বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ও মানসিক সহায়তা বাড়াতে ডিজিটাল হাসপাতাল পাইলট প্রকল্প চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।
গত (বুধবার) উত্তরাস্থ বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে সংগঠনটি আইসিটি-সক্ষম স্বাস্থ্যসেবা প্ল্যাটফর্ম অলওয়েল বিডি লিমিটেড এবং শীর্ষস্থানীয় ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি নুভিস্তা ফার্মা পিএলসি-র সঙ্গে একটি ত্রি-পক্ষীয় সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এই প্রকল্পের মাধ্যমে শ্রমিকদের, বিশেষ করে নারী শ্রমিকদের জন্য সময়োপযোগী স্ত্রীরোগ, প্রজনন স্বাস্থ্য ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা হবে। নুভিস্তা ফার্মা একটি কাঠামোগত রেফারেল নেটওয়ার্ক গড়ে তুলবে।
নুভিস্তা ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম রাব্বুর রেজা বলেন, “প্রতি শ্রমিকেরই মানসম্মত ও সময়মতো স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার অধিকার আছে। এই সহযোগিতা আমাদের বিশেষ করে নারী শ্রমিকদের কাছে প্রয়োজনীয় শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সাহায্য করবে।”
ডিজিটাল হাসপাতাল প্ল্যাটফর্মটি পরিচালনা করবে অলওয়েল বিডি লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি ২৪ ঘণ্টা পরামর্শ, নিরাপদ ই-হেলথ রেকর্ড ব্যবস্থাপনা, প্রয়োজনীয় ফলোআপ ও কারখানার ভেতরে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
অলওয়েলের চেয়ারম্যান মোজাহেদুল হক আবুল হাসানাত বলেন, “আমাদের লক্ষ্য যে কোনো সময়, যেকোনো স্থান থেকে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা। রিএমজি কারখানায় আমাদের প্ল্যাটফর্ম যুক্ত হলে শ্রমিকরা চিকিৎসা নেওয়ায় যে বাধায় পড়েন, তা কমবে এবং একটি প্রতিক্রিয়াশীল স্বাস্থ্যব্যবস্থা তৈরি হবে।”
বিজিএমইএ কারখানাগুলোর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, মানবসম্পদ ও কমপ্লায়েন্স টিমকে সহায়তা করা এবং শ্রমিকদের সঙ্গে কার্যকর যোগাযোগের দায়িত্ব পালন করবে। সিনিয়র সহ-সভাপতি ইনামুল হক খান বলেন, “শ্রমিক কল্যাণে উদ্ভাবনী ও কার্যকর স্বাস্থ্যসেবা আনতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কারখানার ভেতরে ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিলে অপ্রয়োজনীয় অবহেলা কমবে এবং শ্রমিকদের সুস্থতা বাড়বে।”
প্রকল্পের প্রথম ধাপে নির্বাচিত কারখানার ৫ হাজার শ্রমিক যুক্ত হবে। তিন মাসের মধ্যে এই সংখ্যা ১০ হাজারে উন্নীত করা হবে। অংশগ্রহণকারী শ্রমিকরা এক বছরের জন্য ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা পাবেন। ভবিষ্যতে কর্মপরিধি ও ফলাফল মূল্যায়নের ভিত্তিতে প্রকল্পটি আরও সম্প্রসারণ করা হবে।
সমঝোতা অনুযায়ী, তিন প্রতিষ্ঠানই ত্রৈমাসিক অগ্রগতি প্রতিবেদন, তথ্যের গোপনীয়তা, সেবার মান ও প্রকল্পের সম্প্রসারণযোগ্যতা যৌথভাবে তদারকি করবে।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে কর্মক্ষেত্রভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা জোরদারে এই সহযোগিতা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ডিজিটাল হাসপাতাল পাইলট প্রকল্প শ্রমিকদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করবে, কর্মহানির সংখ্যা কমাবে এবং কারখানাভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবার নতুন মানদণ্ড স্থাপন করবে।

