সরকারি খাতে বিনিয়োগ করে আপনি করছাড় পেতে পারেন। আয়ের একটি অংশ সঞ্চয় করে নির্দিষ্ট খাতে বিনিয়োগ করলে বছরের শেষে কম কর দিতে হয়। এই সুযোগ ব্যবহার করে অনেক করদাতা বিনিয়োগ করেন। তবে হিসাব করার নিয়মে অনেকেই হিমশিম খান।
বিনিয়োগের সময়সীমা:
প্রতিবছর ১ জুলাই থেকে পরবর্তী বছরের ৩০ জুনের মধ্যে বিনিয়োগ করতে হবে। এই সময়সীমার মধ্যে করদাতার আয়-ব্যয়ের হিসাবের ভিত্তিতে বিনিয়োগজনিত করছাড় নেওয়া যাবে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির এই সময়ে বিনিয়োগ করে করছাড় নেওয়া পরিকল্পনামূলকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। সঞ্চয়পত্রসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করে আয়কর কমানো যায়।
করছাড় পাওয়ার নিয়ম: বিনিয়োগজনিত করছাড়ের পরিমাণ নির্ধারণ হয় তিনটি শর্তের মধ্যে যেটি সবচেয়ে কম হবে তার ওপর:
-
মোট আয়ের ০.০৩ শতাংশ
-
মোট অনুমোদনযোগ্য বিনিয়োগের ১৫ শতাংশ
-
সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা
কোনো করদাতার আইনানুগ কর রেয়াতের পরিমাণ কখনোই কর দায়ের বেশি হবে না। ন্যূনতম কর:
-
ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন: ৫,০০০ টাকা
-
অন্যান্য সিটি করপোরেশন: ৪,০০০ টাকা
-
সিটি করপোরেশন ছাড়া অন্যান্য এলাকা: ৩,০০০ টাকা
কোথায় বিনিয়োগ করবেন: বিনিয়োগযোগ্য ৯টি খাত নির্ধারণ করেছে এনবিআর:
-
সঞ্চয়পত্র
-
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার
-
মিউচুয়াল ফান্ড বা ডিবেঞ্চার
-
জীবনবিমার প্রিমিয়াম
-
সরকারি কর্মকর্তাদের প্রভিডেন্ট ফান্ডে চাঁদা
-
স্বীকৃত ভবিষ্য তহবিলে নিয়োগকর্তা ও কর্মকর্তার চাঁদা
-
কল্যাণ তহবিল ও গোষ্ঠীবিমার তহবিলে চাঁদা
-
সুপার অ্যানুয়েশন ফান্ডে চাঁদা
-
পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত যেকোনো সিকিউরিটিজ
ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে প্রতি মাসে ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয় করেও করছাড় পাওয়া যাবে। ডিপিএসের ক্ষেত্রে বার্ষিক সর্বোচ্চ ১,২০,০০০ টাকার ওপর করছাড় প্রযোজ্য।
উদাহরণ:
জাহিদ কবির, একজন সরকারি কর্মচারী, ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বছরের আয় ৩,৬৪,০০০ টাকা। তিনি মাসে ৩,২০০ টাকা ভবিষ্য তহবিলে জমা রাখেন, কল্যাণ তহবিল ও গোষ্ঠীবিমা তহবিলে মাসে ১৫০ ও ১০০ টাকা। মোট বিনিয়োগ: ৪১,৪০০ টাকা। কর হিসাব: প্রথম ৩,৫০,০০০ টাকার ওপর কর নেই। বাকি ১৪,০০০ টার ওপর কর হার ৫ শতাংশ অনুযায়ী ৭০০ টাকা। বিনিয়োগজনিত করছাড়:
- মোট আয়ের ০.০৩% → ১০,৯২০ টাকা
- মোট বিনিয়োগের ১৫% → ৬,২১০ টাকা
- সর্বোচ্চ সীমা → ১০,০০,০০০ টাকা
সবচেয়ে কম: ৬২১০ টাকা। কিন্তু কর দায় ৭০০ টাকা, যা ন্যূনতম কর ৫,০০০ টাকার চেয়ে কম। তাই জাহিদকে ন্যূনতম ৫,০০০ টাকা কর দিতে হবে।

