দেশের পুঁজিবাজারে গত সপ্তাহে সূচকের সামান্য পতন লক্ষ্য করা গেছে। তবে এসময়ে দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের শেয়ারের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রবণতা দেখা গেছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স এক পয়েন্ট কমে ৫২০০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। যা আগের সপ্তাহে ছিল ৫২০১ পয়েন্ট। নির্বাচিত কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৯ পয়েন্ট বা ০.৪৮ শতাংশ কমে ১৯১০ পয়েন্টে নেমে এসেছে। আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ১৯১৯ পয়েন্ট। তবে শরিয়াহ সূচক (ডিএসইএস) ৭ পয়েন্ট বা ০.৬২ শতাংশ বেড়ে ১১৬৩ পয়েন্টে পৌঁছেছে। যা আগের সপ্তাহে ছিল ১১৫৬ পয়েন্ট।
বাজার মূলধনেও ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা গেছে। সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৬ লাখ ৮৯ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা। যা সপ্তাহ শেষে বেড়ে ৬ লাখ ৯৫ হাজার ১৯২ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন ৫৪ হাজার ৫১৬ কোটি টাকা বেড়েছে।
লেনদেনের পরিসংখ্যান বলছে, গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ২৩৫২ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের সপ্তাহের ২১০৭ কোটি টাকা লেনদেনের তুলনায় ২৪৫ কোটি টাকা বা ১১.৬০ শতাংশ বেশি। এছাড়া গড় লেনদেনও বেড়েছে-সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে গড় লেনদেন ছিল ৪৭০ কোটি টাকা। যা আগের সপ্তাহে ছিল ৪২১ কোটি টাকা।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে ৪১৩টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৫৯টির, কমেছে ২০৩টির, অপরিবর্তিত ছিল ৩৭টির, আর লেনদেন হয়নি ১৪টির।
খাতভিত্তিক লেনদেনে ওষুধ ও রসায়ন খাত শীর্ষে ছিল। যা মোট লেনদেনের ১৩.৯৭ শতাংশ দখল করেছে। এর পরেই রয়েছে বস্ত্র খাত (১২.৬৫ শতাংশ), ব্যাংক খাত (১১.৩৩ শতাংশ), খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত (১০.৬৭ শতাংশ) এবং প্রকৌশল খাত (৮.৩৯ শতাংশ)।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে ১১টি বাদে বাকি সব খাতের শেয়ারেই ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। এর মধ্যে জীবন বীমা খাতের শেয়ার সবচেয়ে বেশি ২.৪৯ শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন অর্জন করেছে। এরপর বস্ত্র খাতে ১.৭১ শতাংশ এবং প্রযুক্তি খাতে ১.৫২ শতাংশ রিটার্ন এসেছে। অন্যদিকে সিরামিকস খাতে সবচেয়ে বেশি ২.৪৪ শতাংশ নেতিবাচক রিটার্ন দেখা গেছে। এছাড়া আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে ১.৮৯ শতাংশ, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে ১.৬৬ শতাংশ এবং জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ১.৩৯ শতাংশ নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে।
গত সপ্তাহে পুঁজিবাজারের উত্থানে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক, গ্রামীণফোন, ইস্টার্ন ব্যাংক, সিটি ব্যাংক ও স্কয়ার ফার্মার শেয়ার।
এদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই গত সপ্তাহে ০.২২ শতাংশ কমে ১৪,৪৯৭ পয়েন্টে নেমে এসেছে। আগের সপ্তাহে যা ছিল ১৪৫২৯ পয়েন্ট। সিএসইতে পাঁচ কার্যদিবসে মোট ৩৪ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের সপ্তাহের ২৯ কোটি টাকার তুলনায় বেশি। আলোচ্য সপ্তাহে মোট ২৯৭টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। যার মধ্যে দর বেড়েছে ১১৯টির, কমেছে ১৫১টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২৭টির বাজারদর।
সর্বশেষ পরিস্থিতি বিশ্লেষণে বলা যায়, সামগ্রিকভাবে দেশের পুঁজিবাজারে মিশ্র প্রবণতা দেখা গেলেও বাজার মূলধন ও গড় লেনদেনের পরিমাণ বৃদ্ধির ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা ইতিবাচক সাড়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

