বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের দুর্গম মুরুংঝিরি এলাকা থেকে অপহৃত ২৬ জন রবারবাগানের শ্রমিককে এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
আজ সোমবার দুপুর পর্যন্ত তাঁদের সন্ধান মেলেনি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। গতকাল রোববার সকালে শ্রমিকদের অপহরণ করা হয়।
রবারবাগানের মালিকেরা জানিয়েছেন, অপহরণকারীরা মুক্তিপণ হিসেবে প্রতি শ্রমিকের জন্য ৫০ হাজার টাকা দাবি করেছেন। আজ সকালেও তাঁরা মুক্তিপণের দাবিতে একাধিকবার ফোন করেছেন এবং শ্রমিকদের ক্ষতির হুমকি দিয়েছেন। অপহরণকারীরা মূলত শ্রমিকদের মুঠোফোন নম্বর থেকেই কল করছেন বলে জানা গেছে।
অপহৃত শ্রমিকদের উদ্ধারে যৌথ বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সেনাবাহিনী ও পুলিশের সদস্যরা মুরুংঝিরির দুর্গম এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছেন। লামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাৎ হোসেন জানিয়েছেন, সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা সবাই পাহাড়ি এবং তাঁদের গ্রেপ্তার ও শ্রমিকদের উদ্ধার করতে যৌথ বাহিনী তৎপর রয়েছে। যেকোনো মুহূর্তে অভিযান সফল হতে পারে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লামা, নাইক্ষ্যংছড়ি ও আলীকদম উপজেলার সীমানায় অবস্থিত মুরুংঝিরি এলাকা অত্যন্ত দুর্গম এবং সেখানে মোবাইল নেটওয়ার্ক কার্যকর না থাকায় সহজে যোগাযোগ করা সম্ভব নয়। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মংম্যাগ্য মারমা জানান, এই প্রতিকূল পরিবেশের সুযোগ নিয়েই অপহরণকারীরা নির্বিঘ্নে তাঁদের অপতৎপরতা চালাচ্ছে।
এদিকে, কয়েক মাস আগেও একই এলাকায় সন্ত্রাসীরা চাঁদা দাবি করেছিল বলে জানিয়েছেন এক রবারবাগান মালিক। তখন মালিকপক্ষ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করলেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাকের হোসেন মজুমদার জানিয়েছেন, এই সন্ত্রাসীরা পাহাড়ি গোষ্ঠীর সদস্য এবং দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজির সঙ্গে যুক্ত।
এলাকাবাসীরা জানান, লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নে বেশ কিছুদিন ধরে একটি সশস্ত্র দল চাঁদাবাজি করে আসছে। সম্প্রতি স্থানীয় বাসিন্দারা ক্যাজুপাড়া বাজার থেকে ওই চক্রের এক সদস্যকে অস্ত্রসহ আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। আটক ব্যক্তি স্বীকারোক্তিতে জানান, গত ১৫ জানুয়ারি সাতজন শ্রমিক এবং এর আগে আরও তিনজন তামাকখেতের শ্রমিক অপহরণের ঘটনায় তিনি জড়িত ছিলেন।
অপহৃত শ্রমিকদের উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।