দেশের টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিশেষ পদক্ষেপ হিসেবে অরেঞ্জ বন্ডের মাধ্যমে ১০০ কোটি ডলার সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এই অর্থ পোশাকশিল্প, সবুজ অবকাঠামো ও কৃষির মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে বিনিয়োগ করা হবে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে “অরেঞ্জ বন্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীমূলক পুনর্গঠন” শীর্ষক আলোচনা সভায় এ তথ্য জানান অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
আইআইএক্স, ইউএনডিপি এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই সভায় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অরেঞ্জ বন্ডের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। অরেঞ্জ বন্ড এক ধরনের বিনিয়োগমুখী বন্ড, যা সংগ্রহ করা অর্থ জলবায়ু পরিবর্তন, লিঙ্গ সমতা এবং পরিবেশগত ইস্যুতে টেকসই অর্থনৈতিক প্রকল্পে বিনিয়োগের মাধ্যমে সমাজের পুনর্গঠনে ভূমিকা রাখে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইতিমধ্যেই এই বন্ড চালু থাকলেও বাংলাদেশে এটি প্রথমবারের মতো প্রবর্তিত হচ্ছে।
আলোচনায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “অর্থ সংগ্রহের প্রচলিত মাধ্যম হিসেবে ব্যাংক ও পুঁজিবাজারের উপর নির্ভরতা থাকলেও এখানে অনিয়মের কারণে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। অরেঞ্জ বন্ডে বিনিয়োগের ঝুঁকি তুলনামূলক কম। এর মাধ্যমে আমরা সামাজিক ও পরিবেশগত স্থিতিশীলতা আনতে পারব।”
অর্থ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার সভায় বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ মূলত প্রশমন কৌশলে জোর দিলেও অভিযোজনের দিকেও সমান গুরুত্ব দেওয়া জরুরি। অরেঞ্জ বন্ডের মাধ্যমে সেই অভিযোজনের প্রয়োজনীয়তা মেটানো সম্ভব হবে।”
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহ্রিয়ার কাদের ছিদ্দিকী বলেন, “অরেঞ্জ বন্ড দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে সহায়ক হবে। তবে এই উদ্যোগ সফল করতে নীতি সংস্কারের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সবার সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা জরুরি।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অরেঞ্জ বন্ডের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে বাংলাদেশের অর্থনীতির পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে।