মিশর ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির একটি নতুন প্রস্তাব দিয়েছে। তবে এতে শর্ত ছিল, হামাসকে অস্ত্র জমা দিতে হবে। এই শর্ত মেনে নেয়নি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। আলজাজিরাকে দেওয়া এক বিবৃতিতে হামাসের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, মিশরের পক্ষ থেকে একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তাতে এমন কিছু শর্ত ছিল, যা তাদের কাছে অগ্রহণযোগ্য।
ওই কর্মকর্তা বলেন, প্রস্তাবে বলা হয় হামাস এবং অন্যান্য প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোকে অস্ত্র জমা দিতে হবে। মিশর জানিয়ে দেয়, নিরস্ত্রীকরণ ছাড়া ইসরাইলের সঙ্গে কোনো ধরনের সমঝোতা সম্ভব নয়। হামাসের প্রতিনিধি দল এই প্রস্তাবে বিস্মিত হয়। কারণ এতে স্পষ্টভাবে প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর অস্ত্র জমা দেওয়ার কথা বলা হয়।
হামাস শুরু থেকেই বলে আসছে, তাদের অস্ত্র কোনো আলোচনার বিষয় নয়। তারা মনে করে, যে কোনো চুক্তি হতে হবে গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসন বন্ধ এবং সেনা প্রত্যাহারের ভিত্তিতে। তাদের দাবি, ইসরাইল যদি গাজা থেকে পুরোপুরি সরে না যায়, তাহলে যুদ্ধ বন্ধ হবে না।
অন্যদিকে ইসরাইলের অবস্থানও পরিষ্কার। তারা বারবার বলে আসছে, যুদ্ধ থামাতে হলে হামাসকে পরাজিত করতে হবে। এর অর্থ হামাসকে অস্ত্র জমা দিতেই হবে। এই অবস্থানেই ইসরাইল এখনো অটল আছে।
দীর্ঘ ১৫ মাসের সামরিক অভিযান শেষে, আন্তর্জাতিক চাপ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইসরাইল গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছিল। কিন্তু এই শান্তি বেশিদিন টেকেনি। মার্চের মাঝামাঝি সময়ে ইসরাইল আবারও গাজায় বিমান হামলা শুরু করে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১৮ মার্চ থেকে শুরু হওয়া এই নতুন দফার হামলায় এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৫৭৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৪ হাজার ১১৫ জন। প্রতিদিন বাড়ছে হতাহত মানুষের সংখ্যা।
এই পরিস্থিতিতে মিশরের প্রস্তাব এবং ইসরাইলের হামলা নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে। যুদ্ধ থামার বদলে যেন আরও বিস্তৃত হচ্ছে। আর সবচেয়ে বেশি ভুগছে গাজার সাধারণ মানুষ। যাদের জীবন এখন প্রতিদিন মৃত্যুর মুখোমুখি।