ভারতীয় হাইকমিশনের ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের (আইজিসিসি) আয়োজনে ঢাকায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হলো কবি কাজী নজরুল ইসলামের শ্যামাসংগীতের বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ঢাকার ভারতীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটি নজরুলের সৃষ্টির প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি বাংলাদেশ ও ভারতের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করার একটি সুন্দর উদ্যোগ হিসেবে গণ্য হয়।
এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। তার উপস্থিতি ও বক্তব্যে এই আয়োজনটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা তার বক্তব্যে বলেন, “কবি নজরুলের সৃষ্টিকর্ম আমাদের ভারত-বাংলাদেশের একটি অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক। এটি দুই দেশের জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধন গড়ে তোলে, যা আমাদের ঐক্য ও সম্পর্কের ভিত্তিকে আরও শক্তিশালী করে।” তার ভাষণে ফুটে ওঠে নজরুলের মতো প্রতিভাবান শিল্পীর কাজ দুই দেশের সংস্কৃতিতে কতটা গুরুত্ব বহন করে।
এই বিশেষ সন্ধ্যায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিরা। অনুষ্ঠানে নজরুলের কবিতা আবৃত্তি করেন প্রখ্যাত আবৃত্তিকার টিটো মুন্সী, যার আবৃত্তিতে শ্রোতারা নজরুলের কবিতার আধ্যাত্মিক এবং মানবিক দিকটি অনুভব করেন। পাশাপাশি নজরুলের শ্যামাসংগীত পরিবেশন করেন বিখ্যাত কণ্ঠশিল্পী মৃদুলা সমাদ্দার ও বিজন চন্দ্র মিস্ত্রি। তাদের সুরের মাধুর্যে ভরপুর এই পরিবেশনা উপস্থিত দর্শক-শ্রোতাদের হৃদয়ে এক গভীর অনুভূতির সঞ্চার করে।
এই সাংস্কৃতিক আয়োজনটি নজরুলের গানের প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যম হিসেবে আয়োজিত হলেও এর তাৎপর্য আরও ব্যাপক। এই ধরনের আয়োজন বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্কের বন্ধনকে আরও দৃঢ় করার মাধ্যমে কেবল সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেই নয় বরং মানুষের আবেগ ও ইতিহাসের সঙ্গে সংযোগ ঘটায়। ভারতের হাইকমিশনারের উপস্থিতি ও বক্তব্যের মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্কের গুরুত্ব আরও স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয় ঢাকার ভারতীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে, যা দুই দেশের সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং অংশীদারিত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। এই ধরনের আয়োজন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটির গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে তোলে এবং দুই দেশের সম্পর্কের মূল ভিত্তিকে আরও মজবুত করে।
বাংলাদেশ-ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করতে এবং সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের উদ্দেশ্যে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটি একদিকে নজরুলের প্রতি শ্রদ্ধা, অন্যদিকে দুই দেশের ঐতিহ্যবাহী সম্প্রীতির উদাহরণ হিসেবে দাঁড়িয়েছে।