গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ–সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেছেন, ১৯৭০ সালে যারা নির্বাচন করতেন, তাদের অনেকেরই সীমিত সম্পদ ছিল। তারা বাস বা রিকশায় যেতেন এলাকায়। কিন্তু আজ কেউ ভোটে অংশ নেওয়ার কথা কল্পনাও করতে পারেন না নিজের পাজেরো ছাড়া। ভোটে জিতলে আরও একটি শুল্কমুক্ত পাজেরো পাওয়া যায়। এভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়ার সামাজিক চরিত্র সম্পূর্ণ বদলে গেছে।
গতকাল সোমবার রাজধানীর আরগাঁওয়ে পর্যটন ভবনে গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএস আয়োজিত বার্ষিক উন্নয়ন সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, যতক্ষণ না নির্বাচন হবে এমন যে সমাজের সব স্তরের মানুষ সীমিত সামর্থ্য নিয়েও অংশগ্রহণ করতে পারবে, ততক্ষণ সংসদে একটি নির্দিষ্ট শ্রেণির আধিপত্য থাকবে। নীতি-প্রণয়নও হবে তাদের স্বার্থকে কেন্দ্র করে। বাস্তবতা হলো, সংস্কার টেবিলে আসবে, কিছু পাস হবে, কিন্তু বাস্তবায়ন করবে নির্বাচিত সংসদ। সংসদের সদস্যদের পছন্দ-অপছন্দই নির্ধারণ করবে সংস্কারের ফলাফল। আমরা আশা করতে পারি কিছু সংস্কার কার্যকর হবে। তবে সংসদের চরিত্র না বদলালে, সমাজের বিভিন্ন অংশের সঠিক প্রতিনিধি না থাকলে, আমরা আবারও এলিট-নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্রের মুখোমুখি হব। এ ধরনের গণতন্ত্র বহু সমস্যার জন্ম দেয়।
তিনি আরও বলেন, এখন সংসদ ক্রমশ ধনী গোষ্ঠীর দখলে চলে গেছে। এটি এলিট শ্রেণির জন্য তৈরি এবং অভিজাতদের দ্বারা পরিচালিত। তারা রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারণ করছে। এ বাস্তবতায় যদি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রক্রিয়াকে গণতান্ত্রিক করতে না পারি, তাহলে উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন আশা করা কঠিন। পুরনো সদস্যরা সংসদে ফিরে এলে সংসদের অভিজাত চরিত্র বদলাবে না। তাই গত ৫২ বছরে ভঙ্গুর গণতন্ত্র দেখা গেছে।

