রাষ্ট্রমালিকানাধীন নতুন ইসলামি ধারার ব্যাংক ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’ গঠনের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকা মূলধন দেওয়ার প্রস্তাব করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। এ জন্য অর্থ বিভাগকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। নতুন ব্যাংকটি বাংলাদেশ ব্যাংকে হিসাব খুললেই ওই হিসাবে টাকা ছাড় করবে অর্থ বিভাগ। বিষয়টি অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
এর আগে পাঁচটি দুর্বল ব্যাংক একীভূত করে নতুন এই ব্যাংক গঠনের প্রাথমিক অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ইতিমধ্যে নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রশাসক দল একীভূতকরণের কাজ শুরু করেছে। এই পাঁচ ব্যাংক হলো—ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, গ্লোবাল ইসলামী, ইউনিয়ন, এক্সিম ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক। এর মধ্যে এক্সিম ব্যাংক ছিল বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের নিয়ন্ত্রণে। বাকি চারটি নিয়ন্ত্রণে ছিল চট্টগ্রামের এস আলম গ্রুপের কর্ণধার এবং আলোচিত ব্যবসায়ী সাইফুল আলমের। তাঁরা দুজনেই ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, প্রাথমিক লাইসেন্সের পর সরকারের পক্ষ থেকে নতুন ব্যাংকের নাম নিবন্ধন করা হবে। এরপর চূড়ান্ত লাইসেন্স দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রথম পরিচালনা পর্ষদের সভায় ব্যাংকটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকে হিসাব খোলার সিদ্ধান্ত নেবে এবং সেই হিসাবে জমা হবে সরকারের মূলধন। পাঁচ ব্যাংকের সম্পদ ও দায়ও নতুন ব্যাংকের অধীনে যাবে।
জানা গেছে, একীভূত হওয়ার পর আমানতকারীরা দুই লাখ টাকা পর্যন্ত তুলতে পারবেন। সাধারণ আমানতকারীদের অর্থ ফেরতের সময়সূচিও জানানো হবে। ক্ষুদ্র আমানতকারীদের অর্থ ফেরতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। নতুন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ সাত সদস্যের। এর নেতৃত্বে থাকছেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক। অন্যান্য সদস্য হলেন—অর্থ বিভাগের সচিব মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব এম সাইফুল্লাহ পান্না, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামাল উদ্দিন, ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী, অর্থ বিভাগের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ রাশেদুল আমিন ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব শেখ ফরিদ।
এ ছাড়া ব্যাংকে সমানসংখ্যক স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে। তাঁদের মধ্যে থাকবেন পেশাদার ব্যাংকার, হিসাববিদ ও আইনজীবী। সার্চ কমিটি গঠন করে এমডিসহ শীর্ষ কর্মকর্তাও নিয়োগ দেওয়া হবে। সরকারি আমলারা নয়, যোগ্য পেশাজীবীরাই ব্যাংকটি পরিচালনা করবেন।

