যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো থেকে আকাশপথে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে আসতে প্রায় ১৮ ঘণ্টা ৩০ মিনিট লাগে। যদি মাত্র ৩০ মিনিটে এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়া সম্ভব হয়, তবে কেমন হবে! আমাদের কাছে আকাশকুসুম কল্পনা হলেও এমনই এক প্রকল্পের ঘোষণা কয়েক বছর আগেই দিয়ে রেখেছেন বিশ্বের অন্যতম ধনকুবের ও প্রযুক্তি উদ্ভাবক ইলন মাস্ক।
ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় তাঁর এই স্বপ্ন “এবার বাস্তব হওয়া সম্ভব”- বলেছেন ইলন মাস্ক।
মার্কিন এই ধনকুবের ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠজন। নির্বাচনী প্রচারের সময় তিনি ট্রাম্পের পক্ষে প্রচার চালিয়েছিলেন, অকপটে অর্থ ঢেলেছিলেন। ট্রাম্প ভোটে জিতে গেছেন। এখন মাস্ক প্রযুক্তি খাতের আরেক সফল উদ্যোক্তা ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিবেক রামাস্বামীর সঙ্গে যৌথভাবে ট্রাম্পের নতুন “ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিসিয়েন্সি” এর নেতৃত্ব দিতে চলেছেন।
ইলন মাস্ক ঘোষণা দিয়েছেন, তাঁর প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের উচ্চাকাঙ্ক্ষী “পৃথিবী থেকে পৃথিবী”তে মহাকাশ ভ্রমণের প্রকল্প এবার দ্রুতই বাস্তব রূপ নেবে। প্রায় ১০ বছর আগে স্পেসএক্স তাদের স্টারশিপ রকেট তৈরির প্রস্তাব দিয়েছিল। বলেছিল, এটা হবে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী যান এবং তাদের রকেট নজিরবিহীন গতিতে এক মহাদেশ থেকে অন্য মহাদেশে ভ্রমণে সক্ষম হবে।
এ নিয়ে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্টারশিপ প্রতিবার এক হাজারের বেশি যাত্রী বহন করতে পারবে। সেটি আকাশ ফুঁড়ে অন্ধকার মহাকাশে নয়; বরং কক্ষপথ দিয়ে পৃথিবীর সমান্তরালে উড়ে যাবে। এভাবে সেটি এক নগর থেকে অন্য নগরে যাবে।
স্টারশিপে করে ভ্রমণ করতে যে সময় লাগার কথা বলা হচ্ছে, সেটাই সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়। বলা হচ্ছে- লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে টরন্টো যেতে ২৪ মিনিট, লন্ডন থেকে নিউইয়র্ক যেতে ২৯ মিনিট, সান ফ্রান্সিসকো থেকে নয়াদিল্লি যেতে ৩০ মিনিট এবং নিউইয়র্ক থেকে সাংহাই যেতে সময় লাগবে ৩৯ মিনিট!
বিশ্লেষকগণের মাঝে ভ্রমণের এই অভিনব ধারণা সম্প্রতি আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। মাস্ক বলেছেন, তাঁর এই স্বপ্ন বাস্তব হলে ব্যবসায়ী ও ভ্রমণপিপাসুদের অনেক সময় বেঁচে যাবে। তবে এই জন্য ভ্রমণকারীদের কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থ খরচ করতে হবে। মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। মাস্কের অতিদ্রুত ভ্রমণের এই আকাঙ্ক্ষা বিশ্বব্যাপী যোগাযোগ ব্যবস্থাকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করতে পারে। যে আকাঙ্ক্ষা মাত্র কয়েক মিনিটে এক মহাদেশ থেকে আরেক মহাদেশে ভ্রমণকে সম্ভব করে তুলবে।