ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের দৃঢ়তা তুলে ধরে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিয়ন সার বলেছেন, দুই দেশের সম্পর্ক এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে শক্তিশালী এবং ভারত বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এই মন্তব্য করেন।
গিডিয়ন সার বলেন, “আমরা ধারাবাহিকভাবে পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নত করছি। ভারতের বন্ধুত্বের জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।” তিনি আরো জানান, ভারত ও ইসরায়েল শিগগিরই প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষর করবে। প্রতিরক্ষা, কৃষি ও অর্থনৈতিক খাতে দুই দেশ অগ্রগতি অর্জন করেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ভারতের দ্রুত প্রতিক্রিয়া ও নিন্দা জানানোর ঘটনায় নয়াদিল্লির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন সার। তিনি বলেন, “আমরা কখনো ভুলব না, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ছিলেন সেই ভয়াবহ দিনের প্রথম বিশ্বনেতা, যিনি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে ফোন করেছিলেন। ভারত আমাদের পাশে ছিল, আমরা তা চিরকাল স্মরণ করব।”
ফিলিস্তিন ইস্যুতে দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের প্রশ্নে গিডিয়ন সার বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে এমন কোনো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়, যা ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। তার ভাষায়, “আমরা অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েছি এবং আর সেই ভুল করব না। ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনাই এখন সবচেয়ে বাস্তবসম্মত পথ।”
তিনি আরো বলেন, ইসরায়েলের প্রধান লক্ষ্য হলো হামাসের সামরিক সক্ষমতা ধ্বংস ও গাজার শাসনব্যবস্থা পরিবর্তন করা। “হামাস জনগণের মাঝে ভয় সৃষ্টির জন্য প্রতিপক্ষদের প্রকাশ্যে হত্যা করছে। আমরা এই সন্ত্রাসী শাসনের অবসান ঘটাতে চাই,” বলেন তিনি।
সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় ভারত ও ইসরায়েলের অভিজ্ঞতা একই রকম উল্লেখ করে গিডিয়ন সার বলেন, “ভারত লস্কর-ই-তৈয়বা’র মতো সংগঠনকে সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করেছে। আমরা গোয়েন্দা তথ্য, প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি। সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে আমাদের অভিজ্ঞতা ভারতের সঙ্গে ভাগ করতে প্রস্তুত।”
তিনি জানান, নতুন প্রতিরক্ষা ও গোয়েন্দা সহযোগিতা কাঠামো তৈরি হচ্ছে, যা দুই দেশের সম্পর্ককে বাস্তব কৌশলগত অংশীদারিত্বে পরিণত করবে। মোদি ও নেতানিয়াহুর সম্পর্ককে তিনি “উন্মুক্ত ও কৌশলগত” হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, “আমি আশা করি, তারা শিগগিরই সাক্ষাৎ করবেন। ভারত ভবিষ্যতের প্রতীক, আর ইসরায়েল আঞ্চলিক শক্তি— আমরা একসঙ্গে বড় কিছু করতে পারব।”
গিডিয়ন সার আরো জানান, আগামী বছর ভারতে আয়োজিত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্মেলনে ইসরায়েল একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল পাঠাবে।

