ই-কমার্স এখন নাগরিক জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ব্যস্ত জীবনে মানুষ ঘরে বসেই প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে পারছে। জামাকাপড় থেকে শুরু করে ইলেকট্রনিক্স—প্রায় সবকিছুই এখন অনলাইনে পাওয়া যায়।
শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বজুড়েই ই-কমার্স জনপ্রিয়তা পেয়েছে। অ্যামাজনের মতো প্রতিষ্ঠান দেশ-বিদেশের সীমানা অতিক্রম করে পণ্য সরবরাহ করছে। এখান থেকে সুবিধা পাচ্ছে দুই দিকই। উৎপাদকরা সহজে পণ্য বাজারজাত করতে পারছে। ভোক্তারা এক ছাদের নিচে বিভিন্ন পণ্য পাচ্ছেন, সঙ্গে মিলছে ছাড়ও। বিশ্বব্যাপী অনেক ই-কমার্স কোম্পানি গড়ে উঠেছে, কিছু প্রতিষ্ঠান বিশাল আকার ধারণ করেছে। চলুন জেনে নিই বাজার মূলধনের দিক থেকে বিশ্বের শীর্ষ ১০ ই-কমার্স কোম্পানি:
১. অ্যামাজন:
দেশ: যুক্তরাষ্ট্র | বাজার মূলধন: ২ লাখ ৪৩ হাজার কোটি ডলার।
১৯৯৪ সালে জেফ বেজোস বই বিক্রি দিয়ে শুরু করেন অ্যামাজন। এখন বিশ্বে প্রায় সব ধরণের পণ্য পাওয়া যায় এখানে। ক্লাউড কম্পিউটিং, এআই, হোল ফুড, আইএমডিবিসহ নানা খাতে ব্যবসা সম্প্রসারণ করেছে। কর্মীর সংখ্যা ১৫ লাখ ৪৬ হাজার।
২. আলিবাবা:
দেশ: চীন | বাজার মূলধন: ৩৫ হাজার ৭৪০ কোটি ডলার
১৯৯৯ সালে হাংঝৌতে প্রতিষ্ঠিত আলিবাবা ছোট ব্যবসায়ীদের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে শুরু হয়। পরে আন্তর্জাতিকভাবে খুচরা বিক্রি, ডিজিটাল পেমেন্ট ও ক্লাউড সেবা সম্প্রসারণ হয়। ২ লাখ ৪০ হাজার কর্মী নিয়ে বিশ্বব্যাপী কাজ করছে।
৩. শপিফাই:
দেশ: কানাডা | বাজার মূলধন: ২২ হাজার ৭৫ কোটি ডলার
২০০৬ সালে অটোয়াতে প্রতিষ্ঠিত শপিফাই অন্য অনলাইন বিক্রেতাদের সেবা দেয়। বিশ্বজুড়ে ৫৬ লাখ অনলাইন বিক্রয়কেন্দ্র এতে যুক্ত। পণ্য ব্যবস্থাপনা, অর্থ পরিশোধ, পিওএস ব্যবস্থা, ক্লাউড সেবা—all-in-one। ২০১৫ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত। ২০২৪ সালে আয় ৮৮৮ কোটি ডলার।
৪. পিডিডি হোল্ডিংস:
দেশ: চীন | বাজার মূলধন: ১৫ হাজার ৫৪৬ কোটি ডলার
২০১৫ সালে সাংহাইতে প্রতিষ্ঠিত পিডিডি যৌথ কেনাকাটার জন্য পরিচিত। কৃষি ও দৈনন্দিন পণ্য বিক্রি করে। উইচ্যাটের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করে। ২০১৮ সালে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব থেকে ১৬০ কোটি ডলার সংগ্রহ করে। ২০২৪ সালে আয় ৫ হাজার ২১২ কোটি ডলার।
৫. মার্কাডো লিব্রে:
দেশ: আর্জেন্টিনা | বাজার মূলধন: ১০ হাজার ১২৭ কোটি ডলার
১৯৯৯ সালে বুয়েনস এইরেসে প্রতিষ্ঠিত লাতিন আমেরিকার বৃহত্তম ই-কমার্স। ১৮টি দেশে কার্যক্রম চালাচ্ছে। ফিনটেক খাতেও শক্ত অবস্থান। ২০০৭ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত। কোভিড-১৯ সময় জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়।
৬. কারভানা:
দেশ: যুক্তরাষ্ট্র | বাজার মূলধন: ৯ হাজার ৭৬০ কোটি ডলার
গাড়ির অনলাইন বিক্রিতে বিশেষ। নতুন নয়, ব্যবহৃত গাড়ি বিক্রি করে। বাড়িতে ডেলিভারি, সাত দিনের মধ্যে ফেরত নেওয়া ও অর্থায়নের সুবিধা দেয়। অ্যারিজোনায় প্রধান কার্যালয়। ২০২৩ সালে ৩৫০ কোটি ডলারের ক্ষতি হলেও ২০২৪ সালে ৪% নিট প্রবৃদ্ধি।
৭. মেইতুয়ান:
দেশ: চীন | বাজার মূলধন: ৮ হাজার ৫২ কোটি ডলার
সুপার অ্যাপ হিসেবে খাদ্য সরবরাহ, হোটেল সংরক্ষণ, ভ্রমণ, বাইক শেয়ারিংসহ নানা সেবা দেয়। প্রথম তিন প্রান্তিকে রাজস্ব বেড়েছে, তবে তৃতীয় প্রান্তিকে ক্ষতি হয়েছে।
৮. সি লিমিটেড:
দেশ: সিঙ্গাপুর | বাজার মূলধন: ৭ হাজার ২২০ কোটি ডলার
২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত। ই-কমার্স, ডিজিটাল আর্থিক সেবা ও বিনোদন খাতে কার্যক্রম। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় শপি প্রভাবশালী। বিনোদন কোম্পানি গারেনা। প্রযুক্তি ও লজিস্টিকসে বিনিয়োগ বাড়ানো হয়েছে।
৯. জে ডি মল:
দেশ: চীন | বাজার মূলধন: ৪ হাজার ২৫২ কোটি ডলার
অনলাইন ও অফলাইন মিলিয়ে ই-কমার্স করে। ২৬টি দোকানে ২০০+ ব্র্যান্ডের পণ্য, থিমভিত্তিক প্রদর্শন ও রোবট আছে। দ্রুত সম্প্রসারণে রয়েছে।
১০. কুপাং:
দেশ: যুক্তরাষ্ট্র | বাজার মূলধন: ৪ হাজার ২৩৭ কোটি ডলার
দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক। দ্রুত ডেলিভারি বিখ্যাত। খাদ্য, স্ট্রিমিং, ফিনটেক ও বিলাসবহুল পণ্যে কার্যক্রম। প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করে গ্রাহক সেবা উন্নত করছে।

