দুর্বল অবস্থান থেকে এখন ঘুরে দাঁড়াচ্ছে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি)। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা আয় ছিল ৫৯০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। অন্যান্য খাত থেকে আয় হয়েছে প্রায় ২০৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এতে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থার মোট আয় দাঁড়ায় ৭৯৮ কোটি ২৮ লাখ টাকা।
অন্যদিকে পরিচালনা ব্যয় ছিল ২৮৯ কোটি ৯২ লাখ টাকা। প্রশাসনিক ও আর্থিক খাতে ব্যয় হয়েছে ১২৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে মোট ব্যয় হয়েছে ৪১৬ কোটি ২৭ লাখ টাকা। কর সমন্বয়ের পর নিট মুনাফা হয়েছে ৩০৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। এটি বিএসসির ৫৪ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ নিট মুনাফা।
গতকাল সোমবার দুপুরে চট্টগ্রামের বোট ক্লাবে আয়োজিত বিএসসির বার্ষিক সাধারণ সভায় এই তথ্য জানান সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর মাহমুদুল মালেক। তিনি বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিএসসির মোট আয় ছিল ৫৯৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা। ব্যয় হয়েছিল ৩১১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। সেই বছর কর সমন্বয়ের পর নিট মুনাফা দাঁড়ায় ২৪৯ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। তুলনায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আয় বেড়েছে প্রায় ৫৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা, যা প্রায় ২২ শতাংশ বৃদ্ধি।
সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএসসির চেয়ারম্যান ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব নুরুন্নাহার চৌধুরী। সভায় জানানো হয়, শেয়ারহোল্ডারদের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের নিট মুনাফা থেকে ২৫ শতাংশ হারে নগদ লভ্যাংশ প্রদানের সুপারিশ করা হয়েছে।
বিএসসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নিরীক্ষিত হিসাব অনুযায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সংস্থার মোট সম্পদের পরিমাণ ৩ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা। দেনার পরিমাণ ১ হাজার ৯৮৩.৭৭ কোটি টাকা।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদুল মালেক সভায় আরও জানান, বর্তমানে বিএসসির বহরে ৫টি জাহাজ আছে। এসব জাহাজ বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যিক কাজে নিয়োজিত। প্রথমবারের মতো সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে দুটি নতুন জাহাজ কেনার উদ্যোগ নেয়ার পর ২১ সেপ্টেম্বর বিএসসি ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চুক্তি হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম জাহাজ ‘এমভি বাংলার প্রগতি’ ইতোমধ্যে বহরে যুক্ত হয়ে বাণিজ্যিক কাজে নিয়োজিত। অপর জাহাজ ‘এমভি বাংলার নবযাত্রা’ সামনের বছরের জানুয়ারিতে বহরে যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে।
তিনি বলেন, উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে চীন সরকারের ঋণ সহায়তায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৬টি নতুন জাহাজের প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। এর মধ্যে ৩টি প্রোডাক্ট অয়েল ট্যাংকার এবং ৩টি নতুন বাল্ক ক্যারিয়ার রয়েছে। বর্তমানে ৫টি জাহাজ বহরে আছে এবং বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যিক কাজে নিয়োজিত।

