রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত এক জনশুনানি সভায় দুর্নীতি দমনের গুরুত্ব তুলে ধরে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সভাপতি দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আগামী দিনের যে কোনো সমস্যা দূরীকরণের জন্য প্রথমেই দুর্নীতি দূর করতে হবে। তিনি জানান, দুর্নীতি দূর করা না গেলে দেশের বেশিরভাগ সম্ভাবনাময় কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে। এ জন্য প্রয়োজন পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা এবং দেশে যারা দুর্নীতি করেছেন, তাঁদের আইনের আওতায় আনা। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এ বিষয়ে দৃঢ়তা দেখিয়ে বলেন, দুর্নীতিবাজদের দৃশ্যমান শাস্তি প্রদান করতে হবে। তাঁর মতে, এমন শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে যাতে ভবিষ্যতে কেউ দুর্নীতি করার আগে সাতবার ভাবতে বাধ্য হয়।
সভায় দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বর্তমান সমাজে মূল্যবোধভিত্তিক সৃজনশীলতার উদ্যোগ তৈরি করতে হবে। তিনি জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির ওপরও গুরুত্ব আরোপ করেন।
জানানো হয়, এ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ২৪০ জন প্রতিনিধি অংশ নেন। তাঁদের মধ্যে ১২৫ জন জনশুনানির আলোচনায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির অন্যান্য সদস্যরা বক্তব্য দেন। বক্তাদের মধ্যে ছিলেন অধ্যাপক এ কে এনামুল হক, ঢাবির অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রায়হান, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, জাবির অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্মি এবং গবেষণা সংস্থা সিপিডির জ্যেষ্ঠ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।
বক্তারা বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন, এর মধ্যে দুর্নীতি দূরীকরণ, বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতা, রাজশাহীতে কৃষিভিত্তিক শিল্পায়ন গড়ে তোলা, গ্যাস সংযোগ প্রদান, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম কমানোসহ নানাবিধ সমস্যা তুলে ধরা হয়। বক্তারা যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং টেকসই রাষ্ট্রব্যবস্থা গঠনের জন্য নির্বাহী বিভাগগুলোতে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের আহ্বান জানান।
স্থানীয় নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা রাজশাহী নগরীসহ এ অঞ্চলের অপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন প্রকল্পের দুর্নীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও প্রশাসনে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উপস্থাপন করেন। তারা উন্নয়নের ক্ষেত্রে সামাজিক এবং আঞ্চলিক বৈষম্য দূরীকরণ এবং বেকারত্ব সমস্যা সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
জনশুনানি সভাটি স্থানীয় জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি ও দুর্নীতি দমনে এক নতুন উদ্যোগের সূচনা হিসেবে কাজ করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।