নাইজেরিয়ায় সক্রিয় আন্তর্জাতিক ইসলামি জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস), দেশটির স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠী লাকুরাওয়া এবং বিভিন্ন ডাকাত গ্যাংয়ের অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান অভিযান চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। নাইজেরিয়ার সরকারের সম্মতিক্রমে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট বোলা তিনুবুর দপ্তর।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট তিনুবুর মুখপাত্র দানিয়েল বিওয়ালা জানান, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার এই বিমান অভিযান পরিচালনা করা হয়। তিনি বলেন, “আইএস, লাকুরাওয়া এবং বিভিন্ন ডাকাত গ্যাংয়ের ঘাঁটি লক্ষ্য করে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনী অভিযান চালিয়েছে। নাইজেরিয়া সরকার এই অভিযানের অনুমোদন দিয়েছে।”
বিওয়ালা আরো জানান, গোয়েন্দা সূত্রে পাওয়া তথ্যে জানা গিয়েছিল যে ইসলামিক স্টেটের সাহেল শাখার একাধিক সদস্য সম্প্রতি নাইজেরিয়ায় প্রবেশ করেছে। তারা স্থানীয় লাকুরাওয়া গোষ্ঠী এবং বিভিন্ন ডাকাত গ্যাংকে সামরিক প্রশিক্ষণ দিচ্ছিল। এই তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের পরই নাইজেরিয়া সরকার অভিযানের অনুমতি দেয় বলে জানান তিনি।
আফ্রিকার সাহেল অঞ্চল হলো সাহারা মরুভূমি ও দক্ষিণের আর্দ্র সাভানা অঞ্চলের মধ্যবর্তী বিস্তৃত আধা-শুষ্ক এলাকা। এই অঞ্চলটি আটলান্টিক মহাসাগর থেকে লোহিত সাগর পর্যন্ত বিস্তৃত এবং এর মধ্যে সেনেগাল, মালি, বুরকিনা ফাসো, নাইজার, চাদ ও সুদানসহ একাধিক দেশ অন্তর্ভুক্ত। সাহেল অঞ্চলে ইসলামিক স্টেটের সক্রিয় শাখাটি ‘ইসলামিক স্টেট সাহেল প্রভিন্স’ বা আইএসএসপি নামে পরিচিত।
নাইজেরিয়া ভৌগোলিকভাবে সাহেল অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত না হলেও দেশটির উত্তরাঞ্চলে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর তৎপরতা দীর্ঘদিনের সমস্যা। যদিও নাইজেরিয়ায় আইএস এখনো সাংগঠনিকভাবে শক্ত অবস্থানে পৌঁছাতে পারেনি, তবে প্রতিবেশী নাইজার, বুরকিনা ফাসো ও মালিতে গোষ্ঠীটি ব্যাপকভাবে সক্রিয় রয়েছে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, নাইজেরিয়ায় আইএসের সাহেল শাখার উপস্থিতি দেশটির জন্য নতুন উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠছে। এ প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় চালানো এই বিমান অভিযানকে জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর সম্প্রসারণ ঠেকাতে একটি প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

