দিনাজপুরের পার্বতীপুর থেকে নীলফামারীর সৈয়দপুর পর্যন্ত ৩৩ হাজার ভোল্টেজের সরকারি সঞ্চালন লাইনের তার চুরি হয়েছে। প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ১৭ কিলোমিটারের অ্যালুমিনিয়াম তার কেটে নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি লাইনে তিনটি তার থাকায় মোট প্রায় ৫১ কিলোমিটার তার চুরি হয়েছে।
এই সঞ্চালন লাইন নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো)-এর আওতাধীন। সৈয়দপুরের শেষ সীমা থেকে পার্বতীপুর নেসকো কার্যালয় পর্যন্ত খুঁটির ওপর দিয়ে বিদ্যুৎ পরিবহন হতো। সম্প্রতি চোরেরা খুঁটির তার কেটে নিয়ে গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বিদ্যুৎ বিভাগের গাফিলতি এবং অসাধু কর্মকর্তাদের সহায়তায় পরিকল্পিতভাবে এই চুরি হয়েছে।
সৈয়দপুর পাওয়ার গ্রিড থেকে পার্বতীপুর নেসকো কার্যালয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ হতো ৩৩ হাজার ভোল্টেজের সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে। ২০২০ সালে বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র (৫২৫ মেগাওয়াট) চালুর পর পার্বতীপুর নেসকো অফিস ওই কেন্দ্র থেকে নতুন করে ১৫ কিলোমিটার ৩৩ হাজার ভোল্টেজের গ্রিড সংযোগ নেয়। এরপর সৈয়দপুর গ্রিডের লাইনটি অকার্যকর হয়ে পড়ে।
দীর্ঘদিন অরক্ষিত অবস্থায় থাকা সুযোগে চোরেরা রাতে পার্বতীপুর নেসকো কার্যালয়ের সামনে থেকে সঞ্চালন লাইনের তার চুরি করেছে।
আজ সোমবার সরেজমিন দেখা গেছে, সৈয়দপুর গ্রিড থেকে শুরু হয়ে বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের চৌমহনী বাজার, পার্বতীপুরের বেলাইচন্ডি ইউনিয়নের মুন্সিপাড়া, বেলাইচন্ডি বাজার, জাকেরগঞ্জ এবং বান্নিনরঘাট গ্রামের পাশ দিয়ে এই লাইন গেছে। লাইনের পথ পার্বতীপুর-সৈয়দপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পশ্চিম ধার ঘেঁষে পার্বতীপুর কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানার পাশ দিয়ে শহরে প্রবেশ করেছে। এরপর কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনালের পূর্ব দিক হয়ে সুন্দরীপাড়া রেলগেট পর্যন্ত খুঁটি স্থাপন করা হয়, যা পার্বতীপুর বিদ্যুৎ অফিসের সঙ্গে যুক্ত ছিল। বর্তমানে ওই খুঁটিগুলো তারবিহীন অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে।
বেলাইচণ্ডি বুড়িরঘাট এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা, নাম প্রকাশ না করার শর্তে, বলেন, কে বা কারা তার নিয়েছে তারা জানেন না।
পার্বতীপুর বিক্রয় ও বিতরণ কেন্দ্র নেসকো কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী হাসিবুর রহমান বলেন, ‘পার্বতীপুর থেকে সৈয়দপুর ৩৩ হাজার ভোল্টেজ সঞ্চালন লাইনের তার চুরির ঘটনা ঘটেছে। আমি বর্তমানে ছুটিতে আছি, ছুটি শেষে বিষয়টি নিয়ে কথা বলব।’
চুরির বিষয়ে জানতে চাইলে পার্বতীপুর বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ কেন্দ্রের আবাসিক প্রকৌশলী সত্যজিৎ দেব শর্মা বলেন, তথ্য নিতে হলে অফিসে তথ্য অধিকার ফরম পূরণ করতে হবে।

