ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উদ্ভূত সামরিক উত্তেজনার সরাসরি প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে। ৭ মে বুধবার লেনদেন শুরুর পরপরই বড় ধরনের ধস নামে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই)। মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৭০ পয়েন্টেরও বেশি হারায় যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগের সৃষ্টি করে।
ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, লেনদেনের শুরুর প্রথম পাঁচ মিনিটেই ডিএসইএক্স সূচক ৫০ পয়েন্টের বেশি পড়ে যায়। ১০ মিনিট পেরোতে না পেরোতেই সূচকের পতন ঘটে ৭০ দশমিক ৯৭ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। একই সময়ে ডিএসইএস সূচক কমেছে ১৭ দশমিক ৫৮ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং ডিএস৩০ সূচক কমেছে ২০ দশমিক ৯১ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ১৪ শতাংশ।
বাজারের লেনদেন তালিকায় এদিন শীর্ষে ছিল বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার লিমিটেড। এরপর অবস্থান নেয় এনআরবি ব্যাংক ও বিচ হ্যাচারি লিমিটেড। তবে সামগ্রিক বাজার পরিস্থিতি ছিল বেশ হতাশাজনক। লেনদেন শুরুর মুহূর্তেই দেখা যায়, মাত্র ৯টি কোম্পানির শেয়ারের দর বেড়েছে বিপরীতে দর কমেছে ৩৩৪টির। অপরিবর্তিত রয়েছে ১৪টি কোম্পানির শেয়ারদর।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভারত–পাকিস্তান সীমান্তে যুদ্ধ পরিস্থিতির আশঙ্কা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ভয় ও অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। এই অঞ্চলে যেকোনো সামরিক সংঘাত শুধু রাজনৈতিক বা কূটনৈতিক ক্ষেত্রেই নয়, অর্থনীতিতেও গভীর প্রভাব ফেলে। তারা বলছেন, আঞ্চলিক অস্থিরতা বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে তোলে যার তাৎক্ষণিক প্রতিফলন ঘটে পুঁজিবাজারে।
বিশেষজ্ঞরা বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে সতর্কতার সঙ্গে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পরামর্শ দিয়েছেন। তারা বলেছেন, যতদিন না ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা প্রশমিত হচ্ছে ততদিন বাজারে অস্থিরতা অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের আবেগপ্রবণ সিদ্ধান্ত না নিয়ে ধৈর্য ধরে বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এগোনোর পরামর্শও দিয়েছেন তারা।
এই প্রেক্ষাপটে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সংকট দেখা দিয়েছে যা থেকে উত্তরণে প্রয়োজন স্থিতিশীল ভৌগোলিক ও অর্থনৈতিক পরিবেশ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বাজারের এ ধরণের আচরণ অব্যাহত থাকতে পারে বলেও ধারণা বিশ্লেষকদের।

