বিশ্ব অর্থনীতির গতি শ্লথ হওয়ার আশঙ্কা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা বাণিজ্যনীতির কারণে আবারও বড় ধরনের দরপতনের মুখে পড়েছে আকরিক লোহা। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে বাণিজ্যযুদ্ধের হুমকি ও বিভিন্ন দেশের মধ্যে চলমান আলোচনা ঘিরে আন্তর্জাতিক বাজারে যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে সেটিই মূলত এ দরপতনের প্রধান কারণ।
চীনের সম্ভাব্য প্রণোদনা প্যাকেজের প্রত্যাশায় কিছুদিন আগে আকরিক লোহার দামে সামান্য ঊর্ধ্বগতি দেখা গেলেও তা ছিল ক্ষণস্থায়ী। গত পাঁচ দিনের মধ্যে চারদিনই এই কাঁচামালটির দামে নিম্নমুখী প্রবণতা বজায় থেকেছে যা বাজারে এক ধরনের অনিশ্চয়তার বার্তা দিচ্ছে।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সিঙ্গাপুরে স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ১৫ মিনিটে আকরিক লোহার ফিউচার্স মূল্য ০.৮ শতাংশ হ্রাস পেয়ে দাঁড়ায় প্রতি টন ৯৮.৬০ ডলারে। একই সময় চীনের দালিয়ান এক্সচেঞ্জে ইউয়ানভিত্তিক ফিউচার্স এবং শাংহাইয়ের স্টিল ফিউচার্সের দামেও পতনের ধারা লক্ষ্য করা গেছে।
চীন বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি এবং সবচেয়ে বড় ইস্পাত উৎপাদক দেশ। দেশটি ইতোমধ্যেই বিভিন্ন দেশকে সতর্ক করে জানিয়েছে, তারা যেন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এমন কোনো বাণিজ্য চুক্তিতে না যায়, যা বেইজিংয়ের স্বার্থকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এ বক্তব্য থেকেও বৈশ্বিক বাণিজ্য পরিবেশে উত্তেজনা বাড়ার ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
অর্থনীতিবিদদের মত অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসনের কড়াকড়ি বাণিজ্যনীতি বিশ্ব অর্থনীতির উপর দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এতে কাঁচামাল আমদানি থেকে শুরু করে শিল্পোৎপাদন পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়ায় সংকট দেখা দিতে পারে যা বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক ভারসাম্যকে বিপর্যস্ত করতে পারে।
বাজার বিশ্লেষণ বলছে, যদি বৈশ্বিক পর্যায়ে সুসমন্বিত ও স্থিতিশীল কোনো বাণিজ্য কৌশল দ্রুত গৃহীত না হয় তবে আকরিক লোহার দামে অস্থিরতা আরও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই পরিস্থিতি শুধু ইস্পাত শিল্প নয় বিশ্ব অর্থনীতির অনেক ক্ষেত্রেই অনিশ্চয়তা তৈরি করতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।