সম্প্রতি বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সহনীয় করতে সরকার আমদানি পর্যায়ে পাম তেল, চিনি, সয়াবিন তেল ও ডিমের শুল্কহার কমিয়েছে। কিন্তু নতুন করে শুল্কহারে খুব একটা পণ্য আমদানি হয়নি। তাই এসব পণ্যের দামে খুব বেশি প্রভাব পড়েনি বলে ধারণা ব্যবসায়ীদের।
চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রানুযায়ী, শুল্কহার কমানোর পর এ ৭দিনে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে তিন জাহাজ চিনি ও সয়াবিন তেল আমদানি হয়েছে। পণ্যগুলো খালাসের পর বাজারজাত হলে শুল্কহার কমানোর সুবিধা পাওয়া যাবে।
চিনির দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ৮ অক্টোবর পরিশোধিত ও অপরিশোধিত চিনির নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ৩০ শতাংশ হতে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়। তারপর ১৭ অক্টোবর পরিশোধিত চিনি আমদানিতে প্রতি মেট্রিক টনে কাস্টমস শুল্ক ছয় হাজার হতে কমিয়ে সাড়ে চার হাজার টাকা করা হয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য মতে, শুল্কহার কমানোর পর গত শনিবার পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন শুল্ক স্টেশন হতে সব মিলিয়ে প্রায় ৭০ হাজার টন পণ্য খালাস হয়েছে, যার বেশির ভাগই পাম তেল।
এনবিআরের তথ্য মতে, শুল্কহার কমানোর পর চট্টগ্রাম বন্দরে সিটি গ্রুপের সয়াবিন তেলের একটি চালান খালাস হয়েছে। চালানটিতে প্রতি কেজিতে শুল্ককর পরিশোধ করা হয়েছে প্রায় ১২ টাকা। শুল্ক কমানোর আগে তা ছিল কেজিপ্রতি ১৮ টাকা; অর্থাৎ প্রতি কেজিতে ছয় টাকা কমেছে শুল্ক–কর।
১৭ অক্টোবর, পাম ও সয়াবিন তেলের মূল্য সংযোজন কর ১৫ শতাংশ কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। উৎপাদন ও ব্যবসা পর্যায়ে সয়াবিন ও পাম তেলের মূল্য সংযোজন কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আগামী ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই সুবিধা কার্যকর থাকবে বলে জানা যায়।
বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠির মাধ্যমে দাম সমন্বয় করার অনুরোধ করেছে। তথাপি সরকার ভোজ্যতেলের দাম না বাড়িয়ে শুল্কহার কমিয়ে দিয়েছে।
শুল্ক কমানোর পর সবচেয়ে বেশি আমদানি হয়েছে পাম তেল। পাম তেলের ৬৯ হাজার টনের চালান খালাস হয়েছে। নতুন শুল্কহারে প্রতি কেজিতে শুল্ক–কর পরিশোধ করতে হয়েছে প্রায় ১২-১৩ টাকা। আগে প্রতি কেজিতে শুল্ক–কর দিতে হতো ১৭-১৮ টাকা।
ডিমের বাজার সহনীয় করতে ১৭ অক্টোবর ডিম আমদানির ক্ষেত্রে কাস্টমস শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে।
এনবিআরের সূত্রে, শুল্কহার কমানোর পর এ পর্যন্ত ডিমের একটি চালান আমদানি হয়েছে। বেনাপোল বন্দর দিয়ে ২ লাখ ৩১ হাজার পিসের এই চালান আমদানি করে ঢাকার হাইড্রো লেন সলিউশন। পুরোনো শুল্কহারে প্রতিটি ডিমে শুল্ক–কর ছিল প্রায় দুই টাকা। শুল্ক কমানোর পর তা কমে ৬৮ পয়সায় নেমেছে।
আমদানি কম হলেও বাজারে ডিমের দাম একটু কমেছে। প্রতি ডজন ডিমের দাম বেড়ে হয়েছিল ১৭৫-১৮০ টাকা। এখন তা কমে ১৪৫ টাকার মত।