ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের সাম্প্রতিক যুদ্ধ এবং তেল আবিবের ওপর ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দিকে বিশ্বের দৃষ্টি এখন কেন্দ্রীভূত হয়েছে। এই পরিস্থিতির মধ্যে গাজার কথা ভুলে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তবে গাজার দুর্দশা এবং ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গাজায় ফিলিস্তিনিদের জীবনযাত্রার পরিস্থিতি ক্রমাগত অবনতি হচ্ছে। সূত্র: মিডল ইস্ট আই
অঞ্চলটি একটি মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি, যেখানে খাদ্য, পানি এবং চিকিৎসা সেবার তীব্র সংকট চলছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গত ১২ মাসে গাজায় কমপক্ষে ৪৩,০০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক এবং প্রায় ১০০,০০০ জন আহত হয়েছে। এই সংঘাতের কারণে গাজার ৮৫ শতাংশ জনগণ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
ইসরায়েলি হামলায় গাজার অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে। হাসপাতাল, স্কুল এবং আবাসিক ভবনগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অঞ্চলটির ৩৬টি হাসপাতালের মধ্যে মাত্র ১১টি আংশিকভাবে কার্যকর রয়েছে।
ত্রাণ সরবরাহও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, কারণ ইসরায়েলি বাহিনী প্রায়শই ত্রাণবাহী ট্রাকগুলোকে প্রবেশে বাধা দেয়। এমনকি যখন ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়, তখনও নিরাপত্তার অভাবে বিতরণ ব্যাহত হয়। উদাহরণস্বরূপ, গত সপ্তাহে গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে যাওয়ার পথে ১২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের কারণে গাজার পরিস্থিতি আলোচনা থেকে সরে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তবে এই সংকটকে উপেক্ষা করা যায় না। গাজায় ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা এবং তাদের অধিকারের জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থন অব্যাহত রাখতে হবে।
এই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ইসরায়েলি দখলদারিত্বের অবসান এবং ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতার দাবি পূরণ করা অপরিহার্য। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই গাজার মানবিক সংকটের সমাধান এবং সেখানকার জনগণের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।