ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি দেশের প্রথম শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক। ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠান বর্তমানে ইসলামী ব্যাংকিং খাতে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। সুদবিহীন লেনদেন ও লাভ-লোকসানের ভাগাভাগির নীতিতে পরিচালিত হওয়ায় ব্যাংকটি শুরু থেকেই আলাদা অবস্থান তৈরি করেছে। বর্তমানে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মো. ওমর ফারুক খান।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত দেশে আসা প্রবাসী আয়ের প্রায় অর্ধেক এসেছে মাত্র পাঁচটি ব্যাংকের মাধ্যমে। এর মধ্যে সরকারি তিন ব্যাংক—কৃষি ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক ও জনতা ব্যাংক। বাকি দুটি হলো ইসলামী ব্যাংক ও ব্র্যাক ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ আট মাসে শীর্ষ পাঁচ ব্যাংক এনেছে মোট সাড়ে ১০ বিলিয়ন ডলার, যা মোট রেমিট্যান্স প্রবাহের ৪৯ শতাংশ। এর মধ্যে সরকারি তিন ব্যাংক একাই সংগ্রহ করেছে ৫৪৬ কোটি ডলার বা প্রায় এক-চতুর্থাংশ। ক্রমতালিকায় শীর্ষে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক। দ্বিতীয় স্থানে অগ্রণী ব্যাংক, তৃতীয় কৃষি ব্যাংক, চতুর্থ জনতা ব্যাংক এবং পঞ্চম স্থানে ব্র্যাক ব্যাংক। ইসলামী ব্যাংক জানুয়ারিতে এনেছিল ২৮ কোটি ২৩ লাখ ডলার। আগস্টে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৫ কোটি ৫৮ লাখ ডলারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মধ্যপ্রাচ্যসহ শ্রমিকপ্রধান দেশগুলোয় ইসলামী ব্যাংকের শক্তিশালী নেটওয়ার্কই এ সাফল্যের মূল কারণ।
অন্যদিকে জানুয়ারিতে দ্বিতীয় স্থানে থাকা সোনালী ব্যাংক আগস্টে নেমে যায় সপ্তম স্থানে। তাদের সংগ্রহ জানুয়ারির ১৭ কোটি ৯৩ লাখ ডলার থেকে কমে দাঁড়ায় ১১ কোটি ৭৫ লাখ ডলারে। একই সময়ে কৃষি ব্যাংক উঠে আসে তৃতীয় স্থানে। ব্র্যাক ব্যাংক জানুয়ারিতে ছিল তৃতীয়, তবে আগস্টে আয় কমে ১৫ কোটি ৮৭ লাখ ডলারে নেমে আসায় স্থান হয় পঞ্চম। এ সময়ে মোট রেমিট্যান্স প্রবাহও বেড়েছে। আগস্ট মাসে দেশে এসেছে ২৪২ কোটি ২০ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসে এসেছিল ২২২ কোটি ৪১ লাখ ডলার। অর্থাৎ এক বছরে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৯ শতাংশ। তবে গত বছরের আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও সরকার পরিবর্তনের কারণে রেমিট্যান্স লেনদেন কিছুটা ব্যাহত হয়েছিল।
ব্যাংক খাতসংশ্লিষ্টদের মতে, রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধির ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শক্তিশালী হচ্ছে এবং ডলারের সংকটও কিছুটা কমছে। তাদের ধারণা, হুন্ডি বা অবৈধ পথে অর্থ পাঠানো ঠেকাতে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ এবং বৈধ পথে পাঠানো রেমিট্যান্সে প্রণোদনা বড় ভূমিকা রাখছে।
ইসলামী ব্যাংকের এমডি মো. ওমর ফারুক খান বলেন, “প্রবাসীদের আস্থা অর্জনই আমাদের মূল শক্তি। ব্যাংকের বিস্তৃত নেটওয়ার্ক, ডিজিটাল সেবা এবং দ্রুত অর্থ পৌঁছে দেওয়ার সক্ষমতার কারণে প্রবাসীরা আমাদের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠাতে বেশি আগ্রহী। আমরা চাই প্রতিটি ডলার বৈধ পথে দেশে আসুক। এতে প্রবাসী পরিবার উপকৃত হবে এবং দেশের অর্থনীতিও আরও শক্তিশালী হবে।”