ইসরাইলি প্রসিকিউটররা অভিযোগ তুলেছে, ইরানের জন্য গুপ্তচরবৃত্তি করার সন্দেহে ৭ জন ইসরাইলি নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই নাগরিকরা ইরানি গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষে কাজ করছিল এবং দেশটির জন্য নানা কৌশলগত তথ্য সংগ্রহ করছিল বলে দাবি করা হয়েছে। ২২ অক্টোবর ২০২৪, তারিখে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতদের সবাই হাইফা এবং উত্তর ইসরাইলের ইহুদি সম্প্রদায়ের বাসিন্দা। তাদের মধ্যে একজন ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর পলাতক সৈনিক এবং দুজন অপ্রাপ্তবয়স্ক। বাকি পাঁচজন প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নামগুলো হলো— আজিস নিসানোভ, আলেকজান্ডার সাদিকভ, ভায়াচেস্লাভ গুশচিন, ইয়েভগেনি ইয়ফে, এবং ইগাল নিসান।
ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি ও সামরিক স্থাপনাগুলোর ছবি তোলা এবং এই তথ্য ইরানে পাঠানোর অভিযোগ আনা হয়েছে এই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে। তদন্তে উঠে এসেছে, তেহরানের হয়ে তারা তেলআবিবের কিরিয়া প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর, নেভাতিম ও রামাত ডেভিড বিমান ঘাঁটির মতো কৌশলগত স্থানগুলোর ছবি তুলেছে। এমনকি আয়রন ডোম প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা স্থাপনের স্থানগুলোতেও তারা নজরদারি করেছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
বিশেষ করে, নেভাতিম বিমান ঘাঁটিটি সম্প্রতি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছিল, আর রামাত ডেভিড বিমান ঘাঁটি ছিল হিজবুল্লাহর হামলার লক্ষ্যবস্তু। তদন্তে জানা গেছে, গোলানি সামরিক ঘাঁটির মানচিত্রের ছবি তুলে ইরানে পাঠানোর অভিযোগও রয়েছে গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে। এই ঘাঁটিটিতে অক্টোবরের শুরুতে একটি ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটে।
প্রসিকিউটরদের দাবি, সন্দেহভাজনরা বেশ কয়েক বছর ধরে ইরানের পক্ষে কাজ করছিল এবং তারা কয়েক লক্ষ ডলারের বিনিময়ে এই কাজগুলো করত। জানা গেছে, এই অর্থের কিছু অংশ ক্রিপ্টোকরেন্সির মাধ্যমে লেনদেন করা হয়েছে। গুপ্তচরবৃত্তির কার্যক্রম দুই বছর ধরে চললেও, গাজার চলমান সংঘাত শুরুর পর থেকে এই কার্যক্রম আরও সক্রিয় হয়ে ওঠে।
ইসরাইলি তদন্ত সংস্থা পুলিশ ও সিনবেত তাদের তদন্তের মাধ্যমে নিশ্চিত করেছে, এই সাতজন ইরানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রেখে চলছিল এবং ইরানি গোয়েন্দা সংস্থার নির্দেশনা মেনে কৌশলগত তথ্য সংগ্রহ করছিল।
ইসরাইলি সরকারের অ্যাটর্নি অফিস এ ঘটনাকে সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর নিরাপত্তা ঝুঁকি হিসেবে উল্লেখ করেছে। প্রসিকিউটররা এই সাতজনের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা সংক্রান্ত গুরুতর অপরাধের অভিযোগ আনার প্রস্তুতি নিচ্ছেন এবং তাদের আদালতে বিচার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত আটক রাখার আবেদন জানিয়েছেন।
এ ঘটনায় ইসরাইলজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে কারণ এটি ইসরাইলের নিরাপত্তা ব্যবস্থার একটি দুর্বলতা উন্মোচিত করেছে। তদন্ত চলমান এবং এ সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য আসতে আরও সময় লাগবে।
সূত্র: টাইমস অব ইসরাইল