দেশজুড়ে ২০টি শিল্পনগরীতে ৮৭১টি শিল্পপ্লট বরাদ্দের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)। নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও শিল্পকারখানা স্থাপনে সহায়তার অংশ হিসেবে নিয়মিত কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় এ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে।
সম্প্রতি এক বিজ্ঞপ্তিতে বিসিক জানিয়েছে, এসব প্লটে বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, ড্রেনেজ ও রাস্তা–ঘাটসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর সুবিধা থাকবে। আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছে ১১ নভেম্বর। আগামী ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত উদ্যোক্তারা আবেদন করতে পারবেন। আবেদন–সংক্রান্ত শর্ত, ফরম ও নির্দেশনা বিসিকের ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে। বিজ্ঞপ্তির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, বরাদ্দযোগ্য খালি প্লট সবচেয়ে বেশি রয়েছে মুন্সিগঞ্জের ‘বিসিক বৈদ্যুতিক পণ্য উৎপাদন ও হালকা প্রকৌশল’ শিল্পনগরীতে। এখানে ৩২৭টি প্লট প্রস্তুত আছে।
দ্বিতীয় অবস্থানে রাজশাহী-২ (দ্বিতীয়) শিল্পনগরী, যেখানে খালি প্লট ২১৫টি। গোপালগঞ্জ বিসিক শিল্পনগরীর সম্প্রসারিত অংশে ৯২টি প্লট আছে। এছাড়া শ্রীমঙ্গল শিল্পনগরীতে ৬৩টি, চুয়াডাঙ্গায় ৪৫টি, সুনামগঞ্জে ২৭টি, মাদারীপুর (সম্প্রসারণ) শিল্পনগরীতে ২৩টি এবং ভৈরবে ১৯টি প্লট খালি রয়েছে।
বরগুনায় ১২টি, নরসিংদী (সম্প্রসারণ) শিল্পনগরীতে ৮টি, পাবনায় ৭টি, কুড়িগ্রাম ও খাগড়াছড়িতে ৬টি করে, সিরাজগঞ্জে ৫টি এবং ঝালকাঠি, ফেনীর নিজকুঞ্জরা, মৌলভীবাজার ও নোয়াখালী শিল্পনগরীতে ৩টি করে প্লট খালি আছে। রাঙামাটি ও কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম শিল্পনগরীতে ২টি করে শিল্পপ্লট রয়েছে।
বিসিক শিল্পনগরীভেদে জমির দাম আলাদা। একরভিত্তিক মূল্য বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হলেও সেটি শতাংশ বা বর্গফুট অনুযায়ী হিসাব করা সম্ভব। ১ একর সমান ৪৩ হাজার ৫৬০ বর্গফুট বা ১০০ শতাংশ। সে অনুযায়ী প্রতি শতাংশ সমান ৪৩৫ দশমিক ৬ বর্গফুট। ২০টি শিল্পনগরীর মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে মুন্সিগঞ্জের বিসিক বৈদ্যুতিক পণ্য উৎপাদন ও হালকা প্রকৌশল শিল্পনগরীর জন্য। এখানে প্রতি একর জমির দাম ৯ কোটি ১৬ লাখ টাকা। প্রতি বর্গফুটের দাম প্রায় ২ হাজার ১০৩ টাকা। প্লটের আকার ২ হাজার ৬০০ থেকে ৬ হাজার বর্গফুট হওয়ায় একেকটি প্লটের দাম ৫৪ লাখ ৬৯ হাজার থেকে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকার মধ্যে পড়বে। অন্যান্য শিল্পনগরীতে এর প্রায় অর্ধেক দামে প্লট পাওয়া যাবে। সবচেয়ে কম দাম খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও সুনামগঞ্জের শিল্পপ্লটে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রতিটি শিল্পনগরীতে ডাম্পিং ইয়ার্ড, গ্রিন জোন, ফায়ার সার্ভিস, মসজিদ ও লেকের মতো সুবিধা থাকবে। পাশাপাশি এসব এলাকা মহাসড়ক, রেলপথ বা নদীর কাছে হওয়ায় কাঁচামাল ও উৎপাদিত পণ্য পরিবহন সহজ হবে। জমি বরাদ্দ পাওয়ার পর উদ্যোক্তারা প্লট ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বন্ধক রেখে ঋণ নিতে পারবেন।
পুরুষ উদ্যোক্তারা প্লটের মূল্য এককালীন বা ছয় বছরে ১২ কিস্তিতে পরিশোধ করতে পারবেন। নারী উদ্যোক্তারা এককালীন বা সাত বছরে ১৪ কিস্তিতে দিতে পারবেন। আবেদন জমা দেওয়ার সময় পুরুষ উদ্যোক্তাদের প্লটের মোট মূল্যের ২০ শতাংশ এবং নারী উদ্যোক্তাদের ১৫ শতাংশ অর্থ পে–অর্ডার বা ডিডি হিসেবে জমা দিতে হবে। বিস্তারিত তথ্য বিসিকের ওয়েবসাইট এবং সংশ্লিষ্ট শিল্পনগরী থেকেও জানা যাবে।

