গত সপ্তাহে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তিন দিন বাজার ঊর্ধ্বমুখী ছিল। তবু সপ্তাহজুড়ে সূচক, লেনদেন ও বাজার মূলধন সব ক্ষেত্রেই পতন হয়েছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৪১৫ পয়েন্টে। আগের সপ্তাহ শেষে অবস্থান ছিল ৫ হাজার ৪৫০ পয়েন্টে। বাছাই করা ৩০ কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ ৪ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১০৩ পয়েন্টে নেমেছে। শরীয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস কমেছে ৭ পয়েন্ট, যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৭১ পয়েন্টে।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে ৩৯৫টি শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আরও ১৮টির কোনো লেনদেন হয়নি। লেনদেন হওয়া সিকিউরিটিজের মধ্যে দাম বেড়েছে ১৩৯টির, কমেছে ২১৯টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৩৭টির। লেনদেনে বড় ধরনের পতন দেখা গেছে। আলোচিত সপ্তাহে ডিএসইতে দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ৫৮৩ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। এর আগের সপ্তাহে গড় লেনদেন ছিল ৭০১ কোটি ৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ১১৭ কোটি ৩ লাখ টাকা বা ১৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ। আগের সপ্তাহে কমেছিল আরও বেশি, প্রায় ৩৯ শতাংশ।
সপ্তাহজুড়ে মোট লেনদেন দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৯১৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকায়। আগের সপ্তাহে এ পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৫০৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। এক সপ্তাহে কমেছে ৫৮৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। লেনদেনে খাতভিত্তিক অবদানে শীর্ষে ছিল বস্ত্র খাত। প্রতিদিন গড়ে এ খাত থেকে লেনদেন হয়েছে ৯০ কোটি ২৪ লাখ টাকা। দ্বিতীয় স্থানে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাত, প্রতিদিন গড়ে ৮৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। তৃতীয় স্থানে ব্যাংক খাত, যেখানে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ৬২ কোটি ৩৭ লাখ টাকার। এছাড়া প্রকৌশল খাতে প্রতিদিন গড়ে ৪৭ কোটি ৪৬ লাখ টাকা এবং বিবিধ খাতে ৪১ কোটি ২০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। বাজার মূলধনেও পতন হয়েছে। সপ্তাহ শেষে ডিএসইর সব সিকিউরিটিজের বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ২৩ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা। আগের সপ্তাহে ছিল ৭ লাখ ২৪ হাজার ৪৬৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ কমেছে ১ হাজার ১৮ কোটি টাকা।
এদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গত সপ্তাহেও সূচক ও অধিকাংশ শেয়ারের দরপতন হয়েছে। তবে লেনদেন বেড়েছে। সপ্তাহ শেষে সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ১ দশমিক ৬২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৮৯ পয়েন্টে। সিএসসিএক্স সূচক ১ দশমিক ৫০ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ২৭৮ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসআই সূচক কমেছে ১ দশমিক ২৬ শতাংশ, সিএসই-৩০ সূচক ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ এবং সিএসই-৫০ সূচক ১ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
তবে লেনদেনে সিএসইতে উল্টো প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। সপ্তাহে মোট লেনদেন হয়েছে ৮০ কোটি ৩ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে ছিল ৬৭ কোটি ৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ বেড়েছে প্রায় ১৩ কোটি টাকা। সাপ্তাহিক লেনদেনে অংশ নেয় ৩১৫টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিট। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৭৬টির, কমেছে ২১৫টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২৪টির।