ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা কাঁপিয়ে দেওয়া শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থায় বড় ধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পরপরই সাতটি বিদ্যুৎকেন্দ্র হঠাৎ ট্রিপ করে বন্ধ হয়ে যায়। পাশাপাশি ঘোড়াশালের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাবস্টেশনও দুর্ঘটনার কারণে কার্যক্রম স্থগিত করতে বাধ্য হয়।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড–বিপিডিবির প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে কম্পন শুরু হওয়ার পর ১১টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত অন্তত সাতটি পাওয়ার প্লান্টের উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। আরও কিছু কেন্দ্রের অবস্থা যাচাই করা হচ্ছে।
বন্ধ হয়ে যাওয়া কেন্দ্রগুলোর মধ্যে রয়েছে—
সামিট বিবিয়ানা (৩৪১ মেগাওয়াট)
বিপিডিবির বিবিয়ানা–৩ (৪০০ মেগাওয়াট)
আশুগঞ্জের তিনটি ইউনিট (২২৫, ৫৫ ও ৫০ মেগাওয়াট)
চট্টগ্রামের এসএস পাওয়ার
সিরাজগঞ্জের ৭৫ মেগাওয়াটের একটি ইউনিট
এ ছাড়া ঘোড়াশাল সাবস্টেশনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ২৩০ কেভি, ১৩২ কেভি ও ৩৩ কেভি লাইন সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।
বিপিডিবির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “একাধিক কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে, আরও কিছু চালু রাখতে সমস্যা হতে পারে। সেগুলো পুনরায় চালু করতে সময় লাগবে।” তবে তিনি আশ্বস্ত করেন, বর্তমানে চাহিদা তুলনামূলক কম থাকায় বড় আকারের লোডশেডিংয়ের আশঙ্কা নেই।
ভূমিকম্পের মাত্রা নিয়ে দুই প্রতিষ্ঠানের তথ্য ভিন্ন। যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসজিএস বলছে এটি ছিল ৫.৫ মাত্রার, আর বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর নিশ্চিত করেছে ৫.৭ মাত্রা। কেন্দ্রস্থল ছিল নরসিংদীর মাধবদী এলাকা।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই কম্পনে রাজধানীতে তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বিভিন্ন স্থানে ভবনেও ফাটল ও ক্ষতির ঘটনা ঘটেছে।
দেশের বিদ্যুৎ খাতের জন্য ঘটনাটি এক ধরনের সতর্কবার্তা হয়ে এলেও সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন—উৎপাদন ও সরবরাহ দ্রুত স্বাভাবিক করতে তারা জরুরি ভিত্তিতে কাজ করে যাচ্ছেন।

