চট্টগ্রামে ইসলামী ব্যাংকের কয়েকটি শাখায় ঋণের নামে প্রায় ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের তদন্তে তিন ব্যবসায়ী এবং ব্যাংকের ২৩ কর্মকর্তাকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সম্প্রতি ব্যাংকিং খাতে আলোচিত এই কেলেঙ্কারির ঘটনায় গত রোববার দুদক থেকে পৃথক চিঠির মাধ্যমে তাঁদের তলব করা হয়েছে বলে বুধবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) আকতারুল ইসলাম।
জানা গেছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ইসলামী ব্যাংকের চট্টগ্রামের চাকতাই, জুবিলী রোড ও খাতুনগঞ্জ শাখা থেকে এসব ঋণ অনুমোদিত হয়। যার নীতিগত প্রক্রিয়ায় বেশ কিছু অসংগতি রয়েছে। ঋণ বিতরণ ও ব্যবস্থাপনায় অনিয়মের অভিযোগে ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ভূমিকা জানতে ১০ থেকে ১২ নভেম্বরের মধ্যে তাঁদের দুদক কার্যালয়ে হাজির হয়ে তথ্য উপস্থাপন ও সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তদন্তে দেখা গেছে, অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে মুরাদ এন্টারপ্রাইজ, ইউনাইটেড সুপার ট্রেডার্স এবং সেঞ্চুরি ফুড প্রোডাক্টস উল্লেখযোগ্য। মুরাদ এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. গোলাম সরওয়ার চৌধুরী, যিনি দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়িক গ্রুপ এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলমের আত্মীয় বলে জানা গেছে।
তলবকৃত কর্মকর্তাদের মধ্যে আছেন ইসলামী ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক কায়সার আলী ও ওমর ফারুক খান, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক তাহের আহমেদ চৌধুরী, এ এ এম হাবিবুর রহমান, হাসনে আলমসহ আরও বেশ কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা। এ ছাড়া মনিটরিং ও বিনিয়োগ বিভাগের বেশ কিছু কর্মকর্তা রয়েছেন যাঁদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
এ ঘটনায় ব্যাংকিং খাতে বড় ধরনের নৈতিক সংকটের অভিযোগ ওঠায় সাধারণ গ্রাহকদের আস্থা নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এমন অনিয়ম কেবল ব্যাংক ব্যবস্থার দুর্বলতাকেই প্রকাশ করে না। বরং অর্থনীতির সার্বিক স্থিতিশীলতার জন্যও এটি একটি গুরুতর হুমকি।