ইরান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইসরায়েলের সঙ্গে স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতির স্থায়িত্ব নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। তারা সতর্ক করে বলেছে, ইহুদি রাষ্ট্রের সঙ্গে পুনরায় সংঘাত শুরু হলে তারা প্রতিক্রিয়া জানাতে প্রস্তুত। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান জেনারেল আবদোলরাহিম মুসাভি বলেন, “আমরা যুদ্ধ শুরু করিনি, তবে আমরা আগ্রাসীর বিরুদ্ধে আমাদের সমস্ত শক্তি দিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি। আমাদের শত্রুর প্রতিশ্রুতি, বিশেষ করে যুদ্ধবিরতি পালনের ব্যাপারে গুরুতর সন্দেহ রয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, আবার আক্রান্ত হলে তারা “শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া” জানাবে। এই বক্তব্য যুদ্ধবিরতি ঘোষণার ছয় দিন পর, অর্থাৎ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কর্তৃক ঘোষিত যুদ্ধবিরতির পর দেওয়া হয়েছে।
১২ দিনের সংঘাতে ইরানের ৬২৭ জন বেসামরিক নাগরিক এবং ২৮ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছে বলে সরকারি সূত্রে জানা গেছে। এই সংঘাতের সবচেয়ে গুরুতর উত্তেজনা শুরু হয় ১৩ জুন, যখন ইসরায়েল ইরানের বিতর্কিত পারমাণবিক কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত শীর্ষ সামরিক কমান্ডার এবং বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য করে বোমা হামলা শুরু করে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাখচি বুধবার দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছেন যে, ইরান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনা পুনরায় শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তিনি জাতিসংঘে ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির সাঈদ ইরাভানির বক্তব্যের সমর্থন করে বলেন, ইরানে পারমাণবিক পরিদর্শকদের কোনো হুমকি নেই এবং তারা নিরাপদ অবস্থায় রয়েছে, তবে তাদের কাজ স্থগিত রাখা হয়েছে।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বৃহস্পতিবার তার প্রথম টেলিভিশন ভাষণে বলেন, ইরান কখনো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আত্মসমর্পণ করবে না এবং ভবিষ্যতে যেকোনো আগ্রাসনের জন্য “বড় মূল্য” দিতে হবে। তিনি দাবি করেন, ইরান কাতারে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে মিসাইল হামলার মাধ্যমে “আমেরিকার মুখে চপেটাঘাত” করেছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ২০১৯ সালে ঘুষ, জালিয়াতি এবং বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগে অভিযুক্ত হন। তাঁর আইনজীবীরা আদালতের কাছে অনুরোধ করেছেন যে, ইরানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি এবং গাজায় চলমান আক্রমণের কারণে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে মনোযোগ দেওয়ার জন্য তাঁকে আগামী দুই সপ্তাহের জন্য সাক্ষ্য দেওয়া থেকে অব্যাহতি দেওয়া হোক।
জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি (আইএইএ) সতর্ক করে বলেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েলের আক্রমণে ইরানের বেশ কয়েকটি পারমাণবিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও- ইরানের গোয়েন্দা সংস্থা ইসরায়েলের সঙ্গে সহযোগিতার অভিযোগে ২৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে, যা যুদ্ধবিরতি ঘোষণার কয়েকদিন পর ঘটেছে।