নভেম্বর মাসে দেশে মূল্যস্ফীতি আবার বেড়েছে। অক্টোবরের তুলনায় সামান্য বৃদ্ধি পেয়ে এ মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ। অক্টোবর মাসে এ হার ছিল ৮ দশমিক ১৭ শতাংশ।
আজ রোববার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) নভেম্বরের মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করে। কয়েক মাস ধরে মূল্যস্ফীতি ওঠানামা করছে। তবে হার ৮ শতাংশের আশপাশেই ঘোরাফেরা করছে। বিবিএসের হিসাব অনুযায়ী, গত নভেম্বর মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ। খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ০৮ শতাংশ। টানা দুই মাস ধরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশে টানা তিন বছর ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতি চাপ বাড়িয়ে রেখেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি দাঁড়ায় ১০ দশমিক ০৩ শতাংশ।
মূল্যস্ফীতি এক ধরনের পরোক্ষ করের মতো। মাসিক আয় বাড়েনি, কিন্তু বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়লে সাধারণ মানুষকে খরচ সামলাতে ধারদেনা করতে হয় বা বিভিন্ন খাতে কাটছাঁট করতে হয়। আয়–বৃদ্ধির চেয়ে মূল্যস্ফীতি বেশি থাকলে প্রকৃত আয় কমে যায়, কষ্ট বাড়ে।
বিবিএস জানায়, গত নভেম্বর মাসে জাতীয় মজুরি বৃদ্ধির হার ছিল ৮ দশমিক ০৪ শতাংশ। অর্থাৎ মজুরি বৃদ্ধি মূল্যস্ফীতির চেয়ে কম হওয়ায় বাস্তবে মানুষের হাতে থাকা আয় কমে গেছে। মূল্যস্ফীতির হার কমে যাওয়ার অর্থ জিনিসপত্রের দাম কমে যাওয়া নয়। বরং আগের তুলনায় দাম বৃদ্ধির গতি কিছুটা ধীর হয়েছে—এটা বোঝায়।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে কোনো ব্যক্তি যদি পণ্য ও সেবা কিনতে ১০০ টাকা খরচ করে থাকেন, এ বছরের নভেম্বর মাসে মূল্যস্ফীতি ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ হওয়ায় ২০২৫ সালের নভেম্বর মাসে একই পণ্য ও সেবা কিনতে তাঁর খরচ হয়েছে ১০৮ টাকা ২৯ পয়সা। অর্থাৎ প্রতি ১০০ টাকায় ব্যয় বেড়েছে ৮ টাকা ২৯ পয়সা।
গত দুই–তিন বছর ধরে অর্থনীতির বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে আছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি কমানোর চেষ্টা করেছে। একই সঙ্গে এনবিআর তেল, আলু, পেঁয়াজ, ডিমসহ বেশ কিছু নিত্যপণ্যে শুল্ক ও কর কমিয়েছে। বাজারে আমদানির প্রবাহ ঠিক রাখতেও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

