বন্দর ব্যবস্থাপনায় মাত্র ১৩ দিনের মধ্যে বিনিয়োগ চুক্তি সম্পন্ন হওয়ায় সরকারের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) রাজধানীর ইআরএফ কার্যালয়ে একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, বিগত ১৫ বছরে ব্যাংকের খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র গোপন রাখা হয়েছিল। এখন সঠিক তথ্য সামনে আসায় সেই ঋণের পরিমাণ বেড়ে গেছে বলে মনে হচ্ছে। তার মতে, বন্দর ব্যবস্থাপনায় আধুনিক বিকল্প নেই, কিন্তু যেকোনো গোপন চুক্তি বৈষম্যমূলক।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, “একটি বিনিয়োগের জন্য নন-ডিসক্লোজার অ্যাগ্রিমেন্টে (এনডিএ) নির্ভর করা উচিত নয়। একদিকে আপনি কোনো সংস্কার করলেন না, অন্যদিকে মাত্র দুই সপ্তাহে এত বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন—এটা সত্যিই বিস্ময়কর।”
এ সময় সাবেক সচিব ফারুক হোসেন বলেন, বন্দরের মতো বড় কোনো চুক্তি অবশ্যই প্রকিউরমেন্ট প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে হতে হবে। টেন্ডার ডকুমেন্ট তৈরি, বিতরণ, আলোচনা ও অনুমোদনের পরই চূড়ান্ত স্বাক্ষর করার নিয়ম রয়েছে। চুক্তিতে ‘দুই পক্ষের সম্মতি ছাড়া তথ্য প্রকাশ করা যাবে না’—এই ধারা নতুন কিছু নয়, সব চুক্তিতেই থাকে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের ব্যাংকিং খাতে মোট খেলাপি ঋণ এখন সাড়ে ৬ লাখ কোটি টাকা। এটি ব্যাংকগুলোর দেওয়া মোট ঋণের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি।
ড. দেবপ্রিয় জানান, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ কম দেখানোর প্রবণতা ছিল। এখন সেই গোপন অংশ প্রকাশ পাচ্ছে। তিনি বলেন, “শুধু খেলাপি ঋণ বাড়েনি বরং যেখানে যেখানে ঘাটতি জমে ছিল, সেগুলোও সামনে এসেছে।”
ডিবিএ সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, “প্রকৃত সংকট দেখা যাবে আগামী বছর থেকে। সবকিছু এখন প্রকাশ্যে এসেছে। এর প্রভাব তখনই বাজার ও মানুষের ওপর পড়বে।”
অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিক জিয়াউর রহমান সম্পাদিত অর্থনৈতিক সাংবাদিকতা বিষয়ক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

