ভারতের পুঁজিবাজারে আজ একটি বড় ধরনের পতন ঘটেছে। যা দেশের শেয়ারবাজারের দুর্বলতার প্রতিফলন হিসেবে দেখা দিয়েছে। সোমবার ২৮ জানুয়ারি, বোম্বাই স্টক এক্সচেঞ্জ (বিএসই) এবং ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ (এনএসই) এর সূচকগুলোতে বড় ধরনের পতন লক্ষ্য করা গেছে। বিএসই-তে তালিকাভুক্ত ৩৫১৯টি কোম্পানির মধ্যে প্রায় সবগুলোর শেয়ারের দাম কমে গেছে। যার মধ্যে ৪৯৪টি কোম্পানির শেয়ার গত এক বছরের সর্বনিম্ন দামে পৌঁছেছে। মাত্র ৫৯৭টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। এদিন ৭১০টি কোম্পানির শেয়ার সার্কিট ব্রেকারের নিম্ন সীমায় গিয়ে আটকে যায়, যা এই পতনের মাত্রা নির্দেশ করে।
বিএসই-তে সেনসেক্স সূচক ৮২৪.২৯ পয়েন্ট বা ১.০৮ শতাংশ কমে ৭৫ হাজার ৩৬৬ পয়েন্টে নেমে যায়। একই সময়ে এনএসই-র নিফটি সূচক ২৬৩ পয়েন্ট বা ১.১৪ শতাংশ কমে ২২ হাজার ৮২৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। নিফটি নেক্সট ফিফটি সূচক ২.৮২ শতাংশ এবং নিফটি ৫০০ সূচক ১.৯১ শতাংশ কমেছে। এই পতন পুরো বাজারের দুর্বলতা এবং সম্ভাব্য মন্দার ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আজকের পতনের পেছনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) উন্নয়ন ও চীনের এআই স্টার্টআপ ডিপসিক এআই-এর প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি প্রভাব ফেলেছে। যা ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) খাতের শেয়ারগুলোর ওপর বিশেষ প্রভাব ফেলেছে। লেমন মার্কেটসের বিশ্লেষক সতীশ চন্দ্র আলুরি বলেছেন, চীনের ডিপসিক এআই-এর আবির্ভাব বিশ্বব্যাপী আইটি খাতে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। যার ফলস্বরূপ ভারতীয় শেয়ারবাজারে আইটি কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে।
আজ বিশেষভাবে পতন ঘটেছে কয়েকটি বড় কোম্পানির শেয়ারের দামে। যেমন- এইচসিএল টেক ৪.৫৯ শতাংশ, টেক মাহিন্দ্রা ৪.১৮ শতাংশ, উইপ্রো ৩.৭৮ শতাংশ, হিন্দালকো ৩.৫৩ শতাংশ এবং শ্রীরাম ফাইন্যান্স ৩.২২ শতাংশ দর হারিয়েছে। অন্যদিকে কিছু কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়লেও তা তুলনামূলকভাবে সীমিত ছিল। ব্রিটানিয়ার শেয়ার ১.৫ শতাংশ, আইসিআইসিআই ব্যাংক ১.৩৩ শতাংশ, মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রা ১.০২ শতাংশ, হিন্দুস্তান ইউনিলিভার ০.৯৭ শতাংশ এবং এসবিআই ০.৪৫ শতাংশ বেড়েছে।
এই পতনের মাধ্যমে ভারতের শেয়ারবাজারের দুর্বলতা স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। বিশেষ করে প্রযুক্তি খাতে আইটি শেয়ারগুলোর প্রতি বিনিয়োগকারীদের সঙ্কোচ উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।

