বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উত্তেজনা প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। বিশেষ করে যেসব রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিপত্তিশালী, তাদের সিদ্ধান্ত এবং পদক্ষেপগুলো বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও ক্ষমতার ভারসাম্যকে প্রভাবিত করে থাকে। এই প্রেক্ষাপটে রাশিয়ার নেতৃত্বে ভ্লাদিমির পুতিনের ভূমিকা বিশ্লেষণ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ তার শাসনামলে বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট বিরোধী রাজনীতিবিদ ও সমালোচকের রহস্যজনক মৃত্যু আন্তর্জাতিক মহলে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। তাদের মৃত্যুর কারণ এবং প্রেক্ষাপট নিয়ে গবেষণা করা শুধু রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ রাজনীতির গতিপ্রকৃতি বোঝার জন্যই নয়, বরং বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের ক্ষেত্রেও তা গুরুত্বপূর্ণ।
ভ্লাদিমির পুতিনের শাসনামলে রাশিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক পরিবর্তন দেখা গেছে, যার একটি বড় বৈশিষ্ট্য হলো বিরোধীদের প্রতি কঠোর দমননীতি এবং ক্রমাগত কেন্দ্রীকরণ। পুতিন ২০০০ সালে প্রথমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন এবং তার শাসনামল থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত রাশিয়ান রাজনীতি ক্রমশ: একটি এককেন্দ্রিক শক্তির দিকে ধাবিত হয়েছে। বিরোধী দল এবং সমালোচকরা বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা হয়েছে, নির্যাতনের শিকার হয়েছে, এমনকি অনেকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে।
পুতিনের শাসনামলে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনগুলো:
ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ: পুতিন তার শাসনামলে রাশিয়ার রাজনৈতিক কাঠামোকে অত্যন্ত কেন্দ্রীভূত করেছেন। ক্ষমতার অধিকাংশ দিক মস্কোতে কেন্দ্রীভূত হয়েছে এবং ফেডারাল স্তরের নেতৃত্ব থেকে শুরু করে আঞ্চলিক নেতৃত্ব পর্যন্ত সব স্তরেই ক্রেমলিনের প্রভাব বৃদ্ধি পেয়েছে। পুতিন নিজেকে একটি শক্তিশালী নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তাকে কেন্দ্র করেই রাশিয়ার রাজনৈতিক ব্যবস্থা আবর্তিত হচ্ছে।
সংবিধান পরিবর্তন: ২০২০ সালে পুতিন সংবিধান সংশোধন করেন। যা তাকে ২০৩৬ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় থাকার সুযোগ করে দেয়। এই পদক্ষেপটি রাশিয়ার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ওপর প্রভাব ফেলেছে এবং তার দেশকে একটি কার্যত: স্বৈরাচারী শাসনের দিকে নিয়ে গেছে।
মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ: পুতিনের আমলে মিডিয়ার স্বাধীনতা সীমিত করা হয়েছে। বেশিরভাগ স্বাধীন মিডিয়া প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে। যারা বা যেসব মাধ্যম সরকারের সমালোচনা করেছে, তাদের সাংবাদিক ও কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা, হুমকি, এমনকি হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা ঘটেছে।
পুতিনের বিরোধীরা:
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের শাসনের বেশিরভাগ সময়ই বিরোধীদলের কোণঠাসা অবস্থায় দেখা যায়। যেমন: আলেক্সেই নাভালনি, তিনি পুতিনের সবচেয়ে প্রবল বিরোধী নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। নাভালনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে সংগ্রাম করে গেছেন এবং পুতিনের বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনা করেছেন। ২০২০ সালে তাকে বিষপ্রয়োগ করা হয়, যদিও তিনি সেরে উঠেন এবং রাশিয়ায় ফিরে গেলে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আরো আছেন বোরিস নেমতসভ। পুতিনের কড়া সমালোচক ও বিরোধী রাজনীতিবিদ, যিনি ২০১৫ সালে খুন হন। তিনি পুতিনের নীতির বিরুদ্ধে সরব ছিলেন এবং ইউক্রেনের ক্রিমিয়া দখল নিয়ে সমালোচনা করেছিলেন। তিনি একসময় রাশিয়ার ধনী ব্যক্তি ও পুতিনের সমর্থক ছিলেন, কিন্তু পরবর্তীতে পুতিনের বিরুদ্ধে দাঁড়ান। দুর্নীতির অভিযোগে তাকে ২০০৩ সালে গ্রেফতার করা হয় এবং তার কোম্পানি ইউকোসের সম্পদ রাষ্ট্রায়ত্ত করা হয়। এছাড়া আনা পলিটকোভস্কায়া একজন সাংবাদিক হিসেবে চেচেন যুদ্ধ এবং পুতিনের নীতির বিরুদ্ধে সরব ছিলেন। তাকে ২০০৬ সালে হত্যা করা হয় এবং তার মৃত্যু সন্দেহজনক হওয়াতে বলা হয় যে, এটি রাজনৈতিক মৃত্যু।
প্রধান প্রতিপক্ষদের মৃত্যু:
যারা পুতিনের বিরোধিতা করেছে, তারা হয় রাজনীতির বাইরে চলে গেছে অথবা নির্যাতনের শিকার হয়েছে বা প্রাণ হারিয়েছে। এই পরিস্থিতি রাশিয়ার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব করেছে। ভ্লাদিমির পুতিনের শাসনামলে তার প্রধান প্রতিপক্ষ এবং সমালোচকদের রহস্যজনক মৃত্যু রাশিয়ার রাজনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিরোধী নেতাদের মৃত্যুগুলো বেশিরভাগ সময়েই সন্দেহজনক ও অস্বচ্ছ পরিস্থিতিতে ঘটেছে, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজরে এসেছে এবং পুতিন প্রশাসনের বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা শুরু হয়েছে। এরকমই কয়েকজন পুতিনের বিরোধী প্রতিপক্ষরা হলেন:
বোরিস নেমতসভ-
বোরিস নেমতসভ ছিলেন পুতিনের অন্যতম বৃহৎ সমালোচক এবং প্রাক্তন রুশ উপ-প্রধানমন্ত্রী। তিনি ক্রিমিয়া দখল এবং ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে সরব ছিলেন। ২০১৫ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি, মস্কোর ক্রেমলিনের কাছে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকাণ্ড রাশিয়ার বিরোধী দল ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে নাড়িয়ে দিয়েছিল। যদিও সন্দেহভাজনদের গ্রেফতার করা হয়েছিল, তবে হত্যার প্রকৃত ষড়যন্ত্রকারীদের বিষয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। এটিকে তাই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হিসেবেই ধারণা করা হয়।
আলেকজান্ডার লিটভিনেঙ্কো-
প্রাক্তন কেজিবি এজেন্ট এবং পুতিন সরকারের কড়া সমালোচক লিটভিনেঙ্কো ২০০৬ সালে লন্ডনে পোলোনিয়াম-২১০ বিষ প্রয়োগে মারা যান। মৃত্যুর আগে তিনি বলেছিলেন যে, পুতিনের নির্দেশেই তাকে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে। ব্রিটিশ তদন্তে প্রমাণিত হয় যে, এই হত্যাকাণ্ডে রাশিয়ান সরকারের হাত ছিল। লিটভিনেঙ্কো পুতিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে বইও লিখেছিলেন, যা তাকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে।
আনা পলিটকোভস্কায়া-
পলিটকোভস্কায়া ছিলেন একজন সাংবাদিক, যিনি চেচনিয়া যুদ্ধ এবং পুতিনের নীতির বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা করেছিলেন। তার খোলামেলা প্রতিবেদনে এবং বইয়ে তিনি রাশিয়ার সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং দুর্নীতি প্রকাশ করেন। ২০০৬ সালের ৭ অক্টোবর পুতিনের জন্মদিনে রহস্যজনকভাবে মস্কোতে তাকে তার অ্যাপার্টমেন্টের বাইরে গুলি করে হত্যা করা হয়। তার মৃত্যুকে রাজনৈতিকভাবে অনুপ্রাণিত বলে অনেকেই মনে করেন, তবে হত্যাকারীদের চিহ্নিত করা হয়নি।
সের্গেই মাগনিটস্কি-
মাগনিটস্কি ছিলেন একজন কর আইনজীবী, যিনি রাশিয়ার সরকারি দুর্নীতি উন্মোচন করেছিলেন। তিনি সরকারের একটি বড় ধরনের কর দুর্নীতির স্ক্যান্ডাল প্রকাশ করেছিলেন, যার ফলে রাশিয়ান প্রশাসনের বিরাগভাজন হন। ২০০৯ সালে তাকে কারাগারে বন্দি অবস্থায় রাখা হয়, যেখানে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর পর, তার নামে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশ “মাগনিটস্কি আইন” পাস করে। যার মাধ্যমে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
ভ্লাদিমির কারা-মুরজা-
রুশ বিরোধী রাজনীতিবিদ এবং সাংবাদিক কারা-মুরজা ২০১৫ ও ২০১৭ সালে দু’বার বিষপ্রয়োগে আক্রান্ত হন, তবে তিনি বেঁচে যান। কারা-মুরজা পুতিনের নীতির কঠোর সমালোচক ছিলেন এবং পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছিলেন। তার ওপর হওয়া হামলাগুলোর পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল বলে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হয়।
পুতিনের সর্বশেষ বিরোধী মত দমনের পরিকল্পনার শিকার ইভগেনি প্রিগোজিন, যিনি ওয়ানার গ্রুপের নেতা ছিলেন। তার মৃত্যুকে পুতিনের প্রতি অবাধ্যতার ফলাফল হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। জুন ২০২৩ সালে প্রিগোজিন তার ভাড়াটে বাহিনী নিয়ে রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে একটি বিদ্রোহ শুরু করেন, যা পুতিনের শাসনের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। বিদ্রোহের পর পুতিন প্রিগোজিনের সঙ্গে আপস করলেও, কিছুদিনের মধ্যে প্রিগোজিনের ব্যক্তিগত জেট বিমান রহস্যজনকভাবে বিধ্বস্ত হয়। যেখানে প্রিগোজিনসহ আরও কয়েকজন মারা যান। এই মৃত্যুকে পুতিনের সঙ্গে অবাধ্যতার প্রতিশোধ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা পুতিনের শাসনে অবাধ্যতার ফলাফল। যদিও রাশিয়ান সরকার এটিকে একটি দুর্ঘটনা হিসেবে অভিহিত করেছে, তবুও প্রিগোজিনের আকস্মিক মৃত্যু- পুতিনের বিরোধীদের করুন পরিণতির ব্যাপারে অন্যদের জন্য একটি কঠোর বার্তা।
যেভাবে এ হত্যা ও দমন পীড়ন: পুতিনের শাসনামলে রাশিয়ার বিরোধী দল ও সমালোচকদের দমনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু উপাদান সরকারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে, যে গুলোকে বিরোধীদের দুর্বল করার উদ্দেশ্যে কার্যকরভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে আছে রাশিয়ার নিরাপত্তা সংস্থা বিশেষত: কেজিবির উত্তরসূরি “এফএসবি ” পুতিন প্রশাসনের অন্যতম প্রধান হাতিয়ার। পুতিন নিজেও কেজিবির সাবেক সদস্য ছিলেন, যা এই সংস্থার সঙ্গে তার সম্পর্ককে মজবুত করেছে। তাছাড়া পুতিনের প্রশাসন রাশিয়ান মিডিয়ার ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে। ‘রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া‘ বিরোধীদের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণা চালিয়ে পুতিনকে একটি শক্তিশালী ও অপ্রতিদ্বন্দ্বী নেতা হিসেবে তুলে ধরে। বিরোধীদের কণ্ঠস্বরকে মিডিয়াতে দমন করা হয় এবং স্বাধীন সংবাদমাধ্যম গুলোকে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে পুতিনের সরকার জনমতকে প্রভাবিত করতে এবং বিরোধীদের অবস্থান দুর্বল করতে নানা প্রচারণা চালানো হয়। এমনকি রাশিয়ার বিচার ব্যবস্থাও পুতিনের শাসনে স্বতন্ত্রভাবে কাজ করতে ব্যর্থ হয়েছে। প্রায়শই বিরোধী দল ও সমালোচকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে প্রেরণ করা হয়। “ভুয়া বা দুর্নীতিগ্রস্ত বিচার প্রক্রিয়া” বিরোধীদের চুপ করানোর একটি কার্যকরী হাতিয়ার হয়ে দাঁড়িয়েছে। উদাহরণস্বরূপ- “আলেক্সেই নাভালনি” এবং “মিখাইল খদরকভস্ক” এর মতো নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা দায়ের করে তাদের আটক করা হয়েছে। এভাবে আইনি প্রক্রিয়া ব্যবহৃত হয়েছে বিরোধীদের রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে দূরে রাখার জন্য।
পুতিন প্রশাসনের বিরোধীদের দমন করার অন্যতম ভয়াবহ হাতিয়ার হিসেবে “বিষপ্রয়োগ” এবং শারীরিক হামলা ব্যবহৃত হয়েছে। আলেক্সান্ডার লিটভিনেঙ্কো এবং আলেক্সেই নাভালনির ওপর বিষপ্রয়োগের ঘটনা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। রাশিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী ও গোপন সংস্থাগুলোর বিষপ্রয়োগের পদ্ধতি অত্যন্ত সূক্ষ্ম, যা দীর্ঘমেয়াদী শারীরিক ক্ষতি বা মৃত্যু ঘটাতেও সক্ষম। আবার বিরোধীদের অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল করতে এবং তাদের ব্যবসা বা সম্পত্তি ধ্বংস করতে “অর্থনৈতিক চাপ” ব্যবহার করা হয়। মিখাইল খদরকভস্কির মতো ধনী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ভুয়া দুর্নীতির অভিযোগ এনে তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে এবং তাদের রাজনৈতিক জীবন ধ্বংস করা হয়েছে।
অনেক ক্ষেত্রে বিরোধী প্রার্থীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয়নি। “নির্বাচনে জালিয়াতি ও কারচুপি” সরকারের ক্ষমতাকে নিশ্চিত করার একটি প্রধান উপায় হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। ২০১১ ও ২০১২ সালের রাশিয়ার নির্বাচনগুলোতে ব্যাপক জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছিল, দেশটির গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ওপর প্রশ্ন তোলে।
মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ, বিচারব্যবস্থার অপব্যবহার, বিষপ্রয়োগ, অর্থনৈতিক চাপ এবং নির্বাচনী কারচুপির মাধ্যমে পুতিনের প্রশাসন বিরোধী কণ্ঠগুলোকে চুপ করিয়ে দিয়েছে। যা রাশিয়ার রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছে।
ভ্লাদিমির পুতিনের শাসনামলে বিরোধী নেতাদের হত্যাকাণ্ড ও দমননীতি শুধু রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেই নয়, বরং আন্তর্জাতিক পর্যায়েও গভীর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। এই হত্যাকাণ্ড এবং বিরোধীদের বিরুদ্ধে নীতিগুলো পুতিন সরকারের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে এবং রাশিয়ার সাথে বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি হয়েছে।
এছাড়া, রাশিয়ার বিরুদ্ধে কূটনৈতিক চাপ বাড়ানোর ফলেও পুতিন প্রশাসন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে আরও সংকটের মুখে পড়েছে। যা ভবিষ্যতে রাশিয়ার স্থায়িত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। পরিশেষে এটিই বলা যায় যে, পুতিনের প্রতিপক্ষদের রহস্যজনক মৃত্যু শুধুমাত্র অভ্যন্তরীণ শাসন কৌশলের একটি অংশ নয় বরং এটি আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে রাশিয়ার অবস্থান এবং বৈশ্বিক সম্পর্কের সাথে সম্পর্কিত একটি জটিল এবং বিস্তৃত প্রভাব সৃষ্টি করছে। যা রাশিয়ার জনগণের বিরোধী মতামতকে দমন প্রচেষ্টার একটি অশনি সংকেত।