আইনজীবী তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে প্রচলিত লিখিত পরীক্ষা পদ্ধতি বাতিলের দাবি জানিয়েছে শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা। তাদের দাবি, শুধুমাত্র এমসিকিউ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ভাইভা পরীক্ষা নিয়ে তালিকাভুক্তির সুযোগ দিতে হবে। জাতীয় প্রেস ক্লাবে রোববার (২৭ অক্টোবর) “বৈষম্যবিরোধী শিক্ষানবিশ আইনজীবী” ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই দাবি জানায়।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাদের পাঁচ দফা দাবি মেনে নেওয়ার আনুষ্ঠানিক বা দাপ্তরিক ঘোষণা চাই। অন্যথায় পরবর্তীতে বার কাউন্সিল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক চৌধুরী হৃদয়। লিখিত বক্তব্যে চৌধুরী হৃদয় বলেন, শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা আদালতে গেলে যথাযথ সম্মান পান না বরং অনেক ক্ষেত্রে মুহুরিদের তুলনায় তাদের প্রতি সম্মানজনক আচরণ করা হয় না। তিনি বলেন, “আমাদের দাবি বাস্তবায়িত না হলে শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা কঠোর কর্মসূচি নিতে বাধ্য হবে।”
শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের পাঁচ দফা দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে:-
প্রথমত, লিখিত পরীক্ষা পদ্ধতি বাতিল করে শুধুমাত্র এমসিকিউ পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ভাইভা সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এতে প্রার্থীদের যোগ্যতা মূল্যায়নে কোনো বৈষম্য থাকবে না এবং তালিকাভুক্তি প্রক্রিয়া সহজ হবে।
দ্বিতীয়ত, ফলাফলে অসন্তুষ্ট প্রার্থীদের জন্য রিভিউয়ের সুযোগ রাখাসহ একটি যৌক্তিক ফি নির্ধারণ করে, ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষায় ৪০ নম্বরকে পাশ নম্বর হিসেবে নির্ধারণ করতে হবে। এছাড়া ভুল উত্তরের জন্য কোনো নেগেটিভ মার্কিং থাকবে না, যা শিক্ষানবিশদের জন্য একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান হিসেবে বিবেচিত হবে।
তৃতীয় দাবি অনুযায়ী, তালিকাভুক্তির পরীক্ষায় একবার উত্তীর্ণ হওয়া প্রার্থীদের পুনরায় কোনো পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে বাধ্য করা যাবে না। এর ফলে নতুনভাবে যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীদের সময় ও অর্থের অপচয় বন্ধ হবে।
চতুর্থ দাবি হলো, বার কাউন্সিলের সকল কার্যক্রম থেকে জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের হস্তক্ষেপ অপসারণ করতে হবে। এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানিক স্বাধীনতা ও কার্যকর প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনায় উন্নতি ঘটবে।
পঞ্চম ও সর্বশেষ দাবিতে প্রতি বছর দু’বার আইনজীবী তালিকাভুক্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা জানান, এ ব্যবস্থা চালু হলে অপেক্ষমাণ প্রার্থীরা দ্রুত তালিকাভুক্ত হতে পারবেন এবং আইন পেশায় অংশগ্রহণ করতে সক্ষম হবেন।
সংবাদ সম্মেলনে সহ-সমন্বয়ক এ কে এন মাহমুদ হোসেন, তরিকুল ইসলাম, হারুনুর রশিদ, আব্দুল গোফরান ও ইউনুস মল্লিকসহ সংগঠনের অন্যান্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।