তাইওয়ানের উত্তর-পূর্ব উপকূলীয় শহর ইয়িলান থেকে প্রায় ৩২ কিলোমিটার দূরে সাগরে ৭.০ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) দেশটির আবহাওয়া দফতর জানায়, ভূমিকম্পটির গভীরতা ছিল প্রায় ৭৩ কিলোমিটার। এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
আবহাওয়া দফতর জানায়, ভূমিকম্পের কম্পন তাইওয়ানজুড়ে অনুভূত হয়েছে। রাজধানী তাইপেতেও ভবনগুলো কেঁপে ওঠে। ভূমিকম্পটিকে মাঝারি মাত্রার হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে, যার ফলে বড় ধরনের ধস বা প্রাণহানির আশঙ্কা তুলনামূলকভাবে কম।
তাইপে সিটি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে বড় ধরনের ক্ষতির তথ্য মেলেনি। তবে কয়েকটি এলাকায় গ্যাস ও পানির লিকেজের ঘটনা ঘটেছে এবং কিছু ভবনে সামান্য ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।
তাইওয়ান পাওয়ার কোম্পানি জানায়, ইয়িলান অঞ্চলে অল্প সময়ের জন্য তিন হাজারের বেশি বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পরে ধীরে ধীরে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা হয়।
এদিকে, দেশের শীর্ষ চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টিএসএমসি জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পর উত্তরাঞ্চলের হসিনচু সায়েন্স পার্কে তাদের কয়েকটি স্থাপনায় সতর্কতামূলকভাবে কর্মীদের সরিয়ে নেওয়া হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরে তারা কাজে ফিরে যান।
আবহাওয়া প্রশাসন সতর্ক করে বলেছে, আগামী এক দিনের মধ্যে ৫.৫ থেকে ৬.০ মাত্রার আফটারশক হতে পারে। তবে ভূমিকম্পটি গভীরে এবং সাগরে সংঘটিত হওয়ায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা কম বলে মনে করা হচ্ছে।
তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে জনগণকে পরাঘাত বা আফটারশকের বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
উল্লেখ্য, দুটি টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলের কাছে অবস্থিত হওয়ায় তাইওয়ান ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা হিসেবে পরিচিত। ২০১৬ সালে দক্ষিণ তাইওয়ানে ভূমিকম্পে শতাধিক মানুষ নিহত হন। এর আগে ১৯৯৯ সালে ৭.৩ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে প্রাণ হারান দুই হাজারেরও বেশি মানুষ।

