তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে কর ব্যবধান মাত্র ৫ শতাংশ হলে কোনো কোম্পানিই পুঁজিবাজারে আসবে না—এমন মন্তব্য করেছেন এপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর।
তিনি বলেন, “যারা কোম্পানি তৈরি করেন বা স্পন্সর করেন, তারা যদি ঠিকভাবে ভ্যালুয়েশন না পান, তাহলে বাজারে আসবেন না। কর ব্যবধান যদি ২০ শতাংশ হয়, তাহলে এটা কার্যকর হবে। এমনকি ১৫ শতাংশ হলেও কাজ করবে। কিন্তু মাত্র ৫ শতাংশ ব্যবধান রাখলে কেউ আসবে না। এমন পরিস্থিতিতে পৃথিবীর কোথাও কোম্পানিগুলো বাজারমুখী হয় না। এটা বাস্তবতা।”
গতকাল বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) আয়োজিত ‘পুঁজিবাজারের সম্প্রসারণ: টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কাঠামো’ শীর্ষক আলোচনাসভায় তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। তিনি বলেন, “মূল প্রবন্ধে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে পুঁজিবাজারের সম্পর্ক তুলে ধরা হয়েছে। তবে অতীতে জিডিপির তথ্য ছিল ত্রুটিপূর্ণ। দেশের ব্যাংক খাত এখন সংকটে। এই পরিস্থিতিতে পুঁজিবাজার ভালো করবে—এমন প্রত্যাশা অযৌক্তিক। সরকার পুঁজিবাজারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। তবে উন্নয়নের জন্য নীতির সমন্বয় দরকার, যা এখনও গড়ে ওঠেনি। বাংলাদেশ ব্যাংক, বিএসইসি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সঙ্গে বৈঠক চলছে। সামনে এর সুফল দেখা যাবে।”
বিএমবিএ সভাপতি মাজেদা খাতুনের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন—ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম, চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিরঞ্জন চন্দ্র দেবনাথ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সাঈদ কুতুব, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক উজমা চৌধুরী এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক ইস্তেকমাল হোসেন।
ডিএসই চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, “গত এক বছরে কোনো আইপিও আসেনি। অথচ এটি আনার দায়িত্ব বিএসইসির নয়, মার্চেন্ট ব্যাংকারদের। দেশে ৬৬টি মার্চেন্ট ব্যাংক রয়েছে, কিন্তু গত ১৫ বছরে তারা মাত্র ১৩৮টি কোম্পানিকে বাজারে এনেছে। এমন পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন তোলা স্বাভাবিক।”
সভায় প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক উজমা চৌধুরী বলেন, “মুসলিমপ্রধান দেশ হিসেবে শরিয়াহভিত্তিক আর্থিক পণ্যের যেমন সুকুকের চাহিদা রয়েছে, সেগুলো আরও বেশি করে বাজারে আনতে হবে।”