ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) তাদের অভিবাসন ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তনের পথে এগোচ্ছে। অবৈধভাবে ইউরোপে থাকা ব্যক্তিদের দ্রুত ফেরত পাঠানো এবং আশ্রয় আবেদন দ্রুত প্রত্যাখ্যানের লক্ষ্যে নতুন নিয়মের ওপর নিজেদের অবস্থান চূড়ান্ত করেছে ইইউ কাউন্সিল। আর এই নীতির কেন্দ্রেই রয়েছে একটি যৌথ ‘নিরাপদ দেশ’ তালিকা, যেখানে বাংলাদেশও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
ইইউ কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সদস্য রাষ্ট্রগুলো অবৈধভাবে থাকা ব্যক্তিদের দ্রুত পরিচয় শনাক্ত, বায়োমেট্রিক তেতথ্য সংগ্রহ এবং ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া সহজ করতে পারবে। ফেরত আদেশ অমান্য করলে কাজের অনুমতি বন্ধ হওয়া থেকে শুরু করে কারাবাস পর্যন্ত শাস্তি হতে পারে। নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকলে ১০ বছরের বেশি সময়ের জন্য ইউরোপে প্রবেশ নিষিদ্ধ করার ব্যবস্থাও থাকছে।
বাংলাদেশ, ভারত, মিশর, মরক্কো, কসোভোসহ বেশ কয়েকটি দেশকে নিরাপদ হিসেবে তালিকাভুক্ত করার ফলে এসব দেশের আশ্রয়প্রার্থীদের আবেদন দ্রুতই প্রাথমিক পর্যায়ে বাতিল করা যাবে। ফলে বাংলাদেশি আবেদনকারীদের আর আগের মতো দীর্ঘ সাক্ষাৎকার বা বিস্তারিত ব্যাখ্যার সুযোগ নাও মিলতে পারে।
আশ্রয় আইনজীবীদের মতে, এতে আন্তর্জাতিক সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার আরও সংকুচিত হবে। অনেকে বলছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও মতপ্রকাশের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশকে নিরাপদ ঘোষণা করা প্রশ্নবিদ্ধ।
ইইউ সদস্য রাষ্ট্রগুলো চাইলে তৃতীয় দেশের সঙ্গে চুক্তি করে ‘রিটার্ন হাব’ স্থাপন করতে পারবে, যেখানে ইউরোপে আশ্রয় প্রত্যাখ্যাত ব্যক্তিদের সাময়িকভাবে পাঠানো হবে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো আশঙ্কা করছে, এসব দেশে পাঠানো হলে আবেদনকারীরা বৈষম্য বা অনিরাপদ পরিস্থিতির মুখে পড়তে পারেন।
এই সিদ্ধান্ত এখনো ইইউ পার্লামেন্টে ভোটের অপেক্ষায়। অনুমোদন পেলে ২০২৬ সাল থেকে নিয়মগুলো কার্যকর হতে পারে। কার্যকর হলে ইউরোপের অভিবাসন ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন আসবে এবং বাংলাদেশি আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য পরিস্থিতি হবে আরও কঠিন ও অনিশ্চিত।
লন্ডনের ব্যারিস্টার সালাহ উদ্দিন সুমন এই সিদ্ধান্তকে “বাংলাদেশি অ্যাসাইলামপ্রত্যাশীদের জন্য বড় দুঃসংবাদ” বলে মন্তব্য করেছেন।

