গাজা উপত্যকায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফেরাতে গঠিত আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী বা আইএসএফে সেনা পাঠানোর বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে পাকিস্তান। ইসলামাবাদে সরকার ও সামরিক মহলে ইতোমধ্যেই আলোচনাগুলো চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে দেশটির নীতিনির্ধারক সূত্র।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক ডন-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিষয়টি নিয়ে শিগগিরই ইসলামাবাদের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “সরকার ও সামরিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আলোচনা এখন উন্নত পর্যায়ে। সব দিক বিবেচনায় মনে হচ্ছে, ইসলামাবাদ এই শান্তি মিশনে অংশ নিতে আগ্রহী।”
গাজায় যুদ্ধবিরতি টিকিয়ে রাখতে এবং দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গঠিত এই আইএসএফ বাহিনী মূলত মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর সেনাদের নিয়েই গঠিত হবে। ট্রাম্প প্রশাসনের ২০ দফা প্রস্তাবনার অংশ হিসেবে এই বাহিনী গাজায় অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা রক্ষা, হামাসকে নিরস্ত্র করা, সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং মানবিক সহায়তা ও পুনর্গঠনের কাজ তদারক করবে।
তবে যুক্তরাষ্ট্র নিজে এই বাহিনীতে সরাসরি সেনা পাঠাবে না বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটন। পরিবর্তে তারা ইন্দোনেশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিশর, কাতার, তুরস্ক ও আজারবাইজানের সঙ্গে আলোচনায় রয়েছে, যাতে এই দেশগুলো আন্তর্জাতিক মিশনে অংশ নেয়।
তবে ইসরাইলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিওন সার সোমবার বলেন, “এই বাহিনীতে তুরস্কের সেনারা থাকতে পারবে না।”
ইসলামাবাদের কর্মকর্তারা মনে করেন, পাকিস্তানের অংশগ্রহণ শুধু রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নয়, বরং একটি নৈতিক দায়বদ্ধতার অংশ। এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন,
“গাজার শান্তি স্থাপনে আমরা শুরু থেকেই সমর্থন দিয়ে আসছি। এখন সরে দাঁড়ানো মানে হবে সেই উদ্যোগকেই অস্বীকার করা, যেটি গঠনে আমরা নিজেরাই ভূমিকা রেখেছিলাম।”
তিনি আরও যোগ করেন, “এই পদক্ষেপের পেছনে শুধু কূটনৈতিক বাস্তবতা নয়, বরং একটি নৈতিক দায়িত্বও কাজ করছে। পাকিস্তান মনে করে, গাজায় স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় আন্তর্জাতিক ঐক্য এখন সময়ের দাবি।”

