ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরব যাচ্ছেন? তাহলে আগে থেকেই ফিরতি টিকিট কেটে রাখুন—কারণ এখন থেকে সেটি ছাড়া বিমানে ওঠাই সম্ভব নয়।
সৌদি এয়ারলাইন্স ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, যাত্রার সময় চেক-ইন কাউন্টারে রিটার্ন টিকিট দেখানো বাধ্যতামূলক। টিকিট না থাকলে যাত্রীকে বোর্ডিং পাস দেওয়া হচ্ছে না। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্টরাই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দুবাইয়ের বাসিন্দা সাইয়্যেদ মিরান সম্প্রতি এমন এক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন। জেদ্দাগামী ফ্লাইট ধরতে গিয়ে তাকে থামিয়ে দেওয়া হয়—কারণ, তার হাতে কোনো ফিরতি টিকিট ছিল না।
“আমি ভেবেছিলাম মদিনায় কয়েক দিন থেকে ফেরার তারিখ পরে ঠিক করব,” বলেন মিরান। “কিন্তু চেক-ইনে তারা বোর্ডিং পাস দিতে অস্বীকৃতি জানায়। শেষ মুহূর্তে অনলাইনে টিকিট কিনে তবেই ফ্লাইট ধরতে পেরেছি।”
এখন থেকে ওমরাহ ভিসা, হজ ভিসা বা অন্য কোনো ধরনের ভিসা—সব ক্ষেত্রেই রিটার্ন টিকিট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
দুবাইভিত্তিক আসা ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের মালিক কায়সার মাহমুদের মতে, “এই নিয়মের মাধ্যমে সৌদি কর্তৃপক্ষ সহজেই বুঝতে পারে, একজন যাত্রী কতদিন থাকবেন এবং তিনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফিরছেন কি না। এতে কেউ অননুমোদিতভাবে অতিরিক্ত সময় অবস্থান করার সুযোগ পায় না।”
তিনি আরও জানান, এখন ট্রাভেল এজেন্টদেরও অনলাইনে যাত্রীর যাওয়া-আসার পুরো তথ্য আপলোড করতে হয়। যদি সিস্টেমে ফেরার তারিখ না থাকে, তাহলে চেক-ইন করা যায় না। ফলে, যাত্রীদের আগেভাগেই পরিকল্পনা করে টিকিট কাটা উচিত।
রিহান আল-জাজিরা ট্যুরিজমের কর্মকর্তা শিহাব পারওয়াদ বলেন, অনেকেই নুসুক অ্যাপ বা এয়ারলাইনের ওয়েবসাইটে কেবল একমুখী টিকিট কাটেন, পরে ফিরতি তারিখ ঠিক করার আশা রাখেন। “এখন আর তা সম্ভব নয়,” বলেন তিনি। “ওমরাহ ভিসা, হোটেল বুকিং—সব কিছু থাকলেও চেক-ইনে ফিরতি টিকিট দেখাতে হবে। এটি এখন বাধ্যতামূলক যাচাইয়ের অংশ।”
এই নিয়ম শুধু এয়ারলাইন বা কর্তৃপক্ষের জন্য নয়—যাত্রীদেরও উপকারে আসবে বলে মনে করছেন ট্রাভেল অপারেটররা। কারণ, এতে বিমানবন্দরে শেষ মুহূর্তের ঝামেলা, ইমিগ্রেশনে দেরি কিংবা বোর্ডিং সমস্যা—সবই অনেকটা কমে যাবে।
“যাত্রীরা এখন আগেভাগেই জানবেন তারা কবে ফিরছেন, এতে পুরো ভ্রমণটাই হয় ঝামেলামুক্ত,” বলেন শিহাব পারওয়াদ।
ওমরাহ যাত্রার পরিকল্পনা করার সময়ই যাওয়া ও ফেরার টিকিট একসঙ্গে বুক করে রাখা এখন সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। এতে শেষ মুহূর্তের মানসিক চাপ, সময়ের অপচয় এবং বিমানবন্দরের জটিলতা—সব কিছু থেকেই মুক্ত থাকা যাবে।

