আফগানিস্তানের সঙ্গে চলমান শান্তি আলোচনা ‘সম্পূর্ণ ব্যর্থ’ হয়েছে বলে জানিয়েছে, পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার। তুরস্কের ইস্তাম্বুলে গত কয়েক দিন ধরে দুই দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে যুদ্ধবিরতি স্থায়ী করার লক্ষ্যে বৈঠক চললেও কোনো কার্যকর সমাধান ছাড়াই আলোচনা শেষ হয়েছে।
আজ বুধবার এক বিবৃতিতে আতাউল্লাহ তারার বলেন, আফগান প্রতিনিধি দল বারবার মূল বিষয় থেকে সরে গিয়ে আলোচনাকে জটিল করেছে। তিনি অভিযোগ করেন, “কোনো দায়িত্ব নেওয়ার পরিবর্তে আফগান তালেবান শুধু অন্যকে দোষারোপ, এড়িয়ে যাওয়া এবং বিভ্রান্ত করার কৌশল অবলম্বন করেছে। ফলে এই আলোচনা কোনো ফলাফল আনতে পারেনি।”
এই ব্যর্থতা সীমান্তবর্তী অঞ্চলের জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে, বিশেষত এ মাসের শুরুতে প্রাণঘাতী সংঘর্ষে কয়েক শ মানুষের মৃত্যু ঘটার পর। ২০২১ সালে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ফেরার পর এটিই ছিল দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সীমান্ত সংঘাত।
গত ১৯ অক্টোবর কাতারের মধ্যস্থতায় পাকিস্তান ও আফগানিস্তান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। কিন্তু যুদ্ধবিরতির পরও সীমান্তে সংঘর্ষ ও প্রাণহানি অব্যাহত ছিল, এমনকি ইস্তাম্বুলে শান্তি আলোচনা চলাকালীন সময়েও নতুন সহিংসতার খবর এসেছে।
পাকিস্তানের নিরাপত্তা সূত্রগুলো জানায়, ইসলামাবাদ চায় তালেবান সরকার পাকিস্তান তালেবান (টিটিপি)সহ বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীকে নিয়ন্ত্রণে আনুক। তবে কাবুল এ দাবিতে সাড়া দেয়নি। আফগান প্রতিনিধিরা দাবি করেন, তালেবানের এসব গোষ্ঠীর ওপর “কোনো সরাসরি নিয়ন্ত্রণ নেই।”
এক আফগান সূত্র জানায়, আলোচনার সময় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। এরপরই আলোচনার টেবিল ভেঙে যায়। সূত্রটি আরও জানায়, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে টিটিপি পাকিস্তানি সেনাদের ওপর একাধিক হামলা চালিয়েছে, যা দুই দেশের সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত করেছে।
উল্লেখ্য, অক্টোবরের শুরুতে কাবুলে পাকিস্তানি বিমান হামলার জবাবে আফগান তালেবান সীমান্ত বরাবর পাকিস্তানের সেনাচৌকিতে পাল্টা হামলা চালায়। ২ হাজার ৬০০ কিলোমিটারজুড়ে চলা এসব সংঘাতে দুই দেশের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দেয়।
ইস্তাম্বুলের আলোচনায় কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় এখন দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক আরো জটিল হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

