শিল্পকলা একাডেমিতে শনিবার সন্ধ্যায় দেশ নাটকের প্রযোজনা “নিত্যপূরাণ” এর মঞ্চায়ন চলাকালীন একদল বিক্ষোভকারীর বাধার মুখে নাটকটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
নাটক মঞ্চস্থ হওয়ার সময় একাডেমির মূল ফটকের বাইরে প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন বিক্ষোভকারী দেশ নাটকের এক সদস্যের বিরুদ্ধে স্লোগান তুলে নাটকটি বন্ধের দাবি জানান।
তাদের অভিযোগ- ওই ব্যক্তি দেশের বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের সঙ্গে কাজ করেছেন এবং তার উপস্থিতিতে নাটক মঞ্চস্থ হওয়া অনুচিত।
দেশ নাটকের মুখ্য পরিষদের প্রধান মাসুম রেজা জানান- জাতীয় নাট্যশালায় “নিত্যপূরাণ” মঞ্চায়নের সময়ে মূল ফটকের বাইরে বিক্ষোভ শুরু হয়। স্লোগান দিতে থাকা ব্যক্তিরা নাটক বন্ধের আহ্বান জানান এবং এক পর্যায়ে তারা নাটক বন্ধ করতে বাধ্য হন।
তিনি আরো বলেন- প্রথমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা হলেও নাটক চলাকালীন পুনরায় বিক্ষোভ শুরু হয় এবং কেউ কেউ দেয়াল টপকে ভিতরে প্রবেশেরও চেষ্টা করেন। ফলে তাদের পক্ষে নাটকটি চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি।
শিল্পকলা একাডেমির জনসংযোগ কর্মকর্তা সাবিনা পুঁথি প্রথম আলোকে জানান- নাটক মঞ্চায়ন ও বিক্ষোভের ঘটনা একাডেমিতে ঘটলেও একাডেমির সঙ্গে সরাসরি কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। একাডেমি নিয়মিত বিভিন্ন নাট্যদলকে মঞ্চ ভাড়া দিয়ে থাকে এবং দেশ নাটকও সে হিসাবেই মঞ্চ পেয়েছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, শনিবার সন্ধ্যায় দেশ নাটকের নাটক মঞ্চায়নের খবর পেয়ে বিক্ষোভকারীরা শিল্পকলার সামনে ব্যানার হাতে এসে জমায়েত হয়।
তারা দেশ নাটকের অধিকর্তা এহসান আজিজ বাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে যে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশবিরোধী মন্তব্য, ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট দিয়েছেন।
বিক্ষোভকারীরা তাকে “রাজাকার” আখ্যা দিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে নাটকের দল থেকে বহিষ্কার ও বিচারের আওতায় আনার দাবি তোলে। তারা আরও হুঁশিয়ারি দেয়, ভবিষ্যতে এই ধরনের নাট্যদলকে একাডেমির মঞ্চ বরাদ্দ না দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে সচেতন হতে হবে।
বিক্ষোভের চাপে নাটকের দলটি বাধ্য হয়ে “নিত্যপূরাণ” মঞ্চায়ন স্থগিত করে এবং বিক্ষোভকারীরা জাতীয় নাট্যশালার ফটকের সামনে তাদের প্রতিবাদী ব্যানার ঝুলিয়ে দিয়ে অবস্থান নেয়।