সরকারের ঋণচাহিদা কমে যাওয়ায় ট্রেজারি বন্ডের সুদহার টানা কমছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক নিলামে ১৫ ও ২০ বছর মেয়াদি বন্ডের সুদ ১০ শতাংশের নিচে নেমেছে। এর আগের সপ্তাহে ১০ বছর মেয়াদি বন্ডের হারও একইভাবে কমে যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত সপ্তাহের নিলামে ১৫ বছর মেয়াদি বন্ডের সুদহার দাঁড়ায় ৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এদিন ১ হাজার কোটি টাকার বন্ড বিক্রি হয়। একই নিলামে ২০ বছর মেয়াদি বন্ডের সুদ কমে দাঁড়ায় ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ, বিক্রি হয় আরও ১ হাজার কোটি টাকা। অথচ এক সপ্তাহ আগেই ১৫ বছর মেয়াদি বন্ডের সুদহার ছিল ১০ দশমিক ২৮ শতাংশ আর ২০ বছর মেয়াদির হার ছিল ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ। এরও আগে অনুষ্ঠিত নিলামে ১০ বছর মেয়াদি বন্ডের সুদ ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশে নেমে আসে। ওইদিন ২ হাজার কোটি টাকার বেশি বন্ড বিক্রি হয়েছিল।
ব্যাংক খাতের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারে তারল্য বেড়ে যাওয়াই এর প্রধান কারণ। ডলারের বাজার স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার কিনছে। পাশাপাশি সরকারের ঋণ নেওয়ার পরিমাণও কমেছে। সব মিলিয়ে ট্রেজারি বন্ডের সুদহার কমছে। তাদের ধারণা, সামনে অন্যান্য ট্রেজারি বিল ও বন্ডের সুদও কমতে পারে।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে মোট ঋণ নেওয়া হয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৩৬৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংক থেকে নেওয়া হয়েছে ৭৭ হাজার ১০৬ কোটি টাকা এবং ব্যাংক-বহির্ভূত উৎস থেকে ৪২ হাজার ২৫৯ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ব্যাংক খাত থেকে সরকারের ঋণ নেওয়া কম হয়েছে ২২ দশমিক ১০ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তুলনাতেও ঋণ কমেছে। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ব্যাংক খাত থেকেই নেয়া হবে ১ লাখ ৪ হাজার কোটি টাকা।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, অর্থবছরের শুরুর দিকে সরকারের ব্যয়ের চাপ কম থাকে। উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় মূলত দ্বিতীয় প্রান্তিকের পর বাড়ে। অন্যদিকে রাজস্ব আয় দিয়ে পরিচালন ব্যয় মেটানো সম্ভব হয়। তাই বছরের শুরুতে সরকারের ঋণচাহিদা স্বাভাবিকভাবেই কম থাকে।

