Close Menu
Citizens VoiceCitizens Voice
    Facebook X (Twitter) Instagram YouTube LinkedIn WhatsApp Telegram
    Citizens VoiceCitizens Voice Sat, Jul 19, 2025
    • প্রথমপাতা
    • অর্থনীতি
    • বাংলাদেশ
    • আন্তর্জাতিক
    • আইন
    • অপরাধ
    • খেলা
    • প্রযুক্তি
    • বিনোদন
    • মতামত
    • সাহিত্য
    • ভিডিও
    Citizens VoiceCitizens Voice
    Home » কবি আবুল হোসেন আধুনিক বাংলা কবিতার এক অনন্য প্রতিভা
    সাহিত্য

    কবি আবুল হোসেন আধুনিক বাংলা কবিতার এক অনন্য প্রতিভা

    হাসিব উজ জামানOctober 20, 2024
    Facebook Twitter Email Telegram WhatsApp Copy Link
    Share
    Facebook Twitter LinkedIn Telegram WhatsApp Email Copy Link

    কবি আবুল হোসেন বিশ শতকের চল্লিশ দশকে আবির্ভূত হয়েছিলেন এক আধুনিক কবি হিসেবে। তিনি ছিলেন আধুনিক মনন ও নাগরিক বোধের ধারক। কবি হওয়ার জন্যই তাঁর জন্ম হয়েছিল। মুক্তির সন্ধানে তিনি খুঁজেছেন কবিতার গভীরে। যখন আবুল হোসেন কবিতা লিখতে শুরু করেন তখনও রবীন্দ্র-নজরুলের প্রভাব বলয় শেষ হয়ে যায়নি। এই সময়ের তিরিশের আধুনিক কবিরা রবীন্দ্র-নজরুলের প্রভাব অস্বীকার করেই তাদের কবিতার যাত্রা শুরু করেছিলেন। সমাজমনস্কতা থেকে কিছুটা দূরে গিয়ে তারা কাব্যচর্চায় আত্মনিয়োগ করেছিলেন। তবুও শেষ পর্যন্ত জীবনানন্দ দাশ, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত, অমিয় চক্রবর্তী ও বিষ্ণুর মতো কবিরা স্ব-সময়কে চিনতে বাধ্য হয়েছিলেন।

    চল্লিশের দশকটি ছিল যুদ্ধ, মন্বন্তর, দাঙ্গা এবং দেশবিভাগের কষ্টের কাল। এই সময়ে আবুল হোসেনও সময়ের প্রতিবিম্ব ধারণ করেছেন নিজের ভঙ্গিতে। কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘নব-বসন্ত’ ১৯৪০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কলকাতার বুলবুল হাউস থেকে প্রকাশিত হয়। বইটির প্রচ্ছদ এঁকেছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিল্পী রামকিংকর বেইজ। কবির বয়স তখন মাত্র আঠারো। ‘নব-বসন্ত’ এর দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয় ১৯৭৭ সালে, যখন ভারতীয় উপমহাদেশের মানচিত্রে তিনটি দেশের অস্তিত্ব দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাজনের পর আবুল হোসেন স্থায়ীভাবে ঢাকা বসবাস শুরু করেন ফলে দ্বিতীয় সংস্করণটি ঢাকা থেকেই প্রকাশিত হয়।

    কলকাতার সাহিত্যাঙ্গনে ‘নব-বসন্ত’ ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল। চল্লিশের দশকের কবিতায় জীবন, সমাজ, রাজনীতি ও দেশপ্রেমের যে প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছিল, তা আবুল হোসেনের কবিতায়ও প্রতিফলিত হয়েছে।

    কবিতা একটি বিশুদ্ধ ভাষানির্ভর শিল্প, যা আবুল হোসেনের কবিতায় স্পষ্ট। তিনি সহজ ও স্বাভাবিকতার পথে হাঁটেন। কবিতার প্রেরণার পাশাপাশি পরিকল্পনামূলক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে তিনি নিজের কাব্যপথ নির্মাণ করেছেন। আবেগী কল্পনাকে পাশ কাটিয়ে বিশ্লেষণাত্মক মনোভঙ্গি নিয়ে কবি আবুল হোসেন এক স্বতন্ত্র কণ্ঠস্বর নির্মাণ করেন। তবে প্রথম সংস্করণের ‘নব-বসন্তে’ তিনি নিজের ডিকশন পুরোপুরি আয়ত্তে আনতে পারেননি, যা কবি নিজেও স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন “নব-বসন্তে আমি আমার কথা পুরোপুরি গলা খুলে বলতে পারিনি। নিজের মনের কথা নিজের মতো করে বলতে আমার আরও তিন চার বছর লেগে যায়। ‘দিকনির্ণয়ে’ এসে আমি তার সন্ধান পাই।”

    ‘দিকনির্ণয়ে’ কবি একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেন। তিনি বলেন “পথটা সোজা না বাঁয়ে না ডাইনে জানিনে জানিনে জানতে চাইনে শুধু জানি এই সেটা নিজেকেই নিতে হবে চিনে যথাসময়ে।”

    এই চিনে নেওয়ার অঙ্গীকার থেকেই কবি তাঁর কাব্যপথের সন্ধান পেয়েছিলেন। ফলে বাংলা কবিতা পেল মনন ঋদ্ধ সহজিয়া ভঙ্গির এক নাগরিক বোধের কবিকে।

    আবুল হোসেনের দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘বিরস সংলাপে’ প্রকাশিত হয় ১৯৬৯ সালে যা তার কাব্যচর্চার এক নতুন মাত্রা যুক্ত করে। প্রথম বই প্রকাশের উনত্রিশ বছর পরে তাঁর নির্মাণদিক একান্ত নিজস্ব হয়ে ওঠে।

    আবুল হোসেন ছিলেন অনুচ্চ, ঋজু অথচ দৃঢ় স্বভাবের কবি। নিজস্ব পথ নির্মাণের চেষ্টায় তিনি সময়ের বৈরিতার বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। দেশভাগের পর তার সমসাময়িকরা যখন পাকিস্তান বন্দনায় মত্ত ছিলেন তিনি তখন স্বদেশের কাদামাটির সাথে নিজেদের বাঁধতে সক্ষম হন। কবি নিরাবেগ, নির্জন ও নিরলস সাধনায় নিজস্বভাবে কাজ করে গেছেন।

    কবিতার মেদ ঝরিয়ে, মজ্জাকে গুরুত্ব দিয়ে আবুল হোসেন গড়ে তুলেছেন ভিন্ন এক কণ্ঠস্বর। এই ভিন্নতা প্রকাশ পেয়েছে তার ভাষা ভঙ্গিতে, শব্দচালে, চিন্তাকে আবেগে রূপান্তরের কৌশলে, ছন্দনিরীক্ষা এবং আঙ্গিক গঠনে। তিনি দীর্ঘ কাব্য জীবনে এই অসাধ্য সাধন করেছেন, যার জন্য তার অপরিমেয় শ্রম এবং কৌশলী কাব্য ভাবনা ছিল সহায়ক। ক্রমাগত সংশোধন ও পরিমার্জনা তার কাব্যচর্চার একটি মূল বৈশিষ্ট্য।

    আবুল হোসেন ছিলেন একজন অনুভবী দ্রষ্টা ও অন্তরঙ্গতম কবি। তিনি কবিতার জগতকে একটি নিরাভরণ মানব ব্যক্তিত্বের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। কবির ভাষা ছিল প্রাঞ্জল ও অনাড়ম্বর, ছন্দের আলংকারিক মাধুর্যকে তিনি অস্বীকার করেননি। বরং ছন্দ নিরীক্ষায় দক্ষ কারিগর হয়ে উঠেছিলেন। অক্ষর বৃত্ত, মাত্রাবৃত্ত ও স্বরবৃত্তের পাশাপাশি তিনি মিশ্র ছন্দেও কবিতা রচনা করেছেন।

    আবুল হোসেন আবেগকে চিন্তায় রূপান্তর করার ক্ষেত্রে ছিলেন অত্যন্ত কৌশলী। তিনি আবেগের বাহুল্য কিংবা ভাবালুতাকে কঠোরভাবে বর্জন করেছেন। বিখ্যাত ঔপন্যাসিক রশীদ করিম তাকে ‘রুঠা ভাষার’ কবি বলেছেন যার আবেগ বাঘের মতো ডরায়।

    কবিতায় আবেগ ছাড়া কিছুই অসম্ভব কিন্তু আবুল হোসেন আবেগের সাথে যুক্ত করেছেন বুদ্ধির যৌক্তিকতা। কবি আবদুল মান্নান সৈয়দ বলেছিলেন “আবুল হোসেন মূলত বুদ্ধিবাদী কবি।” এর ফলে তার কবিতাগুলো ভাবালুতা থেকে মুক্ত থাকে।

    আবুল হোসেনের কবিতায় রাজনীতি, প্রেম, নারী ও নিসর্গের পাশাপাশি মানবিকতা ছিল প্রধান বিষয়। আজকের অস্থির বিশ্বে মানবিকতার জায়গা সংকুচিত হচ্ছে, তাই মানবতার পক্ষে লড়াই জারি রাখা জরুরি। আবুল হোসেনের কবিতায় সে লড়াইয়ের প্রতিচ্ছবি স্পষ্ট। কবি প্রচলিত ধর্মবিশ্বাস থেকে দূরে গিয়ে কবিতায় গভীর জীবন জিজ্ঞাসা ফুটিয়ে তুলেছেন। বিশেষ করে তার শেষের কবিতাগুলোতে জীবনবোধ ও জিজ্ঞাসা প্রবল হয়ে উঠেছে, যা রবীন্দ্রনাথের ‘শেষ লেখা’ কবিতার বইয়ের কথাও স্মরণ করিয়ে দেয়।

    ১৯২২ সালের ১৫ আগস্ট জন্মগ্রহণ করা আবুল হোসেন কবিতা লিখতে শুরু করেন ১৯৩৫ সাল থেকে। ২০১৪ সালের ২৯ জুন তিনি ইহলোকের মায়া ত্যাগ করেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কবির কলম ছিল সক্রিয়। বয়স তাকে কবিতার ভুবন থেকে সরাতে পারেনি। তাঁর অনুভবী কৌশল, প্রকরণ সচেতনতা, ছন্দ নিরীক্ষা এবং ভাষাকে আরও বেশি মুখের ভাষার কাছে নিয়ে আসার প্রচেষ্টা সারাজীবন জাগর ছিল। তিনি ক্লান্ত হননি বরং দিনে দিনে আরো শাণিত ও গভীরতামুখী হয়েছেন।

    কবি আবুল হোসেন তাঁর কাব্যচর্চার মাধ্যমে বাংলা কবিতাকে নতুন দিগন্তের পথে নিয়ে গেছেন, যা আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যতের কবিদের জন্য এক অনুপ্রেরণার উৎস।

    Share. Facebook Twitter LinkedIn Email Telegram WhatsApp Copy Link

    সম্পর্কিত সংবাদ

    মতামত

    কে হবেন জান্নাতি, কী বলেছে কোরআন?

    July 18, 2025
    সাহিত্য

    আশুরার দিন ঘিরে ঐতিহাসিক কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা

    July 6, 2025
    আন্তর্জাতিক

    ইরানে আশুরা: ধর্ম, সংস্কৃতি ও রাষ্ট্রীয় বার্তার সেতুবন্ধন

    July 5, 2025
    Leave A Reply Cancel Reply

    সর্বাধিক পঠিত

    সব ব্যবসায়ী ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপী নয়

    মতামত January 13, 2025

    বরিশালের উন্নয়ন বঞ্চনা: শিল্প, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য ও পর্যটন খাতে নেই অগ্রগতি

    মতামত April 22, 2025

    দেশের অর্থনৈতিক স্থবিরতা কি কেটে উঠা সম্ভব?

    অর্থনীতি May 29, 2025

    বাজেটের স্বাধীনতা: বিচার বিভাগের স্বাধীনতার অন্যতম নিয়ামক

    আইন আদালত June 1, 2025
    সংযুক্ত থাকুন
    • Facebook
    • Twitter
    • Instagram
    • YouTube
    • Telegram

    EMAIL US

    contact@citizensvoicebd.com

    FOLLOW US

    Facebook YouTube X (Twitter) LinkedIn
    • About Us
    • Contact Us
    • Privacy Policy
    • Comment Policy
    • About Us
    • Contact Us
    • Privacy Policy
    • Comment Policy

    WhatsAppp

    01339-517418

    Copyright © 2024 Citizens Voice All rights reserved

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.