সরকারি সূত্র জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরের জন্য সীমিত সংস্করণে তৈরি খসড়া বাজেট এবং আগামী অর্থবছরের রূপরেখা আজ প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের কাছে উপস্থাপন করা হবে। এর মূল উদ্দেশ্য তার পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা নেওয়া।
সূত্রের খবর, আগামী অর্থবছরের বাজেটের সম্ভাব্য আকার ৮.৫ ট্রিলিয়ন টাকা। তবে তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব নতুন নির্বাচিত সরকারের হাতে থাকবে। বাজেট প্রণয়ন প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে।
পরামর্শমূলক বৈঠকে অংশ নেবেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালাহউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মানসুর, অর্থ সচিব ড. খৈরুজ্জামান মোজুমদার এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাজেট বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তা। বৈঠকটি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সাম্প্রতিক সরকার পরিবর্তনের পর এই বাজেট প্রণয়নের সময় এসেছে।
সরকারি সূত্র জানিয়েছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট চূড়ান্ত করতে অর্থ বিভাগের সময় লাগতে পারে জানুয়ারির শেষ পর্যন্ত। প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী চলতি বাজেট ৫.২০ ট্রিলিয়ন টাকা, যা মূল বাজেটের ৫.৩৫ ট্রিলিয়ন টাকার তুলনায় কিছুটা কম। তবে চলতি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ব্যয়ের পুনর্বিন্যাস এখনো সম্পূর্ণ হয়নি। এখানেই মূল হিসাব-নিকাশ এবং খরচ কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, যা অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যয় সংকোচনের পরিকল্পনার অংশ।
একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চলতি বাজেট ৭.৯০ ট্রিলিয়ন টাকা হওয়ায় তা উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব নয়। আগের বাজেট ৭.৯৭ ট্রিলিয়ন টাকার তুলনায় সামান্য কম হওয়ায় সংশোধিত বাজেট চূড়ান্ত হলে ৭.৮ থেকে ৭.৮৫ ট্রিলিয়ন টাকার মধ্যে স্থির হতে পারে।
অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, সাধারণত তারা সংশোধিত বাজেট এবং নতুন বাজেটের রূপরেখা মে মাসের মাঝামাঝি প্রধানমন্ত্রী বা প্রধান উপদেষ্টার কাছে উপস্থাপন করে। তবে এবার অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ ফেব্রুয়ারিতে শেষ হওয়ার কারণে বাজেট নথি আগে থেকে প্রধান উপদেষ্টার কাছে পাঠানো হচ্ছে।
অপ্রত্যাশিত আর্থিক দায়ের মধ্যে রয়েছে নতুনভাবে গঠিত পাঁচ-ইন-ওয়ান সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকে ২০ হাজার কোটি টাকা প্রদান এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বৃদ্ধির জন্য প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই নতুন বরাদ্দগুলো বাজেটের আকারে চাপ সৃষ্টি করবে, তবে মূল বাজেট সীমার বাইরে যাবে না।
নতুন অর্থবছরের জন্য প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী জিডিপি বৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৬ শতাংশ এবং মুদ্রাস্ফীতির হার নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যও প্রায় ৬ শতাংশ। তবে চূড়ান্ত সংখ্যা নতুন সরকার ক্ষমতায় এলে নির্ধারণ করা হবে।

