এ বছরের শুরুতেই বলিউড অভিনেতা সাইফ আলী খান এক বড় ধাক্কা খেয়েছেন। নিজ বাড়িতে হামলার শিকার হয়ে তাকে লড়তে হয়েছে মৃত্যুর সঙ্গে। সেই ধকল কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই এবার নতুন আরেকটি বিপদে পড়েছেন নবাব পরিবারের উত্তরসূরি। উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি চলে যাচ্ছে ভারতের সরকারের দখলে।
ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, পতৌদি পরিবারের সেই ঐতিহাসিক সম্পত্তি এখন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের অধিগ্রহণের পথে। গত ৪ জুলাই মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট সাইফ আলী খানের করা আবেদন খারিজ করে দেয়। এতে স্পষ্ট হয়ে যায়, তিনি আইনি লড়াইয়ে হেরে গেছেন।
ঘটনার সূচনা ২০১৪ সালে। সে বছর মধ্যপ্রদেশ সরকার ঘোষণা করে, ভোপালের শেষ নবাব হামিদুল্লাহ খানের সম্পত্তি ‘এনেমি প্রোপার্টি অ্যাক্ট ১৯৬৮’-এর আওতায় শত্রু সম্পত্তি হিসেবে গণ্য হবে। এর মানে, বিদেশি মালিকানার সম্পত্তি হিসেবে তা বাজেয়াপ্ত করে সরকারের হেফাজতে নেওয়া হবে। কারণ হিসেবে বলা হয়, নবাব হামিদুল্লাহ খানের কন্যা আবিদা সুলতান ১৯৫০ সালে স্থায়ীভাবে পাকিস্তানে চলে যান। সেখান থেকেই জন্ম নেয় এই সিদ্ধান্তের ভিত্তি।
এই ঘোষণার পর ২০১৫ সালে সাইফ আলী খান আদালতের দ্বারস্থ হন। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘদিন স্থগিতাদেশ থাকলেও ২০২৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর সেই আদেশ প্রত্যাহার করে নেয় আদালত। আর ২০২৫ সালের জুলাইয়ে হাইকোর্ট সাইফের আবেদনও পুরোপুরি খারিজ করে দেয়।
ভোপালের কোহেফিজা থেকে চিকলোড় পর্যন্ত বিস্তৃত এই বিশাল সম্পত্তির আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। এই জমিজমার মালিকানা এতদিন ধরে সাইফ আলী খানের পরিবারের হাতেই ছিল। কিন্তু ভারতের ১৯৬৮ সালের শত্রু সম্পত্তি আইনের আওতায়, দেশ বিভাগের সময় যারা পাকিস্তান বা চীনে চলে গিয়েছিলেন, তাদের এ দেশে ফেলে যাওয়া জমি, বাড়ি, শেয়ারসহ সবকিছুই সরকার ‘শত্রু সম্পত্তি’ হিসেবে ঘোষণা করে বাজেয়াপ্ত করতে পারে। আইন অনুযায়ী, এসব সম্পত্তিতে তাঁদের উত্তরসূরিদের আর কোনো দাবি থাকবে না। এই আইনের বলি হতে চলেছে পতৌদি পরিবারের ইতিহাস ও ঐতিহ্য বহনকারী সম্পত্তি।