হুতি বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে ইয়েমেনে বড় পরিসরে বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শনিবার (১৫ মার্চ) চালানো এই হামলায় অন্তত ২৪ জন নিহত হয়েছেন। লোহিত সাগরে হুতি বিদ্রোহীদের ধারাবাহিক হামলার জবাবে ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে এই সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরাসরি নির্দেশনায় এই হামলা চালানো হয়। ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর হুতিদের বিরুদ্ধে এটাই যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক অভিযান বলে জানা গেছে।
হুতি নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানী সানায় চালানো হামলায় নিহতদের মধ্যে ১৩ জনই বেসামরিক নাগরিক। আহত হয়েছেন আরো ৯ জন।
অন্যদিকে উত্তরাঞ্চলীয় সাদে প্রদেশে শিশু ও নারীসহ ১১ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে হুতিদের ঘনিষ্ঠ সংবাদমাধ্যম আল মারিশাহ টেলিভিশন। সেখানে আহতের সংখ্যা অন্তত ১৪ জন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ এক বার্তায় হুতিদের ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’ হিসেবে উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন,
“তোমাদের সময় শেষ। আজ থেকেই হামলা বন্ধ করো। না হলে এমন নরক নেমে আসবে, যা আগে কখনও দেখোনি।”
এই হামলার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যও রয়েছে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। কারণ ওয়াশিংটন বর্তমানে তেহরানের ওপর চাপ বাড়িয়ে ইরানকে পারমাণবিক আলোচনায় ফেরাতে চাইছে।
হুতিদের রাজনৈতিক ব্যুরো এক বিবৃতিতে এই বিমান হামলাকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ বলে অভিহিত করেছে। তাদের বক্তব্য, “আমাদের সশস্ত্র বাহিনী পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে। উসকানির জবাব যথাযথভাবে দেওয়া হবে।”
স্থানীয় বাসিন্দাদের আতঙ্কের কথাও উঠে এসেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে। সানার বাসিন্দা আব্দুল্লাহ ইয়াহিয়া বলেন,
“ভয়াবহ বিস্ফোরণে পুরো এলাকা কেঁপে উঠেছিল। মনে হচ্ছিল যেন ভূমিকম্প হচ্ছে। নারী ও শিশুরা আতঙ্কে চিৎকার শুরু করে।”
গত কয়েক সপ্তাহে হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা বাড়িয়ে দিয়েছে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতেই যুক্তরাষ্ট্র এ পদক্ষেপ নিয়েছে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় মধ্যপ্রাচ্যে আরো অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।