবশালী ঋণগ্রহীতাদের চাপ, যার ফলে ব্যাংকগুলো তাদের অর্থ পুনরুদ্ধারে প্রায় অক্ষম হয়ে পড়েছে।

    সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ এখন প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, যা পুরো ব্যাংক খাতের মোট খেলাপি ঋণের অর্ধেকেরও বেশি। প্রভাবশালী কিছু ঋণগ্রহীতা নিয়মিতভাবে ঋণ পরিশোধ না করলেও প্রশাসনিক বা আইনি ব্যবস্থা তেমন কার্যকর হচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক প্রভাব বা উচ্চ পর্যায়ের সুপারিশের কারণে এসব ঋণ অনুমোদিত হয়েছে, আর ফেরত না আসার পরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না।

    খেলাপি ঋণের এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে ব্যাংকগুলোর মূলধন দ্রুত কমে যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, কিছু রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের মূলধন পর্যাপ্ততার অনুপাত (Capital Adequacy Ratio) শূন্যের নিচে নেমে গেছে, যা আর্থিক খাতের জন্য গুরুতর সতর্ক সংকেত। এতে ব্যাংকগুলো আমানতকারীদের আস্থা হারাচ্ছে, এমনকি অনেক ব্যাংক গ্রাহকদের স্বাভাবিক চাহিদা মেটাতেও হিমশিম খাচ্ছে।

    এর পাশাপাশি সুশাসনের অভাবও এই সংকটকে আরও গভীর করেছে। ঋণ অনুমোদন, অর্থ ফেরত আদায় ও পরিচালন নীতিমালায় স্বচ্ছতার ঘাটতি রয়ে গেছে। অনেক সময় যোগ্যতা বা দক্ষতার পরিবর্তে প্রভাব-প্রতিপত্তির ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যা আর্থিক শৃঙ্খলা ভেঙে দিচ্ছে। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপও ব্যাংক পরিচালনার অন্যতম বড় বাঁধা। বিভিন্ন সময়ে প্রভাবশালী গোষ্ঠী ঋণ বিতরণ ও পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়ায় প্রভাব বিস্তার করে, ফলে ব্যাংকগুলোর সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত হয়। তাছাড়া অভ্যন্তরীণ অব্যবস্থাপনা ও অদক্ষ ব্যবস্থাপনা ব্যাংকগুলোর ঝুঁকি মোকাবিলার সক্ষমতাকে আরও দুর্বল করেছে।

    সব মিলিয়ে খেলাপি ঋণের পাহাড়, মূলধন ঘাটতি, দুর্বল তদারকি ও সুশাসনের অভাব, এই সব কারণ মিলেই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো আজ মারাত্মক আর্থিক চাপে পড়েছে। এর প্রভাব এখন শুধু ব্যাংক খাতে সীমাবদ্ধ নয়; বরং তা দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও জনগণের আস্থার ওপরও বিরূপ প্রভাব ফেলছে।

    সম্প্রতি পাঁচটি বেসরকারি ব্যাংক একীভূত করার সিদ্ধান্তের পর নতুন যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংক বিশ্লেষকরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। দুর্বল ব্যাংকগুলোর বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ ও লোকসানের বোঝা এখন তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী ব্যাংকগুলোর কাঁধে এসে পড়েছে। ফলে একীভূত ব্যাংকগুলোর সম্পদের মান ও আর্থিক স্থিতিশীলতার ওপর বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি হয়েছে।

    দুর্বল ব্যাংকগুলোর যাচাই-বাছাইহীন ঋণ ও ঝুঁকিপূর্ণ গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্থ পুনরুদ্ধার করা এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই এই ঋণগুলো আইনি জটিলতায় আটকে আছে, যার নিষ্পত্তি দীর্ঘ সময়সাপেক্ষ। এর ফলে নতুনভাবে গঠিত ব্যাংকগুলোর ঋণ পুনরুদ্ধারের সক্ষমতা কমে যাচ্ছে এবং সম্পদের মান ক্রমে অবনতি ঘটছে।

    অর্থনীতিবিদদের মতে, একীভূতকরণকে হয়তো স্বল্পমেয়াদে একটি প্রশাসনিক বা কাঠামোগত সমাধান হিসেবে দেখা যেতে পারে, কিন্তু এটি আসলে মূল সমস্যার সমাধান নয়। বরং দুর্বল ব্যাংকগুলোর দায়ভার এখন ভালো অবস্থায় থাকা ব্যাংকগুলোর ওপর পড়ে তাদেরও আর্থিক অবস্থানকে নড়বড়ে করে তুলতে পারে। এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে ব্যাংক খাতের সার্বিক ঝুঁকি আরও বাড়বে এবং অর্থনীতিতেও দীর্ঘমেয়াদি চাপ তৈরি করবে।আরেকটি উদ্বেগের জায়গা হলো জনগণের আস্থা। ব্যাংকগুলোর একীভূতকরণের ফলে গ্রাহকরা এখন আরও অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ছেন, তাদের আমানতের নিরাপত্তা ও ব্যাংকের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন বাড়ছে। এই অনিশ্চয়তা বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ ও অর্থ প্রবাহেও স্থবিরতা সৃষ্টি করতে পারে, যা দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য ক্ষতিকর।

    সব মিলিয়ে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর একীভূতকরণ আপাতদৃষ্টিতে পুনর্গঠনের পদক্ষেপ হলেও, বাস্তবে এটি শক্তিশালী ব্যাংকগুলোর ওপর বাড়তি বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে। দুর্বল ব্যাংকগুলোর দায়ভার ভাগাভাগি করতে গিয়ে পুরো ব্যাংক খাতই এখন আরও নাজুক অবস্থার দিকে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা তাই সতর্ক করেছেন যদি সুশাসন, স্বচ্ছতা ও দক্ষ ঋণ ব্যবস্থাপনা দ্রুত নিশ্চিত না করা যায়, তাহলে এই একীভূতকরণ দীর্ঘমেয়াদে দেশের আর্থিক খাতকে আরও দুর্বল করে তুলবে।

    বেসরকারি পাঁচটি ইসলামী ব্যাংকের দীর্ঘদিনের আর্থিক দুরবস্থা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে সরকার একীভূতকরণের উদ্যোগ নিয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, দুর্বল ব্যাংকগুলোকে একত্রিত করে একটি নতুন ব্যাংক গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে, যার নাম হতে পারে “ইউনাইটেড ইসলামিক ব্যাংক” বা “সম্মিলিত ইসলামিক ব্যাংক”। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি পূরণ, গ্রাহকের আস্থা পুনরুদ্ধার এবং আমানত সংগ্রহ বৃদ্ধির চেষ্টা করা হবে।

    একীভূত ব্যাংকটি সাময়িকভাবে সরকারি নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হবে, যাতে এর কার্যক্রমে স্থিতিশীলতা আসে এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়। সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক যৌথভাবে এই ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি পূরণের জন্য বিশেষ তহবিল বরাদ্দের কথাও বিবেচনা করছে। অর্থনীতিবিদদের মতে, এটি সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হলে ব্যাংকগুলোর আর্থিক ভিত্তি কিছুটা শক্তিশালী হতে পারে, তবে এর জন্য দরকার হবে কার্যকর পরিকল্পনা ও দৃঢ় রাজনৈতিক সদিচ্ছা।

    এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সুশাসন ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। ব্যাংকগুলোর অভ্যন্তরীণ পরিচালন কাঠামোতে স্বচ্ছতা আনতে হবে এবং ঋণ বিতরণ ও আদায়ের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত নীতি অনুসরণ করতে হবে। পাশাপাশি ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি, যাতে ব্যাংকগুলো অর্থ ফেরত আনতে সক্ষম হয় এবং নতুন করে খেলাপির সংস্কৃতি না বাড়ে।

    বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, ব্যাংকিং খাতে স্থিতিশীলতা ফেরাতে ডিজিটাল রূপান্তর ও প্রযুক্তিনির্ভর তদারকি ব্যবস্থা চালু করা প্রয়োজন। ডিজিটাল ব্যাংকিং ও স্বয়ংক্রিয় পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা দুর্নীতি ও অনিয়ম কমাতে সহায়ক হতে পারে। তাছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রক ভূমিকা আরও শক্তিশালী করতে হবে, যাতে নিয়ম লঙ্ঘন বা অব্যবস্থাপনা দ্রুত শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া যায়।

    পরিশেষে গ্রাহকদের আস্থা ফিরিয়ে আনা এখন সবচেয়ে জরুরি। ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থার স্বচ্ছ তথ্য নিয়মিত প্রকাশ করা, সেবার মান উন্নত করা এবং আমানতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, এই পদক্ষেপগুলো জনগণের বিশ্বাস পুনর্গঠনে সহায়তা করবে। আস্থা ফিরলে আমানত বৃদ্ধি পাবে, যা ব্যাংকগুলোকে পুনরায় অর্থনৈতিকভাবে টিকে ওঠার সুযোগ দেবে। সব মিলিয়ে এই একীভূতকরণ কেবল কাঠামোগত পরিবর্তন নয়, এটি বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের জন্য একটি পরীক্ষার সময়। যদি সুশাসন, স্বচ্ছতা, প্রযুক্তি ও জবাবদিহিতার সমন্বয়ে এই সংস্কার কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, তবে দুর্বল ব্যাংকগুলো আবারও স্থিতিশীলতার পথে ফিরতে পারবে; অন্যথায় এই উদ্যোগ কেবল আরেকটি সাময়িক সমাধান হয়েই সীমিত থাকবে।

    ছয়টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের একযোগে ধাক্কা খাওয়া কেবল একটি ব্যাংকিং সমস্যা নয়; এটি দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য বড়ো সতর্কবার্তা। দীর্ঘদিনের দুর্বল প্রশাসন, অস্বচ্ছ ঋণবণ্টন, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং মূলধনের ঘাটতি এই সব কারণে ব্যাংকগুলো ক্রমশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। খেলাপি ঋণের পাহাড় ও আদায় সংক্রান্ত জটিলতা ব্যাংকগুলোর কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে এবং জনগণের আস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

    সরকারের উদ্যোগে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে একীভূত করার পদক্ষেপ, মূলধন পুনঃপ্রতিষ্ঠা, স্বচ্ছতা ও সুশাসন নিশ্চিত করা সবই সমাধানের দিকে এক বড় পদক্ষেপ। তবে এটি সফল হতে হলে প্রয়োজন কার্যকর তদারকি, সুশাসন, প্রযুক্তিনির্ভর নিয়ন্ত্রণ এবং কঠোর ঋণ পুনরুদ্ধার ব্যবস্থা। শুধুমাত্র একীভূতকরণই যথেষ্ট নয়; ব্যাংকগুলোকে পুনরায় স্থিতিশীল ও কার্যকর করার জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা এবং ধারাবাহিক সংস্কার অপরিহার্য।
    সর্বোপরি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর পুনর্গঠন এবং জনমতের আস্থা ফিরিয়ে আনা দেশের অর্থনীতিকে টিকে থাকার পথ দেখাবে। এটি এখন সময়ের দাবি, যাতে দেশের ব্যাংক খাতের ভিত্তি মজবুত হয় এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও জনগণের বিশ্বাস একসাথে নিশ্চিত করা যায়।

    Share. Facebook Twitter LinkedIn Email Telegram WhatsApp Copy Link

    সম্পর্কিত সংবাদ

    অর্থনীতি

    বিদেশে কাজের সুযোগ কমছে

    October 26, 2025
    অর্থনীতি

    ডলারের অস্থিরতায় বাড়ছে আমদানি খরচ

    October 26, 2025
    অর্থনীতি

    পাঁচ বছর পর ভারত–চীন সরাসরি ফ্লাইট চালু

    October 26, 2025
    Leave A Reply Cancel Reply

    সর্বাধিক পঠিত

    সাউথইস্ট ব্যাংকে ২৫ কোটি টাকা আত্মসাত

    আইন আদালত October 7, 2025

    ক্রেতারা ভারত-চীন ছাড়ছে, বাংলাদেশ পাচ্ছে অর্ডার

    অর্থনীতি August 15, 2025

    সব ব্যবসায়ী ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপী নয়

    মতামত January 13, 2025

    বরিশালের উন্নয়ন বঞ্চনা: শিল্প, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য ও পর্যটন খাতে নেই অগ্রগতি

    মতামত April 22, 2025
    সংযুক্ত থাকুন
    • Facebook
    • Twitter
    • Instagram
    • YouTube
    • Telegram

    EMAIL US

    contact@citizensvoicebd.com

    FOLLOW US

    Facebook YouTube X (Twitter) LinkedIn
    • About Us
    • Contact Us
    • Terms & Conditions
    • Comment Policy
    • Advertisement
    • About Us
    • Contact Us
    • Terms & Conditions
    • Comment Policy
    • Advertisement

    WhatsAppp

    01339-517418

    Copyright © 2025 Citizens Voice All rights reserved

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.